ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

আওয়ামী লীগ মাথানত করে না

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২৩ জুন ২০২৪

আওয়ামী লীগ মাথানত করে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন

প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালির প্রতিটি অর্জনই এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। জন্ম থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিটি পদক্ষেপের কারণেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সবসময় সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু বারবার এই দলকে আঘাত করা হয়েছে, নিশ্চিহ্নের চেষ্টা হয়েছে। বারবার আঘাত এলেও এই সংগঠনের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। যতবার আঘাত এসেছে ততবারই ফিনিক্স পাখির মতো, যেমন পুড়িয়ে ফেলার পরও ভস্ম থেকে জেগে ওঠে, আওয়ামী লীগও সেভাবেই জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা কখনো পরাভব মানে না, মাথানত করে না। আগামীতেও করবে না।

রবিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের শক্তি অপরিসীম। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে। সংগঠন শক্তিশালী হলে আর জনসমর্থন থাকলে যতই ষড়যন্ত্র হোক কেউ কিছু করতে পারবে না। আর যে কোনো সময় মৃত্যু আসতে পারে, কিন্তু আমি মৃত্যুকে ভয় করি না। যতক্ষণ শ্বাস আছে ততক্ষণ দেশের জনগণের ভাগ্যে পরিবর্তনে কাজ করে যাব। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমার বাবার যে চিন্তা-চেতনা তা বাস্তবায়ন করে দেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী সুসংগঠিত করে গড়ে তোলার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে দলটির সভাপতি টানা চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার একটাই আবেদন থাকবে আমাদের সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীর কাছে, সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। যে কোনো একজন রাজনীতিবিদের জীবনে সংগঠনটা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী। যদি সংগঠন শক্তিশালী হয় আর দেশের গণমানুষের সমর্থন পাওয়া যায় যতই ষড়যন্ত্র হোক, সফল হওয়া যায়।

আলোচনা সভা বলা হলেও হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত আলোচনা সভাটি বিশাল জনসভায় রূপ নেয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়াও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরাও আওয়ামী লীগের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভামঞ্চে উপস্থিত হওয়ার আগেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল প্যান্ডেল উপচিয়ে চতুর্দিকে লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থান না পাওয়ায় মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ, শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত এলাকায় আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে আলোচনা সভাটি রীতিমতো বিশাল জনসভায় রূপ নেয়।

দুপুর আড়াইটায় আলোচনা সভা শুরুর সময় নির্ধারিত থাকলেও বেলা ১২টার পর থেকেই ঢাকাসহ আশপাশের জেলা থেকে রং-বেরঙের টুপি, গেঞ্জি পরে, হাতে জাতীয় দলীয় পতাকা নিয়ে বাদ্য-বাজনার তালে তালে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। সময় বর্ণিল সাজে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখে ছিল জয় বাংলাসহ নানা স্লোগান। দলের দেশের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকা। বেলা সাড়ে তিনটার আগেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিশাল প্যান্ডেল কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। স্থান না পাওয়ায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চতুর্দিকে লাগানো মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে দেখা গেছে।

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভামঞ্চে আসেন। সময় গগণবিদারী স্লোগান দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানস্থলে এসে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর বেলুন পায়রা উড়িয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার প্লাটিনাম জয়ন্তীর কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি আয়োজিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীবৃন্দ, দেশের প্রখ্যাত শিল্পীরা সংগীত  পরিবেশন করেন। আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে মনোজ্ঞ নৃত্যানুষ্ঠানও পরিবেশন করা হয়। সাংস্কৃতিক পর্ব পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতে পরিবেশন করা হয় আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর থিম সং। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দলটির নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা অর্জন, পঁচাত্তর পরবর্তী প্রেক্ষাপট, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার ফিরে আসা, দলকে সুসংগঠিত করা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন-অর্জন তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংস্কৃতি তুলে নাচ গান পরিবেশন করা হয়।

এরপর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ শেষে আলোচনা সভা শুরু হয়। এতে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক . আবদুস সোবহান গোলাপ।

সভাপতির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক নেতাকর্মীকে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলব আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন, এই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কত কষ্ট করেছে। বারবার আঘাত এসেছে। পরিবারগুলো কষ্ট করেছে। কিন্তু এই সংগঠন ধরে রেখেছে। কাজেই যেমন সংগঠন করতে হবে, সেইভাবে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস, যেটা আমাদের মূল শক্তি সেই আস্থা-বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেই আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি বলেই বারবার জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে। বারবার ক্ষমতায় এসে, দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০০৯ থেকে এই ২০২৪ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত আছে। আর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যহত আছে বলেই আজকে আর্থ-সামাজিকভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। বাংলাদেশ আজকে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বিশ্বে আজকে মাথা উঁচু করে চলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কাজেই এটাকে (আস্থা-বিশ্বাস) ধরে রেখেই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ২১০০ সাল পর্যন্ত আমরা ডেল্টা প্লান রূপকল্প ঘোষণা করেছি। অনেক বয়স হয়েছে, ততদিন হয়তো বেঁচে থাকব না। কিন্তু আজকে যারা নবীন, যারা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের মূল সৈনিক হবে। আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তুলব, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তুলে, এই বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্লাটিনাম জুবিলিতে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।

মৃত্যুকে পরোয়া করেন না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু যে কোনো সময় সবার হতে পারে। যে কোনো সময় মৃত্যু আসতে পারে। তার জন্য আমি কোনো দিন ভীত না। কখনো ভয় পাইনি, পাব না। কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আঁশ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমার বাবার যে চিন্তা-চেতনা তা বাস্তবায়ন করে এদেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

