ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা

নাজনীন বেগম

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ৭ মে ২০২৪

রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলা

ছেলেবেলা রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথের কবি থেকে বিশ্বকবি হয়ে ওঠার পথটা কেমন ছিল সত্যিই এক অবিমিশ্র বিস্ময় আর মুগ্ধতা। নিজেই লিখে গেছেন ‘আমার ছেলেবেলা’ আর ‘জীবনস্মৃতি’। যেগুলো আবাল্য জীবন চরিত বিধৃত করার মহামূল্যবান গ্রন্থ তো বটেই। আবার জীবন সায়াহ্নে এমন উক্তিও করে গেছেন- ‘কবিকে খুঁজো না তার জীবন চরিতে’। তার সমাধানও কবির কাছ থেকেই আসা। সাহিত্যের নানামাত্রিক আঙিনায় নিজের অজান্তেই কবি নিজেকে চিনিয়ে দিয়েছেন। সেখানেই তার যথার্থ পরিচয়, দীর্ঘ জীবনের গতিপ্রবাহ, সৃষ্টিশীল জগতের অসাধারণ সম্ভার

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৬৩তম জন্ম দিবসের মহা সন্ধিক্ষণে। ঐতিহ্যবাহী ঠাকুর পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান রবীন্দ্রনাথের কবি থেকে বিশ্বকবি হয়ে ওঠার পথটা কেমন ছিল সত্যিই এক অবিমিশ্র বিস্ময় আর মুগ্ধতা। নিজেই লিখে গেছেন ‘আমার ছেলেবেলা’ আর ‘জীবনস্মৃতি’। যেগুলো আবাল্য জীবন চরিত বিধৃত করার মহা মূল্যবান গ্রন্থদ্বয় তো বটেই। আবার জীবন সায়াহ্নে এমন উক্তিও করে গেছেন- ‘কবিকে খোঁজ না তার জীবন চরিতে’।

তার সমাধানও কবির কাছ থেকেই আসা। সাহিত্যের নানামাত্রিক আঙিনায় নিজের অজান্তেই কবি নিজেকে চিনিয়ে দিয়েছেন। সেখানেই তার যথার্থ পরিচয়, দীর্ঘ জীবনের গতিপ্রবাহ, সৃষ্টিশীল জগতের অসাধারণ সম্ভার। সবই যেন বিশ্বকবিকে পাঠকের সামনে হাজির করতে এক অনন্য সত্য কথন। শুরু করতে চাই কবির নিজের জবানীতে ‘ছেলেবেলা’ দিয়ে। ‘ছেলেবেলা’র স্মৃতিচারণ করাই শুধু নয়, শৈশব-কৈশোর অতিক্রান্ত হওয়ার কঠোর বিধিনিষেধও কবিকে বিমর্ষ করে দিত। আছে নিত্য খাবারের আয়োজনে এক প্রকার কৃচ্ছ্র সাধনের প্রচেষ্টা।

১৯৪০ সালে আশি বছর বয়সে অনুরোধ আসে শান্তিনিকেতনের ছেলেদের জন্য কিছু লেখার। কবির উক্তিই উদ্ধৃত করলাম ‘ভাবলুম ছেলে মানুষ রবীন্দ্রনাথের কথা লেখা যাক। চেষ্টা করলুম সেই অতীতের প্রেতলোকে প্রবেশ করতে।’ ঊনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশক। যার সঙ্গে বিস্তর ফারাক বিশ শতকের চল্লিশের দশক। আর বয়সের ভারে কবি তখন সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতার পরম সীমানায়। আধুনিক যুগ পরম্পরার মহতী নির্মাল্য। কবির ভাষা নির্মাণে নতুন সময়ের ভাবনা মিশেছে অনেকখানি।

কিন্তু শিশু বয়সের চেতনালব্ধ কল্পনাও বাস্তবের দ্বারে উঁকি দেওয়ারই মতো। ছেলেমানুষী মন ফেরানোর উদ্দীপ্ত চেতনায় বিভোর হয়ে লিখতে বসলেন শৈশব-কৈশোরের ইতিবৃত্ত। কবি নিজেই জানাচ্ছেন- শেষকালের স্মৃতি রোমন্থন কিশোর বয়সকে যেন সম্মুখ সমরে দাঁড় করিয়ে দিল। এক অবোধ বালকের মানস প্রকৃতি নানা মাত্রিক পারিপার্শ্বিকতার সহজাত অনুভবে প্রতিদিনের পালাবদল সামনে উপস্থিত হলো। আকস্মিক আর অপরিহার্য মিলন গ্রন্থিতে ঘটনা পরম্পরা পরিণত হয়ে উঠছে।

