ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

শিক্ষাক্ষেত্রে রোলমডেল

ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া

প্রকাশিত: ২০:৫১, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শিক্ষাক্ষেত্রে রোলমডেল

আলোকিত জনগোষ্ঠী গড়তে বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগতমান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রযাত্রায় জননেত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অগ্রগণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে আনন্দনিকেতন, সেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। তাই জোর দিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব সাফল্যের আসল কারিগর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আলোকিত জনগোষ্ঠী গড়তে বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগতমান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বর্তমান সরকারের সাড়ে ১৪ বছরে এসেছে নজিরবিহীন পরিবর্তন ও সাফল্য। দীর্ঘ এই সময়ে শিক্ষার সর্বস্তরেই চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। শিক্ষার এই ব্যাপক অগ্রগতি ও সক্ষমতা অর্জন অর্থনীতির ভিত্তিকেও করেছে মজবুত ও টেকসই এবং দেশকে বিশ্বের বুকে দিয়েছে পৃথক পরিচিতি। সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এসেছে শৃঙ্খলা। বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে অর্জিত এই পরিবর্তনকে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বৈপ্লবিক সাফল্য হিসেবেই দেখছেন।

তাদের মতে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের ঝুলিতে শিক্ষাক্ষেত্রের সাফল্যই সবচেয়ে উজ্জ্বল। প্রতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই উৎসব হয়। নতুন বইয়ের আনন্দে শিক্ষার্থীরা শুরু করে নতুন শিক্ষাবর্ষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে বই বিতরণ এটি কেবল বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিশ্বের কোথাও এত বিপুলসংখ্যক বই বিনামূল্যে দেওয়ার নজির নেই। সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারি করা হয়েছে। বিদ্যালয় ছিল না এমন সব গ্রামেও ধাপে ধাপে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষা খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে নারী শিক্ষার অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ছেলেমেয়ের ভর্তির হার সমান। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব হওয়ায় এ সরকারের আমলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে গত সাড়ে ১৪ বছরের অর্জন অবিস্মরণীয়। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা আর শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে রীতিমতো বিপ্লব ঘটেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে রোলমডেল এখন বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি একসঙ্গে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক স্কুলকে জাতীয়করণ করেন।

বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে বঙ্গবন্ধুর এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী হিসেবে ধরা হয়, যা পরে বাংলাদেশের সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি এবং শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ২৬ হাজার বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলকে সরকারিকরণ করেছেন। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশের নিরক্ষরতা দূরীকরণে অর্জিত হয়েছে অভাবিত সাফল্য। বর্তমানে বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার ৭৪.৬৬ শতাংশ, যা সত্যি প্রশংসনীয়। বিশ্বে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির সূচকে বাংলাদেশ এক নম্বরে। বাংলাদেশ সরকার চলতি অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের একটি বড় অংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দিয়েছে।  শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ অবস্থা, সেশনজটের কালো থাবার   বিলুপ্তি, নিয়মিত ক্লাস, যথাসময়ে ফাইনাল পরীক্ষাসহ শিক্ষাঙ্গনে যেমন পরিবেশ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন তা সবই নিশ্চিত করছে সরকার। ফলে শিক্ষার্থীরা  পড়াশোনা শেষ করেই প্রবেশ করতে পারছে কর্মজীবনে।

তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া শুধু বাঙালির প্রাত্যহিক জীবনে নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছড়িয়েছে ব্যাপকভাবে। ৪০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে  ২৩ হাজার মালটিমিডিয়া ক্লাস্রুম এবং ডিজিটাল ল্যাব চালু করা হয়েছে। বর্তমান সরকার তার শাসনকালে দেশের প্রায় শতভাগ শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার সাফল্য দেখিয়েছে। এর আগে যেখানে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তির হার ছিল ৬১ শতাংশ, বর্তমানে সেখানে প্রাথমিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় শতভাগ।
শিক্ষার দুটি ধারা রয়েছেÑ ধর্মীয় শিক্ষা এবং আধুনিক শিক্ষা। ধর্মীয় শিক্ষা বলতে সাধারণত মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা বুঝি। আধুনিক শিক্ষা বলতে জাতি-ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে বুঝি। সরকার দুটি শিক্ষা ব্যবস্থাকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। সাধারণ জনগণের পছন্দের প্রাধান্য দিয়ে সমানতালে উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে সরকার। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষায় আধুনিকীকরণসহ যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। পিছিয়ে পড়া মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছে বর্তমান সরকার। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে মাদ্রাসা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

এ শিক্ষায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। কওমি মাদরাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত প্রজন্মকে  বিশিষ্ট আলেম-ওলামা-চিন্তাবিদ হওয়ার পাশাপাশি বাস্তব জীবনমুখী প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৪৫টি মাদ্রাসায় আইসিটি ল্যাব চালু করা হয়েছে। মাদ্রাসা বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে ইতোমধ্যে দেশে প্রায় ১০ হাজার মাদ্রাসায় ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে। ৩৬ হাজার মিলিয়ন ডলার সহায়তায় মাদ্রাসার শিক্ষকদের জন্য আরবি স্পোকেন এবং আইসিটি ট্রেনিং কোর্স চালু করা হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতোমধ্যে এক হাজার ১৩০টি ভবন  তৈরি করা হয়েছে এবং আরও ২ হাজারটি নতুন ভবন তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষকদের সম্মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের বেতন এবং সাধারণ শিক্ষকদের বেতন সমান করা হয়েছে। এখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং কলেজের অধ্যক্ষ যা বেতন পান ঠিক মাদ্রাসার সুপার এবং অধ্যক্ষ কলেজের অধ্যক্ষের সমান বেতন পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরেকটি অসাধারণ কাজ করেছেন। মাদ্রাসার উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে বিশ্বমানের শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দেশে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা আর শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের ক্ষেত্রে ঘটেছে বিপ্লব। যা বিশ্বের বহু দেশের কাছে অনুকরণীয়।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল মাত্র ছয়টি সেখানে বর্তমানে দেশে ৫২টি পাবলিক ও ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৩১ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে। এক সময় বছরে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী ভারতে উচ্চশিক্ষা নিতে যেত, এখন যায় না বললেই চলে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২ হাজার বিদেশী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, বিদ্যালয়ে ভর্তির হার শতভাগ, ছাত্র-ছাত্রীর সমতা, নারী শিক্ষায় অগ্রগতি, ঝরে পড়ার হার দ্রুত কমে যাওয়াসহ শিক্ষার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাফল্য আকাশছোঁয়া। প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ৫১ শতাংশ।

২ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার ৬৯১ শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ১ কোটি ৯ লাখ ৯১ হাজার ৪৫১ জন। প্রাক-প্রাথমিকে ৫০ দশমিক ৩০ শতাংশ নারী। ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯২ জনই নারী। মাদ্রাসায় ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী। ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ১৩৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২১ লাখ ৩ হাজার ৫৭২ জন। এর মধ্যে দাখিল স্তরে ৬০ দশমিক ৪৭ শতাংশ, আলিমে ৫৬ দশমিক ৩০ শতাংশ, ফাজিল পর্যায়ে ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং কামিলে ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী রয়েছেন।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাধারণ ও মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নের পাশাপাশি সরকার টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষার ওপরেও অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ৩০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষায় ভর্তির হার ১৭ শতাংশ। সরকার টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে মেইনস্ট্রিমে আনতে বদ্ধপরিকর। যে জাতি নারীদেরকে শিক্ষিত করে তুলতে পারে সে জাতির উন্নতি অবধারিত। এই বিশ্বাস রেখে বর্তমান সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার সাধারণ শিক্ষার এবং কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করছে না, এ দেশের নারী সমাজকে সুশিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার সকল প্রস্তুতিও গ্রহণ করছে।

শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাকে রীতিমতো ঈর্ষণীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে। প্রায় শতভাগ মেয়েই এখন স্কুলে যাচ্ছে। মেয়েদের জন্য বিদ্যালয়ে যে পরিবেশ থাকা দরকার সরকার তা নিশ্চিত করেছে। এর ফলে প্রফেশনাল ১৩ ধরনের প্রতিষ্ঠানে (মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি, মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিট, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজ অ্যান্ড ইনস্টিটিউশন, হোমিওপ্যাথিক কলেজ, ইউনানি/আয়ুর্বেদিক, নার্সিং ইনস্টিটিউট, হেলথ টেকনোলজি, টেক্সটাইল টেকনোলজি, লেদার টেকনোলজি, ল অ্যান্ড আর্ট কলেজ, এ্যাগ্রিকালচার কলেজ, আর্মড ফোর্সেস অ্যান্ড আর্মি মেডিক্যাল কলেজ এবং লাইব্রেরি সায়েন্স) নারী শিক্ষার্থী ৫৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী ১ লাখ ১ হাজার ৮০২ জন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় এখন ৬০ ভাগ নারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম স্থানে অবস্থান করছে।
স্বাধীনতার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে গেলেও শিক্ষার অগ্রগতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ সরকারের গত সাড়ে ১৪ বছরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সরকারি ভাষ্য নয়, বরং বিশ্বব্যাংক, ইউনেস্কো, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামসহ আন্তর্জাতিক দাতা ও গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতিকে অন্যদের জন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করে বলছে যে, শিক্ষায় প্রতিটি পর্যায়ে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও টেকসই। শিক্ষায় নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে বাংলাদেশ ছুঁয়েছে নতুন মাইলফলক। বর্তমান সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধনে সক্ষম হয়েছে। 
সব মহলের মতামত নিয়ে সমগ্র জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন এবং জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে তার অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন করে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক মানসম্মত যুগোপযোগী শিক্ষা এবং আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা, শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, ভর্তি নীতিমালা বাস্তবায়ন, যথাসময়ে ক্লাস শুরু, নির্দিষ্ট দিনে পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ, ৬০ দিনে ফল প্রকাশ, সৃজনশীল পদ্ধতি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রতিষ্ঠা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, স্বচ্ছ গতিশীল শিক্ষা প্রশাসন গড়ে তোলা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আকৃষ্ট করে ঝরে পড়া বন্ধ করা ও শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

স্কুল ও মাদ্রাসায় সব ধরনের শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে যথাসময়ে বই পৌঁছে দিয়ে দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। এই অভূতপূর্ব সফলতা সমগ্র জাতির কাছে প্রশংসিত হয়েছে এবং বিশ্ব সমাজে বাংলাদেশ পেয়েছে স্বীকৃতি ও মর্যাদা। শিক্ষাক্ষেত্রে  সরকারের এমন উন্নয়নে বিশ্ব আজ বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কি এমন ম্যাজিক আছে যার সাহায্যে শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাটা এত দ্রুত গতিতে সম্ভব হয়েছে বিশ্বনেতারা সেটি জানতে চান।
সুতরাং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রযাত্রায় জননেত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অগ্রগণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে আনন্দনিকেতন, সেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। তাই জোর দিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব সাফল্যের আসল কারিগর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশকে অবৈধ সামরিক জান্তা সরকার এবং তার ভূমিষ্ঠ দল যেভাবে অগ্রগতির ধারাকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়ে সব ভেঙে চুরমার করেছিল, সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করে আজ রোলমডেল হিসেবে বিশ্বের সামনে দাঁড় করিয়েছেন।
লেখক : ট্রেজারার, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়