ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোরবানির পশুর জোগান ও চামড়ার দাম

ড. জাহাঙ্গীর আলম

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ৫ জুলাই ২০২২

কোরবানির পশুর জোগান ও চামড়ার দাম

কোরবানির পশুর জোগান

গৃহপালিত পশুর দাম বাড়ছেবাড়ছে মাংসের দাম২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রতিকেজি মাংসের দাম ছিল ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকাওই বছরের আগস্ট মাসে কোরবানির আগে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৪০০ টাকায়সেই সঙ্গে বেড়ে যায়  ছাগল ও ভেড়ার প্রতিকেজি মাংসের দামভারত থেকে গরু আমদানি হ্রাস এর প্রধান কারণগত বছর প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭০০ টাকাগত ১ বছরে মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে ১৬ শতাংশপৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে গরুর মাংসের দাম বেশিতাতে গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ জেগেছে দেশের কৃষকদের

তাছাড়াও বেকার থাকা অনেক শিক্ষিত যুবক, আধুনিক কৃষক ও বিদেশ ফেরত বেকার যুবকরা গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্টকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে গরুর খামার গড়ে তুলছেনঅনেকে ঋণ নিয়েও বিনিয়োগ করছেন এ খাতেতাতে বেশ আয় হচ্ছে তাদেরবেকার সমস্যা হ্রাস পাচ্ছেদারিদ্র্য বিমোচনেও তা হচ্ছে সহায়কএখন থেকে ১০ বছর আগেও দেশে মাংসের ঘাটতি ছিল প্রচুরএখন সে ঘাটতি আর প্রায় নেই২০১৪ সাল পর্যন্ত কোরবানির সময় বাংলাদেশে গরুর আমদানি হতো ১০ থেকে ১২ লাখসারা বছর তার পরিমাণ ছিল ২০ থেকে ২৫ লাখগত তিন বছর ধরে তা এক লাখও হয় নাগবাদি পশুর মূল্য এবং মাংসের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে খামারিদের আগ্রহ বেড়েছে

এখন থেকে ৫ বছর আগে ২০১৭ সালে মোটাতাজাকরণকৃত গরুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৩ লাখএখন তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৪১ লাখে দাঁড়িয়েছেদেশের মাংসের চাহিদা পূরণে তা যথেষ্টকিন্তু তারপরও মাংসের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছেএবার কোরবানির সময় গরুর দাম ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেখামারিরা বলছেন, গরুর খাদ্য খরচ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশগরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য খরচই প্রায় ৬৬ শতাংশবাকি ৩৪ শতাংশ খরচ হয় শ্রমিক, ওষুধ ও অন্যান্য খাতে

ফলে পশুর দাম বৃদ্ধি ছাড়া খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেনতাছাড়াও সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি, বন্যাজনিত ক্ষতি এবং করোনার উর্ধমুখী সংক্রমণের কারণে পশুর মূল্য আরও বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিকতবে তাতে চাহিদা হ্রাস পেতে পারে কোরবানির পশুরফলে অবিক্রীতই থেকে যেতে পারে অনেক পশুতাতে আয় কমে যেতে পারে খামারিদেরএ কারণে খামারিদের উচিত হবে অল্প লাভে গরু বিক্রি করে দেয়াপ্রতি ইউনিট উপাদন খরচ কমিয়ে লাভ নিশ্চিত করাগরু মোটাতাজাকরণে দক্ষতা অর্জন করাতাতে ভোক্তারা অপেক্ষাকৃত কম দামে মাংস কিনতে পারবেন।  মাংসের মোট বিক্রি বৃদ্ধি পাবেব্যবসাও হবে চাঙ্গা

এবার কোরবানির জন্য দেশে প্রস্তুত রয়েছে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি পশুএর মধ্যে রয়েছে ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৯টি গরু, ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৪টি মহিষ, ৬৫ লাখ ৭৩ হাজার ৯১৫টি ছাগল, ৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৩২টি ভেড়া এবং ১ হাজার ৪০৯টি দুম্বা, উট ও অন্যান্য প্রাণীগত বছর (২০২১ সালে) কোরবানি হয়েছিল প্রায় ৯০ লাখ ৯৩ হাজার পশু

