
ছবিঃ সংগৃহীত
বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার বৈদেশিক ও দেশীয় উৎসের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণের অংশ উল্লেখযোগ্য। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি মেটাতে নির্ধারিত ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ১২ মে পর্যন্ত সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমানে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে ধীরগতি থাকার কারণে সরকারের ব্যাংক নির্ভরতা এখনই বড় কোনো সংকট তৈরি করছে না। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিবেশ দেখে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই এখন বিনিয়োগ চাহিদা কম থাকায় ব্যাংক ঋণের উপর সরকারের নির্ভরতা অর্থনীতি ও বেসরকারি খাতের জন্য অতটা চাপ সৃষ্টি করছে না।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে প্রায় ৭ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা, যেখানে সম্ভাব্য বাজেট ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা আসবে ব্যাংক ঋণ থেকে।
তবে ব্যাংকাররা সতর্ক করছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে বিনিয়োগ চাহিদা বাড়বে, তখন বেসরকারি খাত ঋণ চাইবে। সেই পর্যায়ে যদি সরকারের ঋণের চাপ ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বেশি থাকে, তাহলে লিকুইডিটি সংকট দেখা দিতে পারে। অর্থাৎ তখন ব্যাংকগুলোর তহবিলের ঘাটতি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৫৭ শতাংশ, যেখানে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৬.৩২ শতাংশ। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার অধিক পরিমাণ ঋণ নিলে তা বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া সরকারের ঋণের বিপরীতে পরিশোধযোগ্য সুদের পরিমাণও বিপুল, যা মূলত রাজস্ব আয়ের অর্থ থেকে মেটাতে হয়। ফলে বাজেটে এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্টরা।
উন্নয়ন বাজেটেও পরিবর্তন আসছে। আগের সরকারের বড় প্রকল্পগুলোর ব্যয় পুনর্মূল্যায়নের মাধ্যমে কমানো হচ্ছে, ফলে উন্নয়ন খাতে ব্যয় কমার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক ঋণের উপর চাপও কমবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া প্রকল্প গ্রহণে এখন থেকে বাস্তবসম্মত মূল্যায়নের ওপর জোর দেবে সরকার, যাতে অপ্রয়োজনীয় ঋণের চাপ না পড়ে ব্যাংকিং খাতে।
তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/MfCZdWnivkg?si=r7lgr4Y5Dnx0SuAT
মারিয়া