তাই ছেলেবেলার আখ্যান বলতে বালকের বৃদ্ধির সঙ্গে প্রাণশক্তির অনন্য দোলাচল মিলে মিশে যেন একাকার। জীবনের সূচনাপর্ব তারই যথার্থ অনুরণন। হাল্কা পাতলা গড়নের কবি শৈশবকালেই পাখির মতো উড়তে পারতেন যদি তার দুটো ডানা থাকতো। খোলা আকাশে হরেক পাখির কলকাকলিসহ দিগন্তে উড়ন্ত ডানা মেলার যে বিস্ময়াভিভূত অনুভবের দোলা জীবনের পড়ন্তবেলায় সেটাই মাতিয়ে দিচ্ছে কবিকে। ঠাকুরবাড়িতে দাদাদের বেহালার সুর বাজানোর মধুর স্মৃতি আজও বিভোর করে দেয়।

প্রায়ই সমবয়সী বৌদির কাছে ইংরেজি পাঠ শিক্ষা যেন আবেগে আপ্লুত হওয়ার ভিন্ন মাত্রার আনন্দ বৈভব। আর ঠাকুরবাড়ির  কিশোরী চাটুজ্জ্যের রামায়ণের লব-কুশের কাহিনী বর্ণনা সন্ধ্যা তারার মতো আরও এক দীপ্তিময় প্রহর তো বটেই। বিদ্যালয়প্রীতি ছিল বরাবরই কম। তাই ছকে বাঁধানো কোনো বিদ্যা আমলে নিতে অসাধারণ মনো সরোবর মানতেই আপত্তি জানাত। তাই নতুন শ্রেণিতে ওঠার দায় তো কখনো ভাবনাতেই আসেনি।

সেকেলের কলকাতাতে জন্ম নেওয়া কবির তাই অবস্থার টানাপোড়েনে বিরাট কাব্য প্রতিভার অনন্য সরোবরে আকুলি বিকুলি করাও জীবনের মহিমান্বিত পর্ব। গ্যাস, বিজলি বাতির অনুপস্থিতি টের পাননি কখনো বালক কবি। কেরোসিনের আলোয় যখন আঁধার বিদীর্ণ করা অন্যরকম দীপ্ত তেজ দেখা যেত, তখন বিমুগ্ধতার যে অনুভব শেষ বয়সেও নাড়া দেওয়ার মতো।
মিটিমিটি আলোয় যখন গুরুমহাশয় শ্রেণিপাঠে মনোযোগ দিতেন, তেমন স্মৃতিও ভিন্ন মাত্রার প্রতিবেশ। শেষ অবধি হাই তুলতে তুলতে মাস্টার মহাশয়ের ঝিমুনি থেকে ঘুমের ভাব তাও সমবয়সীদের সঙ্গে কবির বিনোদনের আরেক মাত্রা তো বটেই। পানির কল তখন অবধি অদৃশ্য এক বস্তু। বেহারা কাঁধে করে কলসি ভরে ঠাকুরবাড়ির স্নানাগার ভরিয়ে রাখা ছিল সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতা। ঠাকুরবাড়ির নবাবি আমলের পাল্কিখানা আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

কবির যখন সাত-আটবছর বয়স, সে অবধিও তার কোনো কাজ করার কিছুই নেই। ঠাকুরবাড়ির ঐশ্বর্য আর প্রাচুর্যের মধ্যে কবি বড় হয়েছেন অতি সাধারণ সন্তানদের মতোই। ব্রজেশ্বরের তত্ত্বাবধানে খাবারের যে নিত্য আয়োজন, তাও উল্লেখ করার মতোই। থালা সাজিয়ে খাবার কখনো কবির সামনে আসেইনি। খালি থালা দেওয়া হতো ঠাকুরবাড়ির শিশু-কিশোরদের। ব্রজেশ্বর একটা করে লিচু থালায় দিত আর জিজ্ঞেস করতো বটেÑ আর চাই কিনা? কবি বরাবরই না বলতেন।

এমনি করেই অল্প খাওয়া যেন অভ্যাসে পরিণত হয়। কম খাওয়ার কারণে কখনো শরীর খারাপ করেছে এমন স্মৃতি খুঁজেই পাওয়া যায়নি। কবির ভাষায় বরং শরীর এত বিশ্রী রকমের ভালো ছিল চেষ্টা করে বিভিন্ন উপায়ে গায়ে জ্বর-সর্দির কোনো লক্ষণই আনতে না পারার কষ্ট জীবনে ভুলতেও পারেননি। অর্থাৎ বিদ্যাশিক্ষা ফাঁকি দেওয়ার কোনো অজুহাত, ওজর আপত্তি কখনো সামনেই আনা যায়নি। নিজেই বলছেন- জ্বরে ভোগা কাকে বলে মনেই পড়ে না। ম্যালেরিয়া বলে শব্দটা শুনেননি। সব কৃতিত্ব শেষ অবধি ব্রজশ্বরের কাঁধে চাপান কবি।

