ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ সন্ধানীরা

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১৩ আগস্ট ২০২২

অর্থনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ সন্ধানীরা

অর্থনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ সন্ধানীরা

খোলাবাজারে ডলারের মূল্য অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে কিছুকাল আগেদ্রব্যমূল্যের বাজারও অস্থিরএর মধ্যে তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত এই অস্থিরতাকে আরও চাঙ্গা করে দিয়েছেসরকারের দিক থেকে তেলের মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছেডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছেখোলাবাজারে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্য এবং নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দেশের স্বনামধন্য অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা নানা মত দিচ্ছেন

একাডেমিক আলোচনাও হচ্ছে বিস্তরপ্রচার মাধ্যমে টক-শোগুলোতে বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করছেনসমাধানের পথ খুব একটা বের হয়ে আসছে নাআমি বিষয়টিকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে দেখতে চাইএটি কোন অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ কিংবা একাডেমিক আলোচনা নয়দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে কিছু প্রশ্নের জবাব খোঁজা মাত্র

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত সপ্তাহের শেষ দিনে (১১ আগস্ট ২২) ডলারের ব্যাংক মূল্য এবং খোলাবাজারের মূল্যের পার্থক্য ছিল ২৫ টাকাঅনেকে চাইলেও ডলার কিনতে পারছেন নাজরুরী প্রয়োজনে ডলার খুঁজতে তাদের দৌড়াতে হচ্ছে মানি এক্সচেঞ্জগুলোতেবাধ্য হয়ে দালালের কাছ থেকে ডলার কিনছেন আকাশচুম্বী দামেসরকারের তহবিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে’Ñ এমন একটি সংবাদের প্রেক্ষিতে খোলাবাজারে ডলারের মূল্য বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়েপ্রচার মাধ্যমে এমন কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে তাতে মনে হয়েছে ডলার সঙ্কটেই রাষ্ট্র অচল হয়ে পড়বে

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য প্রকৃত অবস্থা তুলে ধারার চেষ্টা করা হয়েছেফল খুব একটা হয়নিপরিস্থিতি ধীরে ধীরে অসহনীয় হয়ে উঠছেপ্রশ্ন হচ্ছে, বৈধ কাজের জন্য মানুষকে কেন খোলাবাজারের অবৈধ পথে ডলার কিনতে হচ্ছেঅনুমোদিত ব্যাংক কিংবা মানিচেঞ্জার থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত মূল্যে কেন পাওয়া যাবে না চাহিদামাফিক ডলার

ব্যাংক এবং খোলাবাজারে ডলারের মূল্যের পার্থক ছিল সব সময়পার্থক্যের পরিমাণ ৩-৪ টাকার বেশি নয়এই পার্থক্যের কারণেই অতীতে রেমিটেন্স প্রবাহ ব্যাংকিং খাতের চেয়ে অবৈধ পথে বেশি ছিলবৈধ পথে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সরকার দুই শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করলে বদলে যায় চিত্রপটগত বাজেটে প্রণোদনার পরিমাণ করা হয়েছে আড়াই শতাংশসরকারের কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে থাকে দ্রুতঅন্যদিকে রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে অবৈধ হুন্ডির  লেনদেন কমে এসেছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়এখন আবার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা

এজন্য যারা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেইযেভাবে তারা দুই টাকা বেশি পাবেন, সেদিকেই তারা ঝুঁকতে থাকবেনএজন্যই সরকার রোমিটেন্সের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেছিলএখন আবারও প্রণোদনা বাড়ানোর প্রস্তাব করছেন কেউ কেউপ্রশ্ন হচ্ছে, অবৈধ কর্মকা- ঠেকাতে আইনী ব্যবস্থার পরিবর্তে সরকারকে কেন প্রতিযোগিতায় নামতে হবেরেমিটেন্সের অবৈধ লেনদেন মোকাবেলার কৌশল সরকারকেই বের করতে হবে

বাংলাদেশের অর্থনীতির আগ্রযাত্রা যে কয়টি খাতের ওপর নির্ভরশীল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে রেমিটেন্স।  প্রবাসী প্রেরিত অর্থ বা প্রবাসীদের পরিশ্রমের আয় দেশে পাঠানোকেই রেমিটেন্স বলা হয়সরকারী হিসেবে বিশ্বের ১৬৮টি দেশে বাংলাদেশী কর্মী আছেন সোয়া এক কোটিকরোনাভাইরাস সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীর সময় এই  রেমিটেন্স প্রবাহ স্বাভাবিক থাকায় আমাদের পরিস্থিতি  মোকাবেলা সহজ হয়েছেবর্তমান বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক সঙ্কটেও প্রবাসীদের রেমিটেন্সই আমাদের বড় ভরসার স্থান

সম্প্রতি বৈধ ও অবৈধ পথে ডলারের মূল্য পার্থক্য বাড়তে থাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরাএ কারণে বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রবাহ কমতে শুরু করেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক খাতে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা

