
পবিত্র ঈদুল আজহার মাত্র কিছু বাকি। ঈদুল আজহার এ সময়টায় বাজারে পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও মসলার চাহিদা একটু বেড়ে যায়। প্রতি বছরই তার সুযোগ নেয় এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী। তারা নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট করে এসব পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। এক সপ্তাহ আগেও যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫-৫০ টাকা কেজি, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে। আগামী সপ্তাহে বা ঈদের আগে তা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আদা, রসুন বা অন্যান্য মসলার দামও বাড়তি। এ সময় কোরবানি করা পশুর চামড়া সংরক্ষণে প্রচুর লবণের প্রয়োজন হয়। এখানেও একটি সিন্ডিকেট লবণের দাম বাড়ানো ও অতিরিক্ত মজুদের মাধ্যমে লবনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করার চেষ্টা চালায়। যদিও লবণ উৎপাদকদের তথ্যমতে, দেশে প্রচুর লবণ উৎপাদন হয়। কিন্তু দাম বাড়ায় কেবল কিছু অসাধু সিন্ডিকেট। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ীরা ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়া এবং পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ সরবরাহকে দায়ী করছেন। এ পরিস্থিতি সামলানোর জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে দ্রুত পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের অনুমতি (ইমপোর্ট পারমিট) দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনাও অব্যাহত রাখতে হবে। ক্রয় রসিদ না রাখা এবং ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে বিক্রি করার অভিযোগ খতিয়ে দেখে নিয়মতান্ত্রিক অভিযান পরিচালনা করে জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে।
অবৈধভাবে বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ, লবন ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা মজুদ করার প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু পেঁয়াজ বা মসলা নয়, বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়ছে। বাড়ছে চালের দামও। চালের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশজুড়ে অভিযানও চালানো হচ্ছে। এরপরও বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। দাম ক্রমেই বাড়ছে। অসাধু সিন্ডিকেট ও ব্যবসায়ীদের এই কারসাজির মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষার দায়িত্ব সরকারের। ঈদের আগে পেঁয়াজ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম বেড়ে যেতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন সে বিষয়টি আগে উপলব্ধি করেনি, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এখন ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় দ্রুততম সময়ে আমদানির অনুমতি দেয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি পাইকারি ও খুচরা বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ বাড়াতে হবে। কার্ডে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি টিসিবির ট্রাক সেল বাড়াতে হবে। অন্যদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
নাহিদুল ইসলাম গাজী
ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
প্যানেল