ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

গৃহকর্মী-যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ

প্রকাশিত: ১৯:৪৭, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

গৃহকর্মী-যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ

ছবি: সংগৃহীত।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৪৩৩টি সুপারিশ জমা দিয়েছে, যা দেশের নারী ও শ্রমজীবী জনগণের অধিকার সুরক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে।

এই সুপারিশগুলোর অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো গৃহকর্মী ও যৌনকর্মীদের শ্রমিক মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব। বর্তমানে এ দুই শ্রেণির মানুষ সমাজে অবহেলিত ও প্রান্তিক পর্যায়ে বিবেচিত হন। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, তাদের পেশাগত স্বীকৃতি প্রদান করলে তা তাদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার পথ সুগম করবে। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক শ্রমমানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

কমিশনের সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, সব ধরনের কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৬ মাস বা ২৪ সপ্তাহ পূর্ণ বেতনের প্রসূতি, প্রসব ও দত্তকজনিত ছুটি নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি, পিতাদের জন্যও পিতৃত্বকালীন ছুটি রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। কর্মজীবী নারীদের গর্ভধারণ থেকে সন্তান জন্মের পরবর্তী সময় পর্যন্ত চাকরিচ্যুতি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও সুপারিশের অংশ।

শ্রম আইনে "প্রসূতি কল্যাণ" শব্দবন্ধ পরিবর্তন করে "প্রসূতি অধিকার" হিসেবে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব দিয়ে কমিশন বলেছে, এটি নারীদের প্রজনন অধিকারকে অধিকতর স্বীকৃতি ও সম্মান দেবে। নারী শ্রমিকদের নিরাপদ অভিবাসনের বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে তারা আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও মানবাধিকার সনদের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।

কমিশনের প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, দেশের নারীদের বাস্তবিক অর্থে স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে শুধু আইনি সুরক্ষা নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাদের অংশগ্রহণ এবং প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে।

এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের শ্রমনীতি এবং নারীর ক্ষমতায়নে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নারী অধিকার, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রে দেশের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে।

নুসরাত

×