১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশ অবস্থানকারী বাংলাদেশীদের প্রেরিত অর্থ বৈধ মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেনতখনই চালু করা হয়েছিল মজুুুরি উপার্জনকারীর প্রকল্পবিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীদের মধ্যে দ্রুতই প্রকল্পটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেহিসাব অনুযায়ী ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবাসীরা পাঠিয়েছিল ১১.৮ মিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স১৯৮০-৮১ অর্থবছরে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং ১৯৯০-৯১ অর্থবছরে ৭৫০ মিলিয়ন ডলারপর্যায়ক্রমে রেমিটেন্সের পরিমাণ বেড়েছে অনেকবর্তমানে বছরে রেমিটেন্সের পরিমাণ ১৮ বিলিয়ন ডলারের  বেশি যা দেশের মোট রফতানি আয়ের অর্ধেক

 খোলাবাজারের ডলারের উর্ধমুখী প্রবণতায় সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলএর মধ্যে ছিল অবৈধ মানিচেঞ্জারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণঅনেক মানিচেঞ্জার বন্ধও করে দেয়া হয়েছিলএর পরও অবস্থার কোন উন্নতি হয়নিআন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিতে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী কৃত্রিম ডলার সঙ্কট তৈরি করছে বলে সরকার মনে করছেএর সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সংযোগের কথাও বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকেবাজার থেকে ডলার কিনে নিয়ে মার্কেটে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করছে একটি চক্রসঙ্কট সৃষ্টি করে তারা খোলাবাজারে বাড়িয়ে দিচ্ছে ডলারের মূল্যএর সঙ্গে অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ীরাও যুক্ত হয়েছেখোলাবাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধির মানেই হচ্ছে হুন্ডির ব্যবসা চাঙ্গা

হুন্ডির মাধ্যমে দেশের যে কোন লোক বিদেশে অর্থ  লেনদেন করতে পারেবিদেশ থেকেও টাকা পাঠাতে কারও সমস্যা হয় নাবিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেটএ নিয়ে খুব একটা রাখঢাক রয়েছে বলে মনে হয় নাকোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কাজগুলো করছে তা একটু সচেতন মানুষই খবর রাখেন কিংবা চেষ্টা করলে জানতে পারেনবিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেও কথা বলেছেন

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি অবৈধ পথে রেমিটেন্স না পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেনদেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার প্রশ্ন, একজন সাধারণ মানুষ যদি তাদের প্রয়োজনে হুন্ডি ব্যবসায়ীকে খুঁজে নিতে পারেন, তবে সরকারের এত সংস্থা কি তাদের খুঁজে বের করতে পারে না? বিষয়টি আমার মতো অনেকেরই বোধগম্য নয়

নিকট অতীতে বিদেশ যেতে হলে সবাইকে পাসপোর্টে ডলার এনডোর্স করতে হতোআরও আগে ডলার এনডোর্স করার সময় ব্যাংক মূল্যেই পাওয়া যেত ডলারকেউ কেউ নগদ ডলার না নিয়ে ট্র্যাভেলার্স চেক (টিসি) নিতে পারতেনপরে ডলার এনডোর্সমেন্ট পদ্ধতিটি হয়ে উঠেছিল নিয়ম রক্ষার বিষয়ব্যাংক কিংবা মানিচেঞ্জারগুলো নির্দিষ্ট ফি দিয়ে পাসপোর্টে ডলার এনডোর্স করে দিলেও ডলার দিতে অস্বীকৃতি জানাতব্যাংক থেকে জানানো হতো, তাদের কাছে ডলার নেই, তবে এনডোর্স করে দিতে পারবেনমানিচেঞ্জারগুলো ছিল আরও খোলামেলাতারা বলতেন, এনডোর্স করলেও ডলার কিনতে হবে খোলা বাজারের দামেস্বাভাবিকভাবেই বিদেশগামীদের ডলার কিনতে হতো  খোলাবাজার থেকে

বিষয়টিও ছিল ওপেন সিক্রেটসবাই জানতেন, কেউ কিছু বলতেন নাএই অবৈধ কাজটিই এক সময় স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছিলবৈশি^ক খোলাবাজার আর্থনীতির অজুহাতে একটি অবৈধ কাজ বৈধ হয়ে গিয়েছিল কোন আইন ছাড়াস্বাভাবিকভাবেই খোলাবাজারে ডলার কেনা-বেচা অপরিহার্য হয়ে ওঠেগড়ে ওঠে অসংখ্য মানিচেঞ্জারএভাবে যখন কোন অবৈধ কাজ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়, তখন সরকারের আর কিছুই করার থাকে নাএমন প্রক্রিয়ায় সঙ্কট তৈরি হতে পারে যখন তখন, যা এখন হচ্ছেবর্তমানে অবশ্য ডলার এনডোর্সমেন্টের বিষয়টি জরুরী নয়ক্রেডিট কার্ড কিংবা অর্থ লেনদেনের অনেক আন্তর্জাতিক মাধ্যম গড়ে ওঠায়  ক্ষেত্রবিশেষ ছাড়া পাসপোর্টে আর ডলার এনডোর্স করার প্রয়োজন হয় নাতবে এনডোর্সমেন্টের খারাপ প্রভাবটি রয়েই গেছে

