ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন

-

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২ আগস্ট ২০২৩

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন

সম্পাদকীয়

নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য স্বস্তির বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দীর্ঘ আট মাস বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন সার্ভিস। আপাতত প্রতিদিন আট জোড়া ট্রেন চলাচল করবে এই লাইনে। ট্রেনগুলো চলাচল করবে আগের নিয়মানুয়ায়ী। উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ ছিল ঢাকা-নারায়ণঞ্জ রেল সার্ভিস। ফলে, স্বভাবতই নারায়ণগঞ্জবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এই পথে এমনিতেই পরিবহন কোম্পানিগুলোর একচেটিয়া প্রাধান্য, আধিপত্য ও দাপটের বিষয়টি সুবিদিত। এমনকি ট্রেনও চলাচল করে তাদের মর্জিমাফিক। বাসভাড়াও বেশি। এর পাশাপাশি যানজট-জনজট তো আছেই।

মাঝে মধ্যে পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টিও অস্বীকার করা যায় না। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় নিত্যযাত্রীদের, যাদের সংখ্যা অগণিত, বেশি ভাড়াসহ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এতদিন। তদুপরি পদ্মা রেল সেতু বাস্তবায়নের কাজ শেষ করে ৪ মাসের মধ্যে চালুর ঘোষণা দেওয়া হলেও রেল কর্তৃপক্ষ সেটি যথাসময়ে সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, যাত্রীদের দুঃখ-কষ্ট-দুর্ভোগ হয়েছে দীর্ঘায়িত। যা হোক, দীর্ঘ ৮ মাস পর হলেও অবশেষে পুনরায় সচল হয়েছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ- এটি একটি সুসংবাদ অবশ্যই। 
তবে এই লাইনে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আপ অ্যান্ড ডাউন ডাবললাইন এবারও নির্মাণ করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। বলতেই হয় যে, এটি রেল কর্তৃপক্ষের চরম ব্যর্থতা ও দূরদর্শিতার অভাব। ফলে, যাত্রীদের ভিড়ে ভিড়াক্কার বাদুড়ঝোলা দুরবস্থা, যাত্রাপথের সড়কের রেল ক্রসিংয়ের জট থাকছে সেই আগের মতোই। অথচ পদ্মা রেলপথের জন্য লাইনটি বন্ধ রাখার সুযোগ নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ডাবললাইন নির্মাণ করতে পারত সহজেই। তাহলে যাত্রীদের দুর্ভোগ, সময় ও জনজট নিরসন হতো বহুলাংশে। মনে রাখতে হবে যে, প্রতিদিন অগণিত নিত্যযাত্রী চলাচল করে থাকে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ ও অন্যত্র। উত্তরা থেকে মেট্রোরেল সার্ভিস অচিরেই সম্প্রসারিত হতে যাচ্ছে কমলাপুর পর্যন্ত।

সেটি চালু হলে মেট্রোযাত্রীরাও ডাবললাইনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারত। ফলে, রাজধানী ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণের পাশাপাশি মেট্রো ও রেলসংযোগের সুবিধা পাওয়ায় সড়কপথের প্রবল যানজট নিরসন হতো। নিশ্চিত হতো আরামদায়ক, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ভ্রমণ। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে আগামী দিনের সম্ভাবনার বিষয়টি বিবেচনায়  রেখে। 
ঢাকা-নারায়গঞ্জ রুটে চলাচলরত ট্রেনগুলোর বগির দুরবস্থা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। পুরনো, জরাজীর্ণ, অপরিচ্ছন্ন বগির অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাখা থাকে না। পানীয় জল ও শৌচাগারের সুবিধা তো দূরের কথা! ভিড়ে অসহনীয় কষ্ট ও দুর্ভোগ বিশেষ করে গরমের দিনগুলোতে পোহাতে হয় যাত্রীদের। নারী ও শিশুদের তো নাজেহাল অবস্থা। ডেমু ট্রেন নিয়েও যাত্রীদের অভিযোগ ছিল বিস্তর। নিকট অতীতের এসব দুঃখ-কষ্ট এবার হবে না বলেই প্রত্যাশা। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রুটে যেন নতুন ট্রেন ও ইঞ্জিন দেওয়া হয়। সুরক্ষিত করা হয় সড়কপথের রেলক্রসিংগুলো।

×