ছোটকালের কলকাতা শহর রমরমা বলতে যা বোঝায় তা কিন্তু ছিল না। নীরব, নিস্তব্ধতার মধ্যে ভিন্ন মাত্রার দোলাচলে কবির শৈশব অতিক্রান্ত এক অদ্ভুত পালাবদল, যার সঙ্গে জীবনের শেষ সময়ের কলকাতার অমিলই ছিল বেশি। তবে রবীন্দ্রনাথের কাব্য প্রতিভার স্ফুরণ সেই ছোট বয়স থেকেই। ঠাকুরবাড়ির সামনে বট গাছকে উপলক্ষ করে কবির ছন্দবদ্ধ বাক্য সত্যিই বিস্ময়কর-
‘নিশিদিন দাঁড়িয়ে আছ মাথায় লয়ে জট, ছোট ছেলেটি মনে কি পড়ে, ওগো প্রাচীন বট’। শুধু প্রতিভাদীপ্ত মননই নয় চারপাশের বিশ্ব প্রকৃতির অবারিত রূপ, রস, গন্ধে বিভোর কবি নৈসর্গ প্রেমিক হিসেবে বরাবরই নিজেকে প্রমাণ করেন। প্রকৃতি, পূজা আর প্রেম যেন কবির সংগীত আর মনন সৃজনবোধের এক অবিমিশ্র আয়োজন।

‘সোনার তরী’ কাব্যের ‘দুই পাখি’ কবিতাটি পরিণত বয়সে সমৃদ্ধভাব কল্পনা, ছন্দের নানামাত্রিক আলোড়ন। কবির নিজের জবানিতে তেমনই উল্লেখ আছে। যা আমাদের এই বাংলার নৈসর্গিক ঐশ্বর্যে প্রাণিত কবির কাব্যিক মহিমা। প্রথম বিদ্যালয় গমনের স্মৃতি কাতরতাও জীবনস্মৃতির কলেবর সমৃদ্ধ করেছে। স্কুলে যাওয়ার জন্য চিৎকার, কান্না, আকুতি-মিনতি শেষ জীবনেও ভুলতে পারেননি। ভয়ংকর ভেঙ্গুর আক্রমণে একবার ঠাকুরবাড়ির সকলেই অন্যত্র চলে যেতে হয়।

সেটাই কবির প্রথম বাইরে যাওয়ার সুযোগ। কবির কবিতা লেখার প্রতিভা সকলেই জানবে এমন তীব্র আকাক্সক্ষা ভেতরের বোধে তাড়িত করত তাকে। বিভিন্ন সময় পরীক্ষায়ও বসতে হতো কবিকে। ঠাকুরবাড়িতে নিয়মিত আসা সাতকড়ি দত্ত মহাশয় একদিন রীতিমতো দুই লাইনের কবিতা লিখে-কবিকে পরের অংশ পূর্ণ করতে বললেন-
রবি করে জ্বালাতন আছিল সবাই, 
বরষা ভরসা দিল আর ভয় নাই।
কবিও তাৎক্ষণিকভাবে তার পরের লাইন জুড়ে দেন। 
মীনগণ হীন হয়ে ছিল সরোবরে,
এখন তাহারা সুখে জলক্রীড়া করে। 
পিতৃভক্ত রবীন্দ্রনাথের বরাবরই মহর্ষি পিতার প্রতি অনমনীয় শ্রদ্ধা আর নিবেদনের স্তুতি ছিল অন্তর্নিহিত এক সমর্পণ। ‘জীবন স্মৃতি’তে এর মুগ্ধতা আছে, অনেক স্মৃতিচারণে আবিষ্টতাও লক্ষণীয়। সর্বোপরি পিতার প্রতি অনমনীয় ভক্তি ও শ্রদ্ধার নিদর্শনও কবিকে বিভিন্নভাবে উদ্বেলিত করে।
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলে যার জীবনাচরণ সীমাবদ্ধ, একদিন সেখানে বিদ্যালয়ে যাত্রাও ঘর থেকে বাইরে আসার অনন্য সময়। তবে মাত্র ১১ বছর বয়সে একেবারে বাইরের সীমানায় পাড়ি দেওয়া তাও এক অত্যাশ্চর্য ঘটনা তো বটেই। ঠাকুরবাড়ির নিয়ম অনুযায়ী উপনয়নের মাধ্যমে পইতা ধারণ করতে হবে একেবারে মাথার সব চুল ফেলে দিয়ে। নেড়া মাথা আর কি! ১১ বছরের বালক কবি নেড়া মাথায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে আপত্তি জানান।

