ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নের সোপান হতে পারে গণশুনানি

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৩ ডিসেম্বর ২০২২

উন্নয়নের সোপান হতে পারে গণশুনানি

গণশুনানি

রিপোর্টার হিসেবে নানা ধরনের রিপোর্ট করতে হয়েছে পত্রিকার পাতায়। ১৯৯২ সালের শেষ দিকের কথা। জনকণ্ঠ তখনো বাজারে আসেনি। ট্রায়াল কপি বের হতো প্রতিদিন। আমাকে এসাইনমেন্ট দেওয়া হয় বিভিন্ন অঙ্গনের আলোচিত ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার। আলোচিত ব্যক্তি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল মতিউর রহমান নিজামীর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। শিক্ষানবিস তরুণ রিপোর্টার হিসেবে তা ছিল একটি বড় অভিজ্ঞতা। ভবিষ্যতে এ নিয়ে লেখার ইচ্ছে রয়েছে। আরও সাক্ষাৎকার নিতে হয়েছিল কোয়ান্টাম গুরু মহাজাতক শহীদ আল বোখারীর। তিনি তখন হাতের রেখা দেখে মানুষের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন।

সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম আশরাফিস নেচার কিউরের প্রতিষ্ঠাতা আশরাফ আলীর (নামে কিছুটা বিভ্রাট থাকতে পারে)। তারা দুজনই এক সময় সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সে সময় আরও সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম জাতীয় পার্টির নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, কাজী জাফর আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা ড. কামাল হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, বিএনপির ব্যারিস্টার সালাম তালুকদার (সেই সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী), কর্নেল (অব) অলি আহমেদ, ব্যবসায়ী নেতা সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক (পরে ঢাকার মেয়র) প্রমুখের নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে। তাদের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল জনকণ্ঠের ডামি কপিতে। এগুলো ছিল সাংবাদিকতা জীবনের প্রথম  রোমাঞ্চ।
পত্রিকা প্রকাশ হওয়ার পর রাজনৈতিক বিটে সার্বক্ষণিক হয়ে যাওয়ার পরও নানা বিষয়ে রিপোর্ট করেছি। এর মধ্যে একটি রিপোর্ট আমাকে আরও বেশি রোমাঞ্চিত করেছিল। বিষয় ছিল তৎকালীন ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টে (ডিআইটি) পূর্তমন্ত্রীর গণশুনানি। পরে অবশ্য নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। পূর্তমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। অফিস থেকে আমাকে এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছিল গণশুনানির সংবাদ সংগ্রহের জন্য।

সপ্তাহে একদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে মাঝখানে বিরতি দিয়ে বিকেল ৪/৫টা পর্যন্ত চলত গণশুনানি। সেদিন প্রত্যক্ষ করেছিলাম ডিআইটি অফিসে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা। ডিআইটির চেয়ারম্যান এবং সকল সদস্যকে পাশে বসিয়ে মন্ত্রী নিজে মানুষের সমস্যার কথা শুনতেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের নির্দেশ দিতেন। এমনও দেখেছি ১২ বছর ধরে ডিআইটিতে ঘুরেও যে সমস্যা সমাধান করতে পারেননি, তা হয়েছে কয়েক মিনিটে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মোহাম্মদ নাসিম পূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনিও রাজউকে নিয়মিত গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। এমন গণশুনানির ফল বহুমুখী। রাজউক কর্তৃপক্ষকে সরাসরি জবাবদিহি করতে হয় সাধারণ মানুষের কাছে। এতে মানুষের সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও হতে হয় সতর্ক ও গণমুখী। ১২ বছর কি কারণে একটি ফাইল আটকে রয়েছে এর জবাব দিতে হয় রাজউক চেয়ারম্যানকে। মানুষ কেন রাজউকে এসে হয়রানির শিকার হন কিংবা টাকা ছাড়া কোনো কাজ কেন হয় না এর জবাবও তাকেই দিতে হয়।

এ ধরনের গণশুনানি অব্যাহত থাকলে রাজউকে মানুষের হয়রানি কমতে বাধ্য। মোহাম্মদ নাসিম সেই সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে রাজউকের তৈরি শহরগুলোও পরিদর্শন করতেন। উত্তরা গিয়ে তিনি দেখেছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের টাকায় কয়েক একর জায়গার ওপর নির্মিত একটি হাসপাতাল অব্যবহৃত পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতাল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। প্রস্তাবিত লেকের ওপর কিভাবে একটি বিশ তলা ভবন নির্মিত হয়ে যায় এর জবাবও সাংবাদিকদের সামনে দিতে হয়েছিল রাজউক চেয়ারম্যানকে।

