
ছিনতাইয়ের বিচিত্র ঘটনা শুধু আর্থিক ক্ষতিই ডেকে আনছে না, অনেক সময় প্রাণহানিও ঘটাচ্ছে। পথচারীদের গলা থেকে চেইন টানতে গিয়ে গাড়ির চাকায় পিষ্ট হওয়া, কিংবা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার নজিরও দেশে কম নয়। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হাজার হাজার ছিনতাইকারীর নাম, পরিচয় ও চক্রের তথ্য থাকলেও কার্যকর অভিযানের অভাবে তারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এ বাস্তবতায় ছিনতাই দমনে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। প্রথমত, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও ঝুঁকিপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের টহল জোরদার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত চেকপোস্ট স্থাপন ও সন্দেহভাজন গাড়ি তল্লাশি কার্যক্রম আরও তৎপরভাবে পরিচালনা করা উচিত। তৃতীয়ত, বিশেষ করে রাতের বেলা রিক্সা ও বাইক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সিসি ক্যামেরার কার্যকর ব্যবহার, আধুনিক প্রযুক্তি ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ছিনতাই চক্র চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা জরুরি।
তবে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করলেই চলবে না। সমাজকেও হতে হবে সচেতন। ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাক্ষী দিতে ভয় না পেয়ে আইনগত সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে, তরুণ সমাজকে মূল্যবোধ ও নৈতিক শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে, যেন তারা অপরাধে না জড়িয়ে পড়ে।
রাজধানী ঢাকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে ছিনতাই দমনে একযোগে সরকারি, সামাজিক ও নাগরিক উদ্যোগ প্রয়োজন। অন্যথায় এই অপরাধব্যাধি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে যা প্রতিরোধ করাই তখন হয়ে উঠবে কঠিন।
সুনামগঞ্জ থেকে
প্যানেল