এর মধ্যে ছিল গরু-মহিষ ৪০ লাখ ৫৩ হাজার, ছাগল-ভেড়া ৫০ লাখ ৩৮ হাজার এবং ২ হাজার অন্যান্য প্রাণীএর আগের বছর অর্থা ২০২০ সালে কোরবানি হয়েছিল মোট ৯৪ লাখ ৫০ হাজার পশুতার মধ্যে ছিল ৫০ লাখ ৫২ হাজার গরু-মহিষ, ৪৩ লাখ ৯৭ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং ১ হাজার অন্যান্য প্রাণীএর আগের বছর ২০১৯  সালে কোরবানি হয়েছিল ১ কোটি ৬ লাখ ১৪ হাজার পশুঅর্থা গত দুই বছর কোরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছেবড় পশু গরুর সংখ্যা কমেছেবেড়েছে ছোট পশু ছাগল-ভেড়ার সংখ্যাএর প্রধান কারণ করোনা মহামারীর অভিঘাতফলে অনেকের আয় কমে গিয়েছিলচাকরিচ্যুত হয়েছিলেন অনেকেতাদের হাতে নগদ টাকার পরিমাণও কমে গিয়েছিলফলে কোরবানির পশুর চাহিদা হ্রাস পেয়েছিলগরুর বিক্রি কমে গিয়ে বেড়ে গিয়েছিল ছাগল ও ভেড়ার বিক্রি

এবার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছেমানুষের আয় বেড়েছেপদ্মা সেতুর কারণে মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছেঈদের সময় নাড়ির টানে মানুষ ফিরে যাবে গ্রামেকোরবানি করবে পশুফলে কোরবানির পশুর চাহিদা বৃদ্ধি পাবেগত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ১০ শতাংশ চাহিদা বৃদ্ধি ধরে নিয়ে আসন্ন কোরবানিতে পশুর চাহিদা হতে পারে কমবেশি এক কোটি২০১৮ এবং ২০১৯ সালে গড়ে ওই চাহিদা ছিল প্রায় ১ কোটি ৬ লাখসেই পুরনো লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে হয়তো আরও ১/২ বছর সময় লাগবে

তবে এ বছরের সম্ভাব্য চাহিদা থেকে মোট পশুর জোগান প্রায় ২১ লাখ বেশি আছে বলে ধরে নেয়া যায়এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত মোট গরুর মধ্যে ৯৩ শতাংশই ব্যবসায়িক খামারে গড়ে উঠেছেবাকি ৭ শতাংশ কৃষক পর্যায়ে তৈরিছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রে খামারে হৃষ্টপুষ্টকরণকৃত পশুর সংখ্যা ৫৫ শতাংশবাকি ৪৫ শতাংশ পারিবারিক পর্যায়ে লালিত-পালিত

এখন থেকে ২৫/৩০ বছর আগে গ্রামের প্রতিটি পরিবারে গরু পালন করা হতোতখন চাষাবাদ হতো লাঙ্গল দিয়েএখন এসেছে কলের লাঙ্গলগরু দিয়ে হালচাষ ও শস্য মাড়াই প্রায় উঠেই গেছে বলা চলেআগে যেখানে শতকরা ৯৫ ভাগ হালচাষ হতো লাঙ্গল দিয়ে, এখন সে পরিমাণ হালচাষ হয় ট্রাক্টর ও টিলার দিয়েবাকি শতকরা মাত্র ৫ ভাগ চাষাবাদ হয় পশু ও মানবশক্তির মাধ্যমেহালচাষের গরুর ব্যবহার হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে গ্রামের কৃষকদের অনেকেই গরু পালন প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন

যারা এখনও গরু পালেন তারা তা করেন মূলত দুধ এবং মাংসের জন্যদুগ্ধ খামার গড়ার জন্য বর্তমানে পশু ক্রয়ে স্বল্পসুদে প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ দেয়া হচ্ছেমাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাচ্ছেন দুগ্ধ খামারের মালিকরাগরু মোটাতাজাকরণের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণ পাওয়া যাচ্ছেফলে সারা বছর ধরেই চলছে গরু মোটাতাজাকরণের কাজবিশেষ করে কোরবানির ঈদের আগে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণের আগ্রহ দেখা যায় বেশিতখন গরুর চাহিদা থাকে বেশিলাভও বেশিখামারে মোটাতাজার জন্য বাছাইকৃত ও ক্রয়কৃত গরুর অধিকাংশের বয়স ২ থেকে ৪ বছরএগুলো মূলত উন্নত জাতের ষাঁড়

এসব প্রতিপালন করা যায় নিবিড় পরিচর্যায়প্রথমে এগুলোকে কৃমিমুক্ত করা হয়তাতে খাদ্যনালীতে ক্ষতিকর পরজীবীর বসবাস হ্রাস পায়এরপর নিয়মিত খাওয়ানো হয় ইউরিয়া-চিটাগুড় সংমিশ্রণে খড়, কিছু দানাদার মিশ্রণ ও কাঁচা ঘাসএভাবে গরুগুলোকে পরিচর্যা করা হয় ৩ থেকে ৬ মাসমাঠপর্যায়ের সমীক্ষা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে প্রতিদিন একটি উন্নত জাতের গরুর ওজন ৭০০ থেকে ১০০০ গ্রাম এবং দেশী গরুর ওজন ১০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়অনেকের ধারণা, মোটাতাজাকরণে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড, এ্যান্টিবায়োটিক ও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়কিন্তু এখন তা আর প্রায় চোখে পড়ে না

গো-খাদ্যের জন্য এসব ক্ষতিকর উপকরণ মেশানো প্রতিরোধে এখন ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম পরিবীক্ষণ করছেএসব নিষিদ্ধ উপকরণ গো-খাদ্যে মেশানোর প্রমাণ পেলে আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়ফলে গরু  মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার এখন আর তেমন দৃষ্টিগোচর হয় নাএবার কোরবানির পশুর হাটেও ভেটেরিনারি তদারকি থাকবে মেডিক্যাল টিমের

অস্বাস্থ্যকর ও রোগগ্রস্ত পশু হাটে বিক্রি করতে দেয়া হবে নাগবাদিপশু কোরবানির উপযোগী কিনা এবং তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কিনা, তাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবেএমনটিই জানিয়েছেন মস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম

গত ২ বছর ধরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচুর গবাদিপশু বিক্রি হচ্ছেকরোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন গরু-ছাগল কেনার জন্যএবারও এ পদ্ধতি অব্যাহত থাকবেতবে এ প্রক্রিয়ায় কোন কোন ক্ষেত্রে ক্রেতাগণ প্রতারিত হয়ে থাকেনগত বছর সরকারের একজন মন্ত্রীও এমন অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন

এবার তাতে কড়াকড়ি আরোপ করার কথা শোনা যাচ্ছেঅনলাইনে ক্রয়কৃত পশু পছন্দ না হলে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও এবার সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে ক্রেতারা কোনভাবেই প্রতারিত না হনকেজি দরে গরু কেনা-বেচার কথাও শোনা যাচ্ছে

কোরবানির পশুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাজাত হচ্ছে চামড়ারফতানি বাণিজ্যে চামড়ার অবস্থান কখনও দ্বিতীয়কখনও তৃতীয় স্থানেএ শিল্পের অধীনে আছে ২২০টি ট্যানারিআছে অসংখ্য জুতা, ব্যাগ, বেল্ট ও সুদর্শন সরঞ্জমাদি তৈরির কারখানাতাতে সরাসরিভাবে নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীরফতানি আয়ে এ খাতের অবদান প্রায় ৩.৩২ শতাংশবাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুসারে  ২০১২-১৩ সালে দেশের চামড়া রফতানির আয় ছিল ৬৯২.০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার২০২০-২১ অর্থবছরে তা ১,২৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বৃদ্ধি পায়এ সময় চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা রফতানির আয় বেড়েছেচামড়া শিল্পে এসেছে বৈচিত্র্য ও বহুমাত্রিকতা