সহপাঠীদের নেড়া মাথায় হাস্যবর্ষণ কবির কাছে বেদনাদায়ক তো বটেই। এমন সময়ে পিতার কাছ থেকে এক অভাবনীয় নিমন্ত্রণ পেয়ে কবি আনন্দে আটখানা। মহর্ষি হিমালয় যাবেন সঙ্গে কবিকে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। অপ্রত্যাশিত এমন খুশি কবি আর কখনো হয়েছেন কিনা সেই অবধি। সেটা মনেই করতে পারলেন না। এত বড় আনন্দকে সংযমের আবর্তে ধরে রাখাটাই বালক কবির পক্ষে এক অসহনীয় যন্ত্রণা।

চিৎকার করে ঠাকুরবাড়ির সবাইকে জানাতে ইচ্ছে করে পিতার সঙ্গে হিমালয় যাত্রার নতুন আখ্যান উপলক্ষে নতুন পোশাক পরার স্মৃতিও মনের গভীরে উজ্জ্বল হয়ে আছে। তারপর রেলগাড়িতে ভ্রমণ হিমালয় যাত্রার শুভক্ষণ কবিকে যেন মাতিয়েই দেয়। ঠাকুরবাড়ির সীমাবদ্ধ আলয় থেকে বৃহত্তর সামাজিক আঙিনাই শুধু নয়, হিমালয়ের মতো পর্বত দর্শন জীবনের এক অবধারিত আনন্দযোগ। প্রথমে রেলগাড়িতে ওঠার ভয়ভীতি কেটে যেতেও সময় নিল না।

বিকট শব্দে যে রেলগাড়ি চলতে থাকে, সেখানে নিরাপদে উঠে সিটে বসা যেন এক অভাবনীয় বিদেশ বিভুঁই ভ্রমণ। চলন্ত গাড়িতে বাংলার নৈসর্গিক শোভা দর্শন আর এক অনন্য খুশির আমেজে কবির অদম্য এক নেশায় চেপে বসে। প্রকৃতি অনুরক্ত কবি যেন নতুন এক নৈসর্গের আবাহনে জীবনকে কানায় কানায় উপভোগ্য করে তুললেন। সেই ছেলেবেলা থেকে বাংলার চিরায়ত শ্যামল প্রকৃতি কবিকে যে বিমুগ্ধতার আবেশে জড়িয়ে নেয়, সেটাই পরবর্তী জীবনে প্রতিভাদীপ্ত মনন নির্মাণে নিয়ামকের ভূমিকায়ও নামে। হিমালয় যাত্রার মাঝপথে বোলপুরে নামা হয়।

বোলপুর সম্পর্কে বহু কল্পকাহিনী ইতোমধ্যে অগ্রজনদের মুখে শুনে এক প্রকারের প্রতিচ্ছবি তো মনের গভীরে আঁকাই ছিল। শহরে বড় হওয়া কবি গ্রামের শস্য খেতও আগে দেখেননি। তেমন অতৃপ্ত বাসনা রেলগাড়ির যাত্রায় অনেকটাই মিটে গেল। রাখাল বালকের গল্প বড়দের কাছে শুনেছেন মাত্র। তাই ভ্রমণে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে কবি তার বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস বহু কষ্টে সম্বরণ করলেন। রাখাল বালককে চিনতেও পারলেন না।

পাঠ্যপুস্তকে পড়া মুখস্থ করে বাস্তবের রাখাল বালককে চেনা যে কত দুরূহ কবি যেন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে লাগলেন। পিতা মহর্ষি সব সময় কবিকে নিজের মতো করে ঘুরে ফিরে আনন্দ করতে দিতেন। তেমন অবারিত আয়োজনে বাধা বিঘেœর বালাই ছিল না। মনের খুশিতে আনন্দজয়ের মধ্যে যে কত বিচিত্রতার কল্পনা হৃদয়ের নিভৃতে নাড়া দিত, সেটা কবি ঠাকুরবাড়ির মুক্ত পরিবেশে শৈশব থেকেই বুঝতে পারেন। যা ভবিষ্যৎ জীবনকে আরও গতিময় বর্ণময় করে অসাধারণ ও বিশাল প্রতিভা বিকাশের নিয়ামক শক্তি ছিল।
জীবন সায়াহ্নে ‘জীবন স্মৃতি’ লিখতে গিয়ে কবি সেটাই বারবার উপলব্ধিতে এনেছেন, যা তার সৃজন ও মনন দ্যোতনায় চিরস্থায়ী প্রভাব বিস্তারে মুক্ত শক্তি হিসেবে কাজ করে যায়। ক্ষুদ্র পরিসরে বৃহত্তর  ভাব কল্পনা কত যে বিচিত্র অভিজ্ঞতার অনুষঙ্গ হয়েছে, তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উপলব্ধি করেছেন, শুধু সম্মোহনীর প্রভাব হৃদয় দিয়ে নয়, বরং বাস্তব অভিজ্ঞতার শক্তিও ছিল প্রবল।
লেখক : সাংবাদিক

×