পুলিশ বিভাগে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
পুলিশ বিভাগে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যবস্থা নেবে সরকার। এর বাইরেও পুলিশ, বিজিবি ও আনসারে আসছে বড় নিয়োগ। কনস্টেবল পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে এসআই নিয়োগেরও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আনসার ও বিজিবিতেও নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করছে সরকার।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা শেষে পুলিশের সংস্কার নিয়ে করা এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এসব কথা জানান।
বেলা ১১টায় শুরু হওয়া আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভা দুপুর ১টায় শেষ হয়। পরে ব্রিফ করেন দুই উপদেষ্টা। ব্রিফিংয়ের শুরুতেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকের আলোচ্য বিষয় ও সিদ্ধান্তের তথ্য জানান। শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শ্রমিকদের অস্থিরতা নিয়ে সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ বিভাগে সংস্কারের কাজ চলছে। এজন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। তারা একটি রিপোর্ট করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা এখনো দায়িত্বে যোগ দেয়নি, তারা এখন আর পুলিশ নেই। তারা আমাদের কাছে অপরাধী।
তিনি বলেন, পুলিশে নতুন নিয়োগ শুরু করেছি। কনস্টেবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। দুই-একদিনের মধ্যে এসআই নিয়োগেরও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। আমরা আনসার ও বিজিবিতেও নতুন নিয়োগের ব্যবস্থা করছি।
পূজা নির্বিঘœ করতে সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে ্: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পূজা যেন নির্বিঘেœ হতে পারে, সেজন্য আমাদের যত পদক্ষেপ প্রয়োজন সব পদক্ষেপই নেব। আমরা আশা করি, অতীতের চেয়ে এবারই ভালো পূজা হবে। এজন্য সবার সাহায্য ও সহযোগিতা আমাদের দরকার।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব ভালো বলব না। তবে সন্তোষজনক। এটাকে কীভাবে আরও ভালো করা যায় উপদেষ্টা কমিটির সভায় আলোচনা করা হয়েছে। আমি আশা করব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন উন্নতির দিকে যাবে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করি।
বাইরে থেকেও অস্ত্র এবং ট্রেনিং পাচ্ছে : পার্বত্যাঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আপাতত ভালো। এই পরিস্থিতি যেন বিরাজ করে, সে পদক্ষেপ নিতে আলোচনা হয়েছে।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির পর ইউপিডিএফ কিন্তু হাতিয়ার সমর্পণ করেনি, জেএসএস হাতিয়ার সমর্পণ করেছে। এই ইউপিডিএফ জেএসএস এর মধ্যেও ভেতরে ভেতরে ঝামেলা আছে। অন্যান্য নাগরিক যারা আছে, তাদের মধ্যেও একটা ঝামেলা আছে। সবাই যেন মিলেমিশে থাকতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। অনেক সময় অস্ত্র এবং ট্রেনিং তারা বাইরে থেকেও পাচ্ছে, সেটা যেন না পায়। আমাদের ব্যবস্থা করতে হবে।
মাদকের গডফাদারদেরও শাস্তির আওতায় আনা হবে : মাদকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাদক আমাদের সমাজের জন্য বিরাট অভিশাপ। এটা থেকে আমরা কীভাবে মুক্তি পাব, সেজন্য আপনাদেরও সহযোগিতা দরকার। মাদক আসছে, এটা ধরা হচ্ছে। আমরা শুধু বহনকারীদের ধরলে হবে না, গডফাদারদেরও ধরতে হবে। গডফাদারদের না ধরলে মাদক বন্ধ করা মুশকিল। অনেক সময় দেখা যায়, গডফাদাররা ধরা পড়লেও তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে যায়। তারা যেন বিচারের আওতায় আসে এবং উপযুক্ত শাস্তি হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মাজার ও দরগায় কীভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা যায় সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। গার্মেন্টসে অস্থিরতা নিয়েও বিশদ আলোচনা হয়েছে। এর বাইরেও সন্ত্রাসী ও জঙ্গিরা যেন ছাড়া না পায় সে ব্যাপারেও কথা হয়েছে।