যারা দলের চেয়ে নিজেকে বড় মনে করেছেন এবং দল ছেড়ে চলে গেছেন তারা ভুল করেছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগে থাকা অবস্থায় তারকা থাকলেও পরবর্তীতে সে তারা আর জ্বলেনি, নিভে গেছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী সাধারণ সম্পাদক শামসুল হককে স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা সন্ত্রাসবাদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, দুর্নীতি করেছে। তারা জনগণের শক্তি ভুলে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে।

তিনি বলেন, আজ বাঙালির যতটুকু অর্জন, এই অর্জনগুলো আওয়ামী লীগের দ্বারাই। কিন্তু বারবার দলের ওপর আঘাত এসেছে। বারবার দলকে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে। বারবার দলকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।৫৮ সালে সেই আইয়ুব খানের মার্শাল থেকে শুরু করে বারবার আঘাত এসেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকার আদায়ের সংগঠন। বেশি দিন আগের কথা নয়, ২০০৭ সালেও চেষ্টা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে নতুন কিংস পার্টি গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেটাও সফল করতে পারেনি।

তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ, সাধারণ জনগণ, তৃণমূলের মানুষ, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, মুজিব আদর্শেও সৈনিক। সৈনিকরা কখনো পরাভব মানে না, মাথানত করে না। হয়তো কখনো কখনো নেতারা ভুল করেছেন। কেউ মনে করেছেন আওয়ামী লীগে থাকলে তারাই হয়তো বড় নেতা। দলের থেকে নিজেকে বড় মনে করেন, কেউ দল ছেড়ে গিয়ে অন্য দল করেছেন। তারা ভুল করেছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আকাশে মিটি মিটি তারা জ্বলে, তারা আলোকিত হয় কার দ্বারা? সূর্যের  আলোতে আলোকিত হয়। যেসব নেতা আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলেন তারা ভুলে গিয়েছিলেন দলের কথা। অথচ তারা আলোকিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন বলেই। চলে যাওয়ার পর ওই তারা আর জ্বলেনি। অনেকেই কই নিভে গেছেন। কেউ ভুল বুঝে ফিরে এসেছে, আমরা নিয়েছি। আবার কেউ কেউ এখনো আওয়ামী লীগের সরকারের পতন কল্পনা করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, যা আমরা প্রমাণ করেছি। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর বারবার ক্ষমতা বদল হয়েছে। হয় অস্ত্রের মাধ্যমে না হয় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শাসকরা ক্ষমতায় এসেছে। সেই সময় জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি তারা। একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দেশের জনগণ বুঝতে পারে সরকার মানে জনগণের সেবক। আমরা জনগণের সেবক হয়েই তাদের ভাগ্যে পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেশের প্রতি তাঁর ত্যাগ আর ভালোবাসার কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, কিন্তু তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। আর আমি বড় সন্তান হিসেবে পাশে থেকে জেনেছি তাঁর স্বপ্ন। কিভাবে তিনি বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চান। সব ফেলে ফিরে এসেছিলাম এমন এক দেশে, যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন আমার বাবা, তা বন্ধ করে দিয়ে তাদের মুক্ত করে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ দেয় জিয়াউর রহমান। ১৫ আগস্টের আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচারে ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। এই অবস্থার মধ্যে শুধু দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে শেষাংশে কবি সুকান্ত একটি কবিতা উদ্বৃতি করে বলেন, ‘যতক্ষণ দেশে আছে প্রাণ, প্রাণপণে দুহাতে সরাবো জঞ্জাল। বিশ্বকে বাসযোগ্য করে যাব আমি, নতুন প্রজন্মের কাছে আমার অঙ্গীকার।বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে আরও এগিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে আমরা উন্নত জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলব আওয়ামী লীগের জন্মদিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা।

শেখ হাসিনা রাজনীতির জাদুকরÑ কাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেপয়েট অব পলিটিক্স (রাজনীতির কবি) উল্লেখ করে বলেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বলি- তিনি হচ্ছেনমিউজিশিয়ান অব পলিটিক্স (রাজনীতির জাদুকর।

স্বাধীনতা বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অর্জনের জনক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে দুটি লিগ্যাসির জন্ম হয়েছে। একটা লিগ্যাসি স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু। তিনি আজ নেই, কিন্তু তার লিগ্যাসির মৃত্যু নেই কোনো দিন। আরেকটি লিগ্যাসি আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি। এটি ধারণ করে আছেন আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা। যত দিন এই বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেইতেমনি শেখ হাসিনাও অমর হয়ে থাকবেন।

আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আসা সবাইকে ধন্যবাদ শুভেচ্ছা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা স্বাধীনতার আদর্শে বিশ্বাস করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন, দেশের সব পর্যায়ের মানুষ, রাজনৈতিক নেতারা, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি- সবার কাছে আমি আহ্বান জানাই, আমাদের ভুল-ত্রুটি নেই, তা আমরা বলব না। তারপরও শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের জনগণের একমাত্র আস্থার ঠিকানা। আসুন আমরা সবাই মিলে তাঁর হাতকে শক্তিশালী করি।

দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন অনেকে দেখতে পায় না। আজ একটি দল (বিএনপি) অন্তর্জ্বালায় জ্বলছে। তারা দিনের আলোয় রাতের অন্ধকার দেখে। পূর্ণিমার রাতে অমাবস্যার অন্ধকার দেখে। তারা উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা আমাদের স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের শত্রু। তারা দেশে স্বৈরশাসন চালু করেছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নির্বাসনে পাঠিয়েছিল, জয় বাংলাকে নিষিদ্ধ করেছিল। ১৫ আগস্টের ২১ আগস্টের যারা মাস্টারমাইন্ড, সেই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের আজ ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে।

×