ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতি

​​​​​​​ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম

প্রকাশিত: ০১:১৭, ২ অক্টোবর ২০২৩

রাজস্বনীতি ও মুদ্রানীতি

.

বাজার অর্থনীতিতে রাজস্বনীতি মুদ্রানীতি উভয়ই নীতিনির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দুই নীতির মধ্যে যে স্বাতন্ত্র্য তা অনেকাংশেই প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থনৈতিক নয়। বাজেটের আকার, বাজেট ঘাটতি বা উদ্বৃত্তের পরিমাণ এবং অর্থায়নের পদ্ধতির মাধ্যমে কাজ করে রাজস্বনীতি। আর মুদ্রানীতি কাজ করে মুদ্রা সরবরাহ, ঋণ সুদের হারের ওপর এর প্রভাবের  ভিত্তিতে। তবে উভয় নীতিই মূলত সামগ্রিক চাহিদাকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রিত করে। যেহেতু উভয় নীতি একই ব্যাপ্তিতে কাজ করে, তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে এদেরকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ধারণা থেকে মুদ্রা রাজস্বনীতিকে দুটো নয়, বরং একটি হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে, যা কিনা একটি বিশেষ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

অর্থনীতির উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহারের কাক্সিক্ষত পরিবর্তন সাধন। তবে এই দুই নীতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুপার্শ্ব প্রতিক্রিয়াআছে, যেগুলো একেবারেই ভিন্নতর। যেমনঅর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং লেনদেনের ভারসাম্যের ওপর এদের প্রভাব। মূলত এই স্বতন্ত্র পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণেই এই দুটো নীতির মধ্যে পার্থক্য করা হয় এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াজনিত পৃথক লক্ষ্য অর্জনে নিয়োগ করা হয়। বাস্তবে যেহেতু রাজস্বনীতি মুদ্রানীতিকে গুরুত্বের সঙ্গে একে অপরের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেজন্য বিতর্কের একটি প্রধান বিষয়বস্তু হিসেবে বিবেচিত হয় তাদের আপেক্ষিক ফলপ্রসূতা। বিগত বছরগুলোতে এই দুই নীতির আপেক্ষিক ক্ষমতা সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গির নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। মুদ্রানীতির পৃষ্ঠপোষক (monetarist) এবং রাজস্বনীতির পৃষ্ঠপোষক (fiscalist)– এই দুই গ্রুপের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য নীতি দুটির স্বাতন্ত্র্যের মূল বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।

রাজস্বনীতি মুদ্রানীতির ধারণা নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজস্বনীতিকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়রাজস্বনীতি হলো, ‘কোনো সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে কর ব্যবস্থা, সরকারি ব্যয় এবং সরকারি ঋণ কার্যক্রমের ব্যবহার যা সরকারি বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পদের বণ্টন এবং স্থিতিশীলতা প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত।এই সংজ্ঞা রাজস্বনীতির একটি সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির বহির্প্রকাশ বলে মনে করা যেতে পারে। কারণ, এতে ঋণ ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। মুদ্রানীতির রাজস্ব ধারণা উদ্ভূত (কেইনসীয়) দৃষ্টিভঙ্গি ঐতিহ্যগতভাবে গুরুত্ব দেয় সুদের হার নিয়ন্ত্রণকে। অন্যদিকে, মুদ্রা উদ্ভূত (monetarist) ধারণা অর্থের পরিমাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে। রাজস্বনীতি না মুদ্রানীতিকোন্টি বেশি শক্তিশালী এই প্রশ্নের উত্তর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে এই বিকল্প মানদন্ডে কোন্টি ব্যবহার করা হচ্ছে তার ওপর।  বাস্তবে পরিপূর্ণ রাজস্বনীতির ধারণা পাওয়া দুষ্কর। কারণ, রাজস্ব আয় ব্যয়ে যে কোনো পরিবর্তন বাজেট ঘাটতি বা উদ্বৃত্ত অর্থায়নে পরিবর্তন আনয়ন করে, যার ফলে তা মুদ্রানীতির সঙ্গে জড়িত হয়। ঋণ ব্যবস্থাপনা আরও ভালোভাবে বলতে গেলে, ঋণ গ্রহণের বিভিন্ন মাধ্যমসমূহের ব্যবহার, তাদের ইস্যুর সময় এবং তাদের স্থায়িত্ব এগুলো মুদ্রানীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