তাৎক্ষণিভাবে মন্ত্রী ভবনটি ভাঙ্গারও নির্দেশ দেন। উত্তরা প্রকল্পে অনেক প্লট খালি পড়ে আছে কেন জানতে চেয়ে আবিষ্কার করেন প্রায় সাড়ে তিনশ’ বরাদ্দ না হওয়া প্লটের। মন্ত্রীর এই প্লট খুঁজে পাওয়ার ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময় জন্ম নেয় উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে এসব ঘটনা শুধু পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ করিনি, সাক্ষী হয়েও আছি।
ইদানীং আর তেমন গণশুনানি চোখে পড়ে না। এখন গণশুনানি বলতে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির একটি আনুষ্ঠানিকতাই দেখা যায়, যেখানে মানুষের মতামতের কোনো মূল্য আছে বলে মনে হয় না। জ¦ালানি বিভাগ সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু আনুষ্ঠানিকতার জন্যই গণশুনানির আয়োজন করেন। সড়ক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ পরির্দশন করলেও তা নিয়মিত নয়। এর মধ্যেই জনকণ্ঠে একটি গণশুনানির সংবাদ ছাপা হয়েছে। সংবাদটি দেখে শুধু ভালোই লাগেনি, এ নিয়ে কিছু লেখার তাগিদ অনুভব করলাম।

সংবাদ অনুযায়ী জহুরুল ইসলাম দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন ২০২১ সালের ২২ জুন। এরপর থেকেই তিনি সপ্তাহের প্রতি বুধবার জেলার মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। শত শত মানুষ এই দিন লাইন দিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। গত প্রায় দেড় বছরে তিনি অনেক মানুষের সমস্যা সমাধান করেছেন। নানাভাবে সহায়তা দিয়ে অনেককে করে তুলেছেন স্বাবলম্বী। এমন এক গল্পের পাত্রী এক সময়ের পোশাক শ্রমিক শাহানা খাতুন।

করোনা মহামারির সময় তিনি চাকরিচ্যুত হয়ে ঢাকা থেকে ফিরে গিয়েছিলেন পঞ্চগড়ে। সহায় সম্বল হারিয়ে এক জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা। একটি হাত অকেজো হয়ে যায়। দুই সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। প্রতিবেশীর পরামর্শে জেলা প্রশাসকের গণশুনানিতে গিয়ে খুঁজে পান জীবনের অর্থ। জেলা প্রশাসক তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে একটি বৈদ্যুতিক সেলাই মেশিনের ব্যবস্থা করেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে আবাসনের আশ্বাস দেন। মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার জন্য একটি বাইসাইকেল প্রদানেরও আশ^াস দেন তিনি। পঙ্গু শাহানা এখন নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন।

শুধু শাহানা নয়, জীবনের এমন গল্প নিয়ে প্রতি বুধবার জেলা প্রশাসকের অফিসে যাচ্ছেন মেধাবী শিক্ষার্থী, দুস্থ, অসহায়, দরিদ্র রোগীসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত মানুষ। কারও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়, কারও চিকিৎসার। আর্থিক কারণে অনিশ্চিত হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সুযোগ হচ্ছে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার। গণশুনানির সারি দীর্ঘ হতে থাকে। শুনানিতে আসা মানুষের জন্য থাকে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন, শিশুদের জন্য চকলেট।

সবার কথা গুরুত্বের সঙ্গে শোনেন তিনি। গত দেড় বছরে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া দরিদ্র ও মেধাবী ৮ জন শিক্ষার্থী মেডিক্যাল কলেজে এবং ২০ জন পাবলিক বিশ^ বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ২২১ জনকে শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করেছেন। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রোকনুজ্জামানের জন্য ব্যবস্থা করেছেন একটি ল্যাপটপ। সাহিত্য চর্চার জন্য অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলামকেও প্রিন্টারসহ একটি ল্যাপটপের ব্যবস্থা করেছেন।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম একজন সরকারী কর্মচারী। চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী গণশুনানি করতে তিনি বাধ্য নন। কঠিন জীবন সংগ্রামে বিজয়ী জহুরুল সমাজের সংগ্রামী মানুষগুলোর দুঃখ-কষ্ট মন দিয়ে অনুভব করেন।  জেলা প্রশাসক হিসেবে এটিকে তিনি দায়িত্বই মনে করেন। এ কারণেই তিনি নিঃশর্তভাবে দাঁড়িয়েছেন মানুষের পাশে। পঞ্চগড় জেলাকে শতভাগ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত, শতভাগ স্কাউট, শতভাগ অনলাইনে ভূমিসেবা নিশ্চিত, চা বাগানসহ ৭৪ একর সরকারি জমি দখলমুক্ত, অনেক সরকারি স্থাপনা দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো,  তেঁতুলিয়াকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলাসহ আরও অনেক সাফল্য রয়েছে তার ঝুলিতে।
বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় একজন করে জেলা প্রশাসক রয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রয়েছেন আরও ৪৯৫ জন। সবাই যদি জহুরুল ইসলামের মতো এটিকে দায়িত্ব মনে করতেন, তবে সারাদেশের অনেক সমস্যাই সমাধান হয়ে যেত। লাখ লাখ মানুষ উপকৃত হতো। পঞ্চগড়ের মতো অসংখ্য দারিদ্র্য শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেত, নিশ্চিত হতো স্বাস্থ্যসেবা। শাহানার মতো অনেক অসহায় নারী-পুরুষ হয়ে উঠতে পারতেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।

