
"আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি। এবার সত্যিকারের ভোট হবে—নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভোট"—এই বক্তব্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান জানিয়ে দিলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রথমবারের মতো সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আয়োজনের প্রস্তুতিতে তারা কতটা আশাবাদী।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৭ বছরের শাসনহীনতা ও অনিশ্চয়তার পর এবার সেই তরুণ প্রজন্ম, যারা প্রথমবারের মতো ভোটার হয়েছে, তাদের কণ্ঠস্বর শোনা যাবে। “এই ছেলেমেয়েরা অপেক্ষা করেছে অনেক দিন। তাদের স্বপ্ন ছিল নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে কাকে ভোট দেবে। এবার সেই সুযোগ এসেছে।”
তিনি জানান, এই নির্বাচন শুধু একটি নতুন সরকার গঠনের জন্য নয়—বরং এটি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভোট। এই নতুন বাংলাদেশের তিনটি মূল স্তম্ভের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সংস্কার (reform)।
সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা আর সেই পুরোনো প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভর করতে চাই না, যেগুলো দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী। এজন্য আমরা প্রতিটি বড় সরকারি ও রাষ্ট্রীয় খাত—নির্বাচন ব্যবস্থা, সংসদ, সংবিধান, সিভিল সার্ভিস ইত্যাদি—নিয়ে আলাদা আলাদা কমিশন গঠন করেছি। তারা সুপারিশ দিয়েছে অনেক মৌলিক পরিবর্তনের। সেই সুপারিশগুলো এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।”
তবে কেবল সুপারিশ গ্রহণই যথেষ্ট নয়—সেগুলোর বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য জরুরি বলে তিনি মনে করেন। তাই তৈরি করা হয়েছে একটি সমঝোতা কমিশন, যার কাজ হলো সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কোন সুপারিশগুলোতে তারা একমত হতে পারে, তা নির্ধারণ করা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সব দলের একমত হওয়া সহজ কাজ নয়। কিন্তু আমরা চাই, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার হোক—এবং সেগুলোকে একটি আলাদা দলিলে রূপ দিয়ে সব দলের উপস্থিতিতে তা ঘোষিত হোক।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, অনেক সময় জনগণের ভোট সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়ায় ‘কে কত টাকা দিলো’। তুমি আমাকে কিছু টাকা দাও, আমি তোমাকে ভোট দিই—ভোট যেন এই অর্থেই পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা এই পথে যেতে চাই না।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ভোটের আগে যতটা সম্ভব খোলামেলা বিতর্ক ও আলোচনা চাই। যেন জনগণ জানে, কী পরিবর্তন আসছে, কেন সেটি দরকার।”
সানজানা