বিদেশে সম্প্রসারিত হয়েছে দেশের চামড়ার বাজারতাতে লাভবান হয়েছেন চামড়া শিল্পের মালিকগণ ও রফতানির সঙ্গ্ েজড়িত ব্যবসায়ীরাকিন্তু কাঁচা চামড়ার উপাদনকারীগণ এবং এর বিক্রয়লব্ধ অর্থের অংশীদারগণ ঠকেছেনতাদের চামড়ার ইউনিট মূল্য কমেছেগত ১০ বছর ধরে ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে কাঁচা চামড়ার সংগ্রহ মূল্য২০১৩ সালে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা ও খাসির চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।  ২০১৫ সালে এর ইউনিট মূল্য হ্রাস পেয়ে গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুট মূল্য ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং খাসির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকায় এসে দাঁড়ায়২০২০ সালে তা আরও হ্রাস পেয়ে গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৩ থেকে ১৫ টাকায় নেমে আসে

গত বছর অর্থা ২০২১ সালে গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৫ টাকা ও খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২ টাকা বাড়িয়ে গরুর চামড়ার প্রতি বর্গফুট মূল্য ৪০-৪৫ টাকা এবং খাসির চামড়ার মূল্য ১৫-১৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়নির্ধারিত দামে প্রতিটি বড় গরুর চামড়ার মূল্য দাঁড়ায় ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা এবং ছোট গরুর চামড়ার মূল্য দাঁড়ায় ১২০০  থেকে ১৫০০ টাকাকিন্তু গত বছর কোরবানির দিনে ও তারপরে তৃণমূল পর্যায়ের চামড়া উপাদনকারীগণ এক-তৃতীয়াংশ দামও পাননিবর্গফুটের পরিমাপে চামড়া বিক্রি হয়নি কোথাওপ্রতি পিস হিসাবে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়

খাসির চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়অনেকে চামড়ার উপযুক্ত দাম না পেয়ে পুঁতে ফেলেছেন মাটির নিচেকিংবা ছুড়ে  ফেলেছেন নদীতে বা খালেতাতে প্রায় এক-চতুর্থাংশ চামড়া বিনষ্ট হয়েছেফলে হতাশ হয়েছে চামড়া উপাদনকারী কৃষকক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চামড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থের ভাগীদার হতদরিদ্র মানুষ, এতিম ও মিসকিনকাঁচা চামড়ার সরবরাহ বৃদ্ধি পায় কোরবানির ঈদের সময়তখন এর দাম কমে যায়চামড়া পচনশীল বিধায় তা গ্রাম-গ্রামান্তরে ধরে রাখা যায় নাএ সময় খুব তপর থাকেন বড় ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ট্যানারির মালিকদের সিন্ডিকেটবিভিন্ন অজুহাতে তারা চামড়ার দাম কমায়

এ সময় চামড়া উপাদনকারীদের দর কষাকষির তেমন সুযোগ থাকে নাযেটুকু মূল্য পায় তাতেই বিক্রি করে দেয় কাঁচা চামড়াএর বিক্রয়লব্ধ অর্থের মালিক দরিদ্রজন, এতিম ও মিসকিনচামড়ার দরপতনে সমূহ ক্ষতি হয় তাদেরআর্থিকভাবে বঞ্চিত হন তারাএই বঞ্চনার প্রতিকার হওয়া উচিতন্যায়সঙ্গতভাবে কাঁচা চামড়ার ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা আবশ্যকনির্ধারিত মূল্যে যাতে কৃষকদের কাছ থেকে চামড়া ক্রয় করা হয়, তাও নিশ্চিত করা উচিত

 

লেখক : কৃষি অর্থনীতিবিদ, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, গবেষণায় একুশে পদকপ্রাপ্ত

×