সরকারি আইনে হয়ত জেলা প্রশাসক কিংবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই কাজে বাধ্য করা সম্ভব নয়। দায়িত্ববোধ কিংবা মনের তাগিদে তারা মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। একজন জেলা প্রশাসক জেলার সকল মানুষের অভিভাবক। তেমনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলার। সারাদিনের ব্যস্ত সময় থেকে তারা যদি সপ্তাহ বা মাসে একদিনও সময় বের করে সাধারণ মানুষের কথা শুনতে পারতেন, তবে সত্যিকার অর্থেই তারা হয়ে উঠতে পারতেন মানুষের অভিভাবক। সরকারি চাকরির বিধিমালা পরিবর্তন করে সরকারও পারে এসব পদে আসীনদের সপ্তাহে একদিন গণমানুষের কাছাকাছি থাকার ব্যবস্থা করতে।
শুধু সরকারি কর্মকর্তা কেন, জনপ্রতিনিধিরাও নিয়ম করে এভাবে সাধারণ মনুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এটি নৈতিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। একজন সংসদ সদস্য যদি সপ্তাহে একদিন এলাকার মানুষের কথা শোনেন, তাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন, তবে সত্যিকার অর্থে তাদের দায়িত্ব পালন করা হবে। একজন জেলা প্রশাসক যদি এত মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারেন, তবে একজন সংসদ সদস্য কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে এটি আরও সহজ। আমাদের দেশে প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে গড়ে ওঠে একটি টাউট-দালাল চক্র।

তোষামোদি করে এরা জনপ্রতিনিধির প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন। এই দৃশ্য দেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই দেখা যায়। এই চক্র সাধারণ মনুষকে জনপ্রতিনিধির কাছে ঘেঁষতে দেন না। তাদেরকে করে তোলেন গণবিচ্ছিন্ন। এই সুযোগে তারা জনপ্রতিনিধির নাম করে চাঁদাবাজি, কমিশন বা ঘুষের বাণিজ্য গড়ে তোলেন। হয়ত অনেক জনপ্রতিনিধি জানতেই পারেন না এলাকার মানুষের কাছে তার কি ধরনের নেতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে। ভোটের রাজনীতিতে এর বিরূপ প্রতিফলন দেখা যায়।

তখন আর এই চক্রকে খুঁজে পাওয়া যায় না। জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি নিয়মিত সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হলে এই দালাল-টাউট চক্রের দৌরাত্ম্য কমতে বাধ্য। জনপ্রতিনিধিরা সত্যিকার অর্থেই হয়ে উঠতে পারেন গণমুখী এবং জনপ্রিয়। সাধারণ মনুষও মুক্ত হতে পারেন প্রতারক চক্রের হাত থেকে।
সরকারের বিভিন্ন জনসম্পৃক্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগেও এমন শুনানির আয়োজন হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কিংবা সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধান ব্যক্তি নিয়ম করে সপ্তাহে একদিন সাধারণ মনুষের মুখোমুখি হতে পারেন। এমন হলে মন্ত্রী কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শুধু ব্যক্তি, সমস্যাই নয়, তার অধীনে থাকা বিভাগের নানা জটিলতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। সমাধান করতে পারবেন বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা কোনো সমস্যার।

নিজ দপ্তরের স্বচ্ছ চিত্র পাওয়া গেলে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বৃদ্ধি করতে পারবেন কাজের গতি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে একজন নাগরিককে কি ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন করতে কি ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়, এগুলো যদি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বা সচিব কিংবা বিভাগীয় প্রধান নিজে নাগরিকদের কাছ থেকে শুনতে পারেন, তবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। একইভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পূর্ত, জ¦ালানি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, রাজউক, সিটি করপোরেশন ইত্যাদি নাগরিকদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এমন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শুনানির ব্যবস্থা করা যায়।

নির্বাচিত মেয়র যদি রাজধানীর গুলিস্তান, নিউ মার্কেটসহ বাস টার্মিনালগুলো আকস্মিক পরিদর্শন করত, তবে এসব এলাকার পরিবহন কিংবা হকারদের দৌরাত্ম্য দূর হতো। রেলমন্ত্রী যদি মাঝেমধ্যেই কমলাপুর যেতেন, তবে রেলযাত্রীদের রেলভ্রমণ আরও স্বাচ্ছন্দ্য হতো। এমন হলে আমূল পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে রাষ্ট্রীয় সেবার মান। পাল্টে যেতে পারে সমাজের চিত্র। দ্রুত বাস্তবায়ন হতে পারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত বাংলাদেশ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার স্বপ্ন।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×