অতিসম্প্রতি সরকার জ¦ালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে প্রায় দেড়গুণতেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দামঅস্বীকার করার উপায় নেই যে, ¦ালানি তেলের সঙ্গে সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির যোগসূত্র রয়েছেতেলের দাম বাড়লে বৃদ্ধি পাবে উপাদন ও পরিবহন খরচওএ কারণে পণ্যমূল্য বাড়তে বাধ্যকিন্তু যত তাড়াতাড়ি, যতটা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে তা কি যৌক্তিকমনে হয়েছে, ব্যবসায়ীরা যেন প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিল

তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তারাও বর্ধিত মূল্য নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ক্রেতাদের ওপরমূল্যবৃদ্ধির এই প্রতিযোগিতার নির্মম শিকার হচ্ছে দেশের চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত সীমিত আয়ের মানুষরাতারাতি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেলেও তাদের আয় বাড়েনিনির্দিষ্ট আয়ে তাদের কিনতে হচ্ছে বর্ধিত মূল্যের পণ্যযারা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করেছেন তাদের কোন সঙ্কট নেইপাদন কিংবা পরিবহনের বাড়তি খরচ তারা তুলে নিচ্ছেন ক্রেতার পকেট থেকে

¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছেপ্রশ্ন উঠেছে এর যৌক্তিকতা নিয়েসরকারের পক্ষ থেকে মূল্যবৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরার চেষ্টা করছেঅন্যদিকে প্রচার মাধ্যমে নানা পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তেলের মূল্য এতটা বৃদ্ধি কতখানি অযৌক্তিক হয়েছেপ্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাস পাওয়ার সময় বাংলাদেশে বাড়ানো হয়েছে

জ্বালানি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের (বিপিসি) লাভ-ক্ষতির হিসাব তুলে ধরা হচ্ছে প্রচার মাধ্যমেকোন কোন রাজনৈতিক দল বলার চেষ্টা করছে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য নয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নেয়ার শর্তের অংশ হিসেবে সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেএসব মত নিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছে মানুষআসলে কোন্টি সঠিকএমন প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত অবস্থা জনগণের সামনে তুলে ধারার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন

তেলের দাম এক সঙ্গে এতটা বৃদ্ধির যৌক্তিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবেএর মধ্যেও আরও একটি বিষয় সবাইকে মনে রাখতে হবে, একটি মহল সব সময় পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে নিজেদের আখের গুছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে ওঠেসাধারণ মানুষের দুর্দশা এদের কাছে কোন বিষয় নয়, বরং সুবর্ণ সুযোগমানুষের দুঃখ-কষ্ট কাজে লাগিয়ে এরা পকেটে ভরতে চায় বাড়তি টাকাধানের বাম্পার ফলনেও এরা চালের দাম বাড়ায়সিন্ডিকেট তৈরি করে এরা কোরবানি ঈদের সময় চামড়ার বাজার থেকে তুলে নেয় শত শত কোটি টাকা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে সংশ্লিষ্ট নয় এমন পণ্যের মূল্য বাড়াতে এরা দ্বিধা করে নাডলার সঙ্কট কিংবা তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা তো এরা কাজে লাগাবেইসাম্প্রতিক তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে বাজারে চাউলের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকাঅথচ হিসাব করে দেখা গেছে তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে চাউলের পরিবহন ব্যয় বেড়েছে কেজিপ্রতি মাত্র ৭/৮ পয়সাপ্রতিটি পণ্যেই এই অতিরিক্ত বাড়তি হারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছেবাজারেই ক্রেতারা প্রশ্ন করছেন, এসব দেখার কি কেউ নেই?

প্রশ্ন উঠতে পারে, সরকার সেই সুযোগ দিচ্ছে কেন? এর জবাবও সরকারই দেবেসঠিক জবাব দিতে না পারলে এর দায়ও তাদেরই বহন করতে হবেআমাদের বক্তব্য হচ্ছে, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল কিংবা অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন যা-ই হোক, সুযোগ কাজে লাগিয়ে মানুষকে কষ্টে ফেলার অধিকার কারও নেইযারা এই কাজটি নিয়মিত করছেন তারা খুব পরিচিতরাজনৈতিকভাবে কিংবা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে এরা সমাজে দাপটের সঙ্গেই বসবাস করছেন

এদের চিহ্নিত করতে হবেমুখোশ উম্মোচন করতে হবে ভদ্র পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই কুসিত মানুষগুলোরসম্ভব হলে সামাজিকভাবে এদের বয়কট করতে হবেগণজাগরণ তৈরি করতে পারলেই এই অশুভ শক্তির হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করা সম্ভবএকই সঙ্গে সরকার তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে চুপচাপ বসে থাকলে চলবে নাসুযোগ সন্ধানীদের খুঁজে বের করে কঠোর আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি

 

লেখক : ডেপুটি এডিটর, জনকণ্ঠ

×