বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। কাউকে ছাড় দেয়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে আইনের সব দিক বিবেচনা করে যাচাই বাছাই শেষে ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। যা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। জনপ্রিয় অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণে কপাল খুলেছে কারও কারও। তবে ইসিতে আপিল করে প্রার্থিতা ফেরত পাবেন কেউ কেউ। এ জন্য আপিলেরও হিড়িক পড়েছে। ইসির রায়ে কোনো প্রার্থী সংক্ষুব্ধ হলে হাইকোর্টে যেতে পারবেন। আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ২ হাজার ৭১৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর ১ হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। আর যাচাই-বাছাইয়ে ত্রুটি পাওয়ায় ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিলের হার ২৬.৯১ শতাংশ, যা দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিলের হার ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ২২ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ২ দশমিক ৩২ শতাংশ, ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কঠোর অবস্থানে ইসি। অতীতে ছাড় দিলেও মনোনয়নপত্রে সামান্য ভুলের কারণেও এবার কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। নির্বাচন নিরপেক্ষ করার জন্য ইসি যে কোনো ছাড় দিচ্ছে না এটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এবার সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংক্রান্ত ত্রুটি। অধিকাংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীই ভোটার তালিকা নিয়ে সেখান থেকে নাম দেখে গণহারে স্বাক্ষর দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
যাদের মধ্যে কেউ কেউ মারা গেছেন এবং কেউ কেউ এলাকায় থাকেন না, তাই তদন্ত করে তাদের পাননি রিটার্নিং কর্মকর্তারা। আর এ কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ ছাড়াও ঋণ খেলাপি, বিল খেলাপি, সম্পদের তথ্য, মামলার তথ্যসহ বিভিন্ন তথ্য গোপন এবং দ্বৈত নাগরিকত্বসহ বিভিন্ন কারণে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
সূত্র মতে, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনে আপিলের হিড়িক পড়েছে। আপিলে সন্তোষজনক যুক্তি দেখাতে পারলে কারও কারও মনোনয়নপত্র টিকে যাবে। তাই বাদপড়া হেভিওয়েট প্রার্থীসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও আপিলে ছাড় পেতে পারেন। মঙ্গলবার থেকে বাদ পড়া প্রার্থীরা ইসিতে আপিল শুরু করেছে। আপিল জমার জন্য আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি আলাদা আলাদা বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বুথগুলো খোলা থাকবে। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল জমা দেওয়া যাবে এবং ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপিল নিষ্পত্তি চলবে। এর পরও সংক্ষুব্ধ প্রার্থী তার প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে যেতে পারবেন।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে জমা ২ হাজার ৭১৬টি মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে ৭৩১ জনের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে ৬ জন বর্তমান সংসদ সদস্য রয়েছেন। এই ৬ জন হচ্ছেন- হলেন ঝালকাঠি-১ আসনের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন, নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণ, নোয়াখালী-৪ আসন থেকে বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে একই দলের যুগ্ম-মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী, সিলেট-২ আসন থেকে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ও চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকু-) আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম।
এ ছাড়াও যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. শাম্মী আহমেদ, কক্সবাজার-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, পাবনার সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী, রাজশাহীর চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া, নোয়াখালী-৪ আসনের প্রার্থী বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের ছাত্রনেতা শফী আহমেদ, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনসহ অনেকে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার স্বার্থে একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে বর্তমান নির্বাচন কমিশন চাপহীন ও স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলে নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সামান্য ত্রুটিপূর্ণ হলেও মনোনয়নপত্র বাতিল ও নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষভাবে করতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে ইসি।
নির্বাচন কমিশন ইউএনও এবং ওসিদের বদলির আদেশের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। অভিযোগ উঠলে ডিসি এসপিদের বদলি করা হবে বলেও জানিয়েছে কমিশন। ইতোমধ্যেই দুই জেলা প্রশাসককে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রী-এমপিসহ কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ বেশ ক’জন সংসদ সদস্যকে শোকজ করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সব পদক্ষেপ নিচ্ছে ইসি, যা খুবই ইতিবাচক।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশের অনুমতির জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ওই দিন বিকেল ৩টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট সংলগ্ন রাস্তায় সমাবেশ আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি নির্বাচন কমিশন।
এর আগে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চার মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন- নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, গাজীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, ঢাকা-১৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, নাটোর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। শোকজের তালিকা থেকে বাদ যাননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিশ্ব সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও। এ ছাড়াও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয় অনেক সংসদ সদস্যকে।
ইসির নির্দেশে ধাপে ধাপে ইউএনও এবং ওসিদের বদলি শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর। ইসির নির্দেশনা মেনে ইউএনওদের তালিকাও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তালিকায় থাকা ২০৭ ইউএনওর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪৯, ময়মনসিংহে ১৫, বরিশালে ১২, সিলেটে ২১, রংপুরে ১৭, রাজশাহীতে ২৭, চট্টগ্রামে ৪৮ ও খুলনা বিভাগে ১৮ জন রয়েছেন। পুলিশ সদর দপ্তর ৩২৬ জন ওসির তালিকা করেছে।
এরমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩৩ জন, ঢাকা রেঞ্জে ৬০ জন, সিলেট রেঞ্জে ২০ জন, রংপুর রেঞ্জে ২৮ জন, বরিশাল রেঞ্জে ২১ জন, খুলনা রেঞ্জে ৩৮ জন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে তিন জন, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ২৩ জন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে চার জন এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঁচ জন রয়েছেন।
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এবারের নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে সব রকম ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন। ইউএনও এবং ওসিদের বদলির কারণে প্রশাসন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে বাধ্য হবে। সরকারি দলের সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে কমিশন সবচেয়ে বড় নিরপেক্ষতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের আর মাত্র ৩১ দিন বাকি। সারাদেশের ৩০০ আসনে নীরব গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন বৈধ প্রার্থীরা। আর যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তারাও প্রার্থিতা ফিরে পেতে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচন কমিশনে দৌড়ঝাঁপ করছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহল থেকে কঠোর চাপ থাকায় এবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পাশাপাশি সরকারের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আগে থেকেই অধিকতর তৎপর।
ইতোমধ্যেই নির্বাচনের পরিবেশ ঠিক রাখতে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সারাদেশের সকল ইউএনও ও ওসিকে বদলির নির্দেশের পাশাপাশি ডিসিদেরও বদলি করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও সতর্ক করেছে ইসি। কোনো অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরাও সতর্ক অবস্থানে থেকে নিজ নিজ কৌশলে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।
নির্বাচন কমিশন ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুসারে ৩০ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এখন চলছে আপিল, যা ১৫ ডিসেম্বর শেষ হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। প্রার্থীরা নির্বাচনের প্রচার চালাতে পারবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন ও নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। আর হিজড়া ভোটারের সংখ্যা ৮৫২।
নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে যাওয়া কোