ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেট্রোরেলের শতভাগ ব্যবহার জরুরি

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ৩ জুন ২০২৩

মেট্রোরেলের শতভাগ ব্যবহার জরুরি

মেট্রোরেল এখন রাজধানীর ঢাকার অহঙ্কার

মেট্রোরেল এখন রাজধানীর ঢাকার অহঙ্কার। বিষয়টি এমন যে ‘আমাদেরও আছে মেট্রোরেল।’ আমরা প্রবেশ করেছি বিশে^র সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থায়। বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যায় যানজটের ঝামেলা এড়িয়ে চলাচলের জন্য এর চেয়ে ভালো পরিবহন আর নেই। দেশের প্রথম মেট্রোরেল নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস ও কৌতূহলের সীমা নেই। উদ্বোধন হওয়ার পর যানটিতে ভ্রমণ করতে দীর্ঘ লাইন লেগে যেত। দূরদূরান্ত থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও অনেকে চড়ার সুযোগ পেতেন না। সফল হলে নিজেকে ধন্য মনে করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা পোজের ছবি পোস্ট করতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন ছিল যে প্রয়োজনীয় পরিবহন নয়, পর্যটকদের জন্য ‘ভ্রমণ ট্রেন’ চালু করা হয়েছে। এখন অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। কিছু মানুষ এখন প্রয়োজনেও ট্রেনটি ব্যবহার শুরু করেছেন।
কবে কোথায় প্রথম মেট্রোরেলে চড়েছিলাম এখন তা আর খুব একটা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। ১৯৯৩ সালে সিঙ্গাপুর সফরের সময় মেট্রোরেলে চড়েছিলাম কিনা মনে নেই। সিঙ্গাপুরে মেট্রোরেল চালু হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। প্রতিবেশী কলকাতায় মেট্রোরেল চালু হয়েছিল আরও আগে ১৯৮৪ সালে। কলকাতায়ও মেট্রোরেল চড়া হয়নি। প্রথম মেট্রোরেল চড়ার কথা মনে আছে ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান করেছিলাম তখন। বিশে^র সবচেয়ে পুরনো মেট্রোরেল নিউইয়র্কে চালু হয়েছিল ১৯০৪ সালে।

নিউইয়র্ক শহরে নানা ধরনের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট রয়েছে। যেমন বাস, ট্যাক্সি, লিমোজিনসহ হাল আমলের অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন। মেট্রোরেল ওখানে ‘সাবওয়ে’ নামে পরিচিত। সকল পাবলিক পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে সাবওয়ে। নগর সার্ভিস পাবলিক বাসের সংখ্যা খুবই কম। যানজটের কারণে শহরে পাবলিক বাস নিরুৎসাহিত করা হয়। রয়েছে নানা ধরনের ট্যাক্সি সার্ভিস। ভাড়া প্রচুর এবং যানজটের কারণে নির্দিষ্ট সময় গন্তব্যে পৌঁছানোও অনিশ্চিত। এ কারণে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বেশিরভাগ মানুষ চলাচলের জন্য সাবওয়ে ব্যবহার করেন। আমিও প্রথম সাবওয়ে চড়েছিলাম এ কারণেই। এরপর ২০১২ সালে নিউইয়র্কে গিয়ে আবারও সাবওয়ে চড়েছি। কিছু আধুনিকতা ছাড়া পার্থক্য ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংযোজন।
শুধু নিউইয়র্কে নয়, বিশে^র প্রায় সব বড় শহরেই এখন সাবওয়ে বা মেট্রোরেল অপরিহার্য। রাস্তার পাবলিক পরিবহনের মাধ্যমে কোনোভাবেই এত মানুষের চলাচল নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। শহরগুলোতে এখন ট্যাক্সি এবং অ্যাপসভিত্তিক পাবলিক পরিবহন চলাচল করলেও পাবলিক বাসের সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। দূরপাল্লার যাত্রীরাই ব্যবহার করছে বাসের মতো বড় পরিবহন। প্রবাদ রয়েছে, দিনের বেলায় লন্ডন ও প্যারিস শহরে রাস্তায় চলাচলকারী অর্ধেক মানুষ থাকে মাটির নিচে। বাস্তবতাও তাই।  
বিশে^র সবচেয়ে ব্যস্ত দুই শহর লন্ডন এবং প্যারিসেও সাবওয়ে চড়ার সুযোগ হয়েছে। এ ধরনের যানবাহনে চলাচল করেছি জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট শহরে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়শিংটন ডিসিতেও সাবওয়ে চড়তে হয়েছে। এশিয়ার অগ্রগামী তিন দেশে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডেও নানা নামে পরিচালিত মেট্রোরেলে চড়েছি। ভারতের দিল্লিতেও মেট্রোরেলে চড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। ঢাকায় শুরু হওয়া মেট্রোরেলে চড়তে বরং বেশ কয়েক মাস লেগে গেছে। অতি সম্প্রতি এই অভিজ্ঞতাও হয়েছে। প্রয়োজনে নয়, অভিজ্ঞতার জন্যই চড়েছি। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে টিকিট কিনে পল্লবী পর্যন্ত ভ্রমণ করেছি। স্টেশন থেকে বের হয়ে আবার টিকিট কেটে উত্তরা উত্তরে এসে ভ্রমণ শেষ করেছি। বিশে^র বড় বড় শহরের পর নিজের দেশের অভিজ্ঞতা বেশ সুখকর। কেমন যেন এক ভালো লাগায় মনটা ভরে গিয়েছিল। মাটির টান বলে কথা। 
টিকিট কাটা, মেট্রোরেল চড়ার নিয়মকানুন এর মধ্যে বহুবার প্রচার করা হয়েছে। সে অনুযায়ী মানুষ অভ্যস্তও হয়ে উঠেছে। মেশিনের সামনে দাঁড়িয়ে গন্তব্য নির্ধারণ করলেই টাকার অঙ্ক পরিদর্শন করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার নোট প্রবেশ করালে বের হয়ে আসছে একটি কার্ড। বড় নোট হলে অবশিষ্ট টাকাও ফেরত আসছে। লাইনে দাঁড়িয়ে মেশিনে কার্ড ছোঁয়ালে খুলে যাচ্ছে প্রবেশপথ। এরপর ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। স্টেশন থেকে বের হওয়ার সময় মেশিনে কার্ডটি প্রবেশ করিয়ে দিলেই খুলে যাচ্ছে বের হওয়ার পথ। বিশে^র সব দেশে প্রায় একই পদ্ধতি। সিঙ্গাপুর, প্যারিস ও লন্ডনে ট্রেনে চড়ার জন্য বাংলাদেশের মতোই কার্ড ব্যবহার করা হয়।

থাইল্যান্ড, দিল্লি এবং নিউইয়র্কে ব্যবহার করা হয় এক ধরনের কয়েন। ট্রেনের আসন ব্যবস্থা, যাত্রীদের গন্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ অনেকটা একই রকম। সবচেয়ে সুখের কথা, সকল শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ঢাকার যাত্রীরা যথাযথ পদ্ধতি মেনে মেট্রোরেলে চড়তে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। যাত্রীদের সহযোগিতা ও সতর্ক করার জন্য দায়িত্ব পালন করছেন কিছু নিরাপত্তা কর্মী। বিশে^র অন্যান্য দেশেও তাই রয়েছে।             
বেশ কয়েক মাস হয়ে গেল চালু হয়েছে মেট্রোরেল। উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে বিশে^র সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই পাবলিক পরিবহন। কয়েক মাস অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে চলেছে দিনের অর্ধেক সময়। পহেলা জুন থেকে চলছে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। যাত্রীদের প্রয়োজনে যে এর সময় বাড়ানো হয়েছে ঠিক তেমনটি নয়। সেই অর্থে এখনো মেট্রোরেল যাত্রী চলাচল শুরু হয়নি। বেশির ভাগ যাত্রী এখনো দেখার জন্যই চড়ছেন। প্রথম দিকে দর্শক সংখ্যা বেশি হলেও এখন কমে গেছে অনেকটা। এ কারণে যাত্রীও কমেছে। চলাচলের সময় বাড়ানো হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলে প্রকৃত যাত্রীর চাপ থাকবে অনেক। তখন যাতে কোনো বিপর্যয় না ঘটে এ জন্যই পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি।
অভিজ্ঞতা অর্জনের পর ঢাকায় চালু হওয়া মেট্রোরেল নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার তেমন সুযোগ নেই। যাত্রীদের শুধু আরও একটু অভ্যস্ত করতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে, যাতে কারও সাহায্য ছাড়া নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে। এই লেখার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। এত খরচ করে স্থাপন করা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের মেট্রোরেলের ব্যবহার যেন হয় শতভাগ। সিটি করপোরেশন ইতোমধ্যে বেশ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারলেই এর শতভাগ ব্যহার নিশ্চিত করা যাবে।
১৯৯৬ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকতে হয়েছে দুদিন। রাতযাপন ছিল এক আত্মীয়ের বাসায়। শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তাঁর বাসস্থান। সাবওয়ের শেষ স্টেশন থেকেও ৪/৫ কিলোমিটার দূরে। তিনি প্রতিদিন সকালে ওয়াশিংটন ডিসিতে কাজে আসতেন, ফিরতেন সন্ধ্যায়। বাসা থেকে নিজের গাড়িতে চড়ে সাবওয়ে স্টেশনে যেতেন। স্টেশন সংলগ্ন বিশাল পার্কিংয়ে গাড়ি রেখে চড়তেন সাবওয়েতে। ফিরতেন একইভাবে। আমিও এভাবে দুদিন তার সঙ্গী হয়ে যাতায়াত করেছি। প্রত্যক্ষ করেছি, শহরের বাইরে প্রায় সব স্টেশনের পাশেই রয়েছে বড় ধরনের কার পার্কিং। 
উত্তরা উত্তর থেকে শুরু হয়ে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচলকারী মেট্রোরেলে এখনো যাত্রী তেমন একটা নেই। যাত্রী হওয়ার কারণও নেই। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্ট্রাল এবং উত্তরা দক্ষিণ স্টেশন এলাকায় এখনো আবাসিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর অনেকে বাড়িঘর  তৈরি শুরু করেছেন। চলতি বছর শেষ নাগাদ এটি মতিঝিল পর্যন্ত চালু হলে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তখন পর্যটক নয়, প্রকৃত যাত্রীই থাকবে অনেক। টঙ্গী, আব্দুুল্লাহপুর, আশুলিয়া, দিয়াবাড়ি এবং উত্তরা আবাসিক এলাকার যাত্রীরাই তখন যাতায়াত করবেন। যাত্রীদের সুবিধার জন্য ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশন আব্দুুল্লাহপুর থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন পর্যন্ত বিআরটিসি দোতলা বাস দিয়ে ‘সাটল সার্ভিস’ চালু করেছে। এ ধরনের সাটল সর্ভিস ভবিষ্যতে আরও বাড়াতে হবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিটি মেট্রো স্টেশন ঘিরে শত শত গাড়ি রাখার উপযোগী পার্কিং তৈরি করা হয়। বিশেষ করে শহরের বাইরে যেখানে রেললাইন শুরু বা শেষ হয়েছে এসব স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় শত শত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়। গাড়ি নিয়ে যাতে যাত্রীদের শহরে প্রবেশ করতে না হয় সে জন্যই এই উদ্যোগ। তারা দূর থেকে এসে পার্কিংয়ে গাড়ি রেখে মেট্রোতে চড়ে শহরে যাচ্ছেন। ফেরার পথে আবার মেট্রোতে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছে নিজের গাড়ি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। 
আমাদের এখনো সেই সুযোগ রয়েছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা, সেন্ট্রাল এবং উত্তরা দক্ষিণ স্টেশনের আশপাশে এখনো প্রচুর জায়গা খালি রয়েছে। সরকার চাইলে এগুলোতে পার্কিং তৈরি করতে পারে। স্টেশন সংলগ্ন পার্কিং থাকলে, আশুলিয়া, টঙ্গী, আব্দুুল্লাহপুর, দিয়াবাড়ি এবং উত্তরার সকল সেক্টর থেকে যাত্রীরা গাড়ি নিয়ে শহরে প্রবেশ না করে মেট্রোরেলে করে যাতায়াত করতে পারবেন। বিপুলসংখ্যক গাড়ি বাইরে থাকলে শহরের যানজট অনেকটাই কমে আসবে। একইভাবে নির্মাণাধীন বাকি লাইনগুলোর ক্ষেত্রেও যদি এখন থেকে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা যায়, তবে শহরকে পুরো যানজটমুক্ত রাখা সম্ভব হবে। 
ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে এমআরটি লাইন-১ এবং ৫-এর। এমআরটি লাইন-১ এর পূর্বাচল প্রান্তে কয়েকটি স্টেশন সংলগ্ন স্থানে পার্কিং নির্মাণ করা যায়। এই এলাকায় এখনো প্রচুর জায়গা খালি রয়েছে। একইভাবে এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর যাত্রাপথ) এর হেমায়েতপুর ও ভাটারা এই দুই প্রান্ত এবং এমআরটি লাইন-৫ (দক্ষিণ যাত্রাপথ) এর গাবতলী ও আফতাবনগর ও দাশেরকান্দি প্রান্তে কয়েকটি স্টেশনের পাশে পার্কিংয়ের জায়গা রাখা যায়। ভবিষ্যতে যেসব প্রকল্প আসছে তার মধ্যে এমআরটি লাইন-২ এর গাবতলী এবং ডেমরা প্রান্ত, এমআরটি লাইন-৪ এর নারায়ণগঞ্জ প্রান্তে এখনো পার্কিংয়ের জন্য প্রচুর জায়গা পাওয়া যাবে।

প্রতিটি স্টেশনের সঙ্গে অন্তত এক শ’ গাড়ির পার্কিং কিংবা বহুতল পার্কিং নির্মাণের জন্য জায়গা রাখা যায়। একই সঙ্গে সাটল বাস সার্ভিসের জন্য স্টেশন সংলগ্ন এলাকাগুলোতে পরিকল্পিত আধুনিক বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হলে মেট্রোরেলের ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে। দূর-দূরান্ত থেকে সাটল বাসে এসে যাত্রীরা মেট্রোরেলে চড়ে শহরে প্রবেশ করলে যানজট নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বেঁচে যাবে প্রচুর শ্রমঘণ্টা। চাপ কমবে শহরের ওপর। 
মেট্রোরেলের স্টেশনের পাশে জায়গাগুলোর চাহিদা অনেক। বিশ্বজুড়ে শহরের অন্যান্য জায়গা থেকে স্টেশন সংলগ্ন জায়গার মূল্য অনেক বেশি। স্টেশনের আশপাশে আবাসিক এলাকার ভাড়াও তুলনামূলক বেশি থাকে। এ কারণে জায়গাগুলো দখলের জন্য থাকে সর্বোচ্চ চেষ্টা। প্রভাব খাটিয়ে, প্রয়োজনে অনৈতিক পথে গিয়ে হলেও এসব জায়গা বরাদ্দের চেষ্টা চলে। উত্তরার তিনটি স্টেশনের পাশে এখনো প্রচুর জায়গা খালি রয়েছে। রাজউকের এসব জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মার্কেট নির্মাণের কথা শোনা যাচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে এ ধরনের সাইন বোর্ডও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
মেট্রো স্টেশন এলাকা বাণিজ্যিকভাবে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বিপুল ব্যয়ে নির্মিত মেট্রো লাইনের ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন সংলগ্ন পার্কিং এবং সাটল বাসের জন্য বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ। স্টেশনের পাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। শহরের বাইরে মেট্রো স্টেশনগুলোর পাশে পার্কিং ও বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের পরিকল্পনা এখনই গ্রহণ করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে আর কিছুই করা যাবে না। প্রভাব বিস্তার করে মার্কেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প মেট্রোরেলের শতভাগ ব্যবহার নিশ্চিত করে যানজটের চাপমুক্ত আধুনিক রাজধানী গড়ার জন্য সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং মেট্রোরেলের কর্তৃপক্ষকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×