সরকারি ঋণ কার্যক্রম এবং ঋণ ব্যবস্থাপনাএই দুটি বিষয় রাজস্ব মুদ্রানীতির মধ্যকার যোগসূত্র বা পারস্পরিকতা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুদ্রানীতিকে অনেকে একটা মোটা দাগের (blunt) হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করেন, যা অর্থনীতির সব খাতকে একইসঙ্গে প্রভাবিত করে; অবশ্য তা ভিন্নভাবে পরিবর্তনশীল প্রভাবের মাধ্যমে। অন্যদিকে, রাজস্বনীতির পরিবর্তন কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে করা হয়। যেমননিম্ন আয়ের মানুষের জন্য গড়-পরীক্ষিত (means tested) সুবিধা বাড়ানো, ক্ষুদ্র মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে করের হার কমানো, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোতে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানের জন্য বিনিয়োগ ভাতা প্রদান ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, জাতীয় আয় একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য মুদ্রা অথবা রাজস্বনীতি যে কোনো একটি ব্যবহারের প্রভাব নিরূপণ করা প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি সুদের হার হ্রাস করবে, যা ভোক্তা স্থির মূলধন ব্যয়উভয়েরই বৃদ্ধি ঘটাবে এবং প্রকারান্তরে জাতীয় আয়ের বৃদ্ধি হবে। কারণ, বিনিয়োগ ব্যয় বৃদ্ধির ফলে মূলধন বৃদ্ধি পায়, যা ভবিষ্যৎ আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অপরদিকে, সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতি (যেমনসরকারি ব্যয় বৃদ্ধি) সরাসরি সামগ্রিক চাহিদা বৃদ্ধি করবে। কিন্তু যদি এই ব্যয় বৃদ্ধির অর্থায়ন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারি ঋণের মাধ্যমে করা হয়, সেক্ষেত্রে সুদের হার বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে বিনিয়োগ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে নীট ফলাফল (সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে) হবে বর্তমান আয়ের বৃদ্ধি। কিন্তু যেহেতু বিনিয়োগ ব্যয় কম হতে পারে, সেক্ষেত্রে মূলধনের পরিমাণ যতটুকু হতে পারত, তার চেয়ে কম হবে। ফলস্বরূপ ভবিষ্যৎ আয়ও কম হতে পারে। এটি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, যখন কোনো অর্থনীতি মন্দায় আক্রান্ত হয়, সেরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় আয় ব্যয় বৃদ্ধিতে মুদ্রানীতি সফল নাও হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে চাহিদাকে উদ্দীপিত করার জন্য রাজস্বনীতি বেশি সফল হতে পারে। অনেক অর্থনীতিবিদ আবার বিষয়ে দ্বিমতও পোষণ করেন। তারা মনে করেন যে, মুদ্রানীতিতে স্বল্পকালীন পরিবর্তন ভোক্তা ব্যবসার আচরণকে বেশ দ্রুত দৃঢ়তার সঙ্গে প্রভাবিত করে।

ভবিষ্যৎমুখী ভোগতত্ত্বগুলো থেকে প্রসঙ্গে যে ধারণা পাওয়া যায়, তা হচ্ছে ভোক্তারা নিজেদের আচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে সরকারি রাজস্বনীতিকে অকার্যকর করে দিতে পারে। যেমনসরকারি ব্যয় ঋণ বাড়লে ভবিষ্যতে করের বোঝা বাড়ার আশঙ্কায় জনগণ ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি না করে বর্তমান সঞ্চয় বাড়িয়ে দিতে পারে। রাজস্বনীতির কার্যকারিতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হচ্ছে রাজস্বনীতি সম্প্রসারণমূলক, নাকি সঙ্কোচনমূলক তা স্থির করার প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে রাজস্ব ঘাটতিকে রাজস্ব সংক্রান্ত অবস্থার (fiscal stance) নির্দেশক হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। কারণ, রাজস্ব ঘাটতি নিজেই পরনির্ভরশীল (endogenous)

নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশের রাজস্ব গতি নিয়ে একটি বিশ্লেষণে বিবেচিত ১৭ বছরের মধ্যে ১১ বছরই রাজস্বনীতিকে উৎপাদন ভারসাম্য বিনাশী (output destabilizing) হিসেবে গণ্য করা হয়েছে (পিএইউ ২০০৮) দৃশ্যত, যেসব বছরে উৎপাদন সাধারণ ধারার নিচে ছিল, রাজস্ব কর্তৃপক্ষ মূল্যস্ফীতির চাপ এবং/অথবা বৈদেশিক খাতের সমস্যার কারণে সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতি গ্রহণ করতে সম্ভবত অনিচ্ছুক ছিল। একইভাবে ১৭ বছরের মধ্যে ১৫ বছরই মূল্যস্ফীতির দৃষ্টিকোণ।  রাজস্ব গতি পরিমাপের একটি সর্বজনগ্রাহ্য পদ্ধতি হলো প্রকৃত রাজস্ব ঘাটতি চক্রানুক্রমিকভাবে নিরপেক্ষ (cyclically neutral) রাজস্ব ঘাটতির মধ্যকার পার্থক্য ব্যবহার করা। রাজস্ব স্ট্যান্সে বছরক্রমিক পরিবর্তনই হলো রাজস্ব ইমপাল্স (fiscal impulse) এই ক্ষেত্রে একটি সংকোচনমূলক রাজস্ব স্ট্যান্সে আরও হ্রাস বা একটি সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব স্ট্যান্সে আরও বৃদ্ধিউভয়েই একটি ধনাত্মক রাজস্ব ইমপাল্স পরিমাপ করে। রাজস্বনীতিকে যদি উৎপাদন ভারসাম্য আনয়নে সহায়ক করতে হয়, তাহলে উৎপাদন যখন সাধারণ ধারার নিচে থাকে তখন রাজস্ব ইমপাল্সকে ধনাত্মক হতে হবে এবং উৎপাদন যখন সাধারণ ধারার ওপরে অবস্থান করে তখন তা ঋণাত্মক হতে হবে। (মুজেরী: রাজস্বনীতি মুদ্রানীতির সামঞ্জস্য : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত থেকেরাজস্বনীতি অস্থিতিশীল ছিল।)

মুদ্রানীতির দিক থেকে মূল লক্ষ্য এবং ফলের মধ্যে বৈপরীত্য বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে বেশ দৃশ্যমান এবং অনেকটা অভ্রান্তভাবে নিয়মানুক্রমিক। ফলে, ধরনের লক্ষ্য নির্ধারণের বিশ্বাসযোগ্যতা বাস্তবিকতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। নীতিনির্ধারণের প্রেক্ষিতে ঋণের প্রবৃদ্ধি সংযত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বাস্তবে তেমন কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে প্রতীয়মান হয়, সরকারি খাতকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশেই অকার্যকর। ঘাটতি অর্থায়নের জন্য সরকার দুটি প্রধান দেশজ উৎস থেকে ঋণ নেয়- ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং ব্যাংকবহির্ভূত উৎস, যা আসে মূলত জাতীয় সঞ্চয় স্কিম থেকে। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এই দুটি উৎস পারস্পরিক সম্পর্কহীন (mutually exclusive) হিসেবে গণ্য নাও হতে পারে। কারণ, আপেক্ষিক রিটার্নের হারের ওপর নির্ভর করে ভোক্তারা। তাদের সঞ্চয় হয় বাণিজ্যিক ব্যাংকে জমা রাখে অথবা জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগ করে। ফলে, যে উৎস থেকেই ঋণ নেওয়া হোক তা ভোক্তার সঞ্চিত অর্থ থেকেই যায়। এজন্য এটা বলা যায় যে, ব্যাংক ব্যাংকবহির্ভূত উৎসের মধ্যে সরকারের দেশজ ঋণের বণ্টনে কোনো পরিবর্তন ব্যাংক ব্যবস্থার তারল্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বড় পার্থক্য সৃষ্টি নাও করতে পারে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ গ্রহণের কাঠামো। যদি সঞ্চয়ী ব্যাংক থেকে ঋণ না এসে প্রধানত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আসে, তবে অর্থব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শক্তিশালী মুদ্রা (high-powered money) সঞ্চারিত হবে, যা তারল্যের বিস্তারকে অনেকটাই প্রভাবিত করবে।

কার্যকারিতার দ্রুততার ভিত্তিতে মুদ্রানীতি এবং রাজস্বনীতি কিন্তু একটি অন্যটির চেয়ে আলাদা। মুদ্রানীতিকে অধিকতর নমনীয় বলে বিবেচনা করা হয় এই কারণে যে, স্বল্প সময়ের মধ্যে মুদ্রানীতির ভঙ্গি পরিবর্তন করা যায়। অন্যদিকে, রাজস্বনীতির পরিবর্তন (যেমনকর হারের পরিবর্তন) কার্যকর এবং বাস্তবায়ন করতে অধিকতর সময় লাগে। যেহেতু মূলধন বিনিয়োগ করতে হলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রয়োজন, সেহেতু সুদের হারের হ্রাসকে বর্ধিত বিনিয়োগ ব্যয়ে রূপান্তরিত করতেও বেশ সময় লাগতে পারে। অন্যদিকে, বর্ধিত সরকারি ব্যয়ের প্রভাব তখনই অনুভূত হবে যখন তা ব্যয় করা হবে। আবার প্রত্যক্ষ পরোক্ষ কর হ্রাসের প্রভাব অর্থনীতিতে বেশ দ্রুত অনুভূত হতে পারে। অবশ্য একটি সরকারি ব্যয় কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত এবং এটি বাস্তবায়ন করার মধ্যে সময় লাগতে পারে। ফলপ্রসূচাহিদা ব্যবস্থাপনা জন্য রাজস্বনীতি বা মুদ্রানীতি ব্যবহারের অনেক বিষয়ের প্রতি নীতিনির্ধারকদের লক্ষ্য রাখতে হয়। কাজেই রাজস্বনীতি আর মুদ্রানীতির বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের লক্ষ্য রাখতে হবে। 

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক কর কমিশনার পরিচালক- বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কো. লি.

 

 

 

×