ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কয়েক কারণে বরখাস্ত করতে পারবে সরকার

কর্মচারীদের প্রতিবাদের মধ্যেই সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:১৭, ২৬ মে ২০২৫

কর্মচারীদের প্রতিবাদের মধ্যেই সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি

.

সচিবালয়ে কর্মচারীদের প্রতিবাদের মধ্যেই সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে রবিবার রাতে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৭ ধারার সঙ্গে ৩৭(ক) নামে একটি নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় অসদাচরণ কী হবে তা বলা হয়েছে। এই ধারায় অসদাচরণ বলতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে সেটি অসদাচরণ হবে।
একইভাবে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ব্যতীত বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত, নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন সেটিও অসদাচরণ হবে।
অথবা অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উস্কানি দেন বা প্ররোচিত করেন; অথবা যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন সেটিও অসদাচরণ হবে। আর এই অসদাচরণের জন্য কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ, চাকরি থেকে অপসারণ এবং চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে পারবে সরকার।
এই আইনে আরও বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অসদাচরণের অপরাধের জন্য অভিযোগ গঠন করা হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী অভিযুক্ত বলে অভিহিত হবেন।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সহজেই শাস্তি দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কারণ, বিভাগীয় মামলা রুজু ছাড়াই শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাকে কেন দন্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দন্ড আরোপ করা যাবে।
এভাবে দন্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে, রাষ্ট্রপতির দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।
এর আগে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রত্যাহারের দাবিতে রবিবার সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবারও বিক্ষোভ করেছেন তারা।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে আগামী দিনে সচিবালয় অচল করাসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
কর্মচারীদের অভিযোগ, সাড়ে চার দশক আগের বিশেষ বিধানের কিছু ‘নিবর্তনমূলক ধারা’ সংযোজন করে এই অধ্যাদেশ করা হয়েছে।

 

আরো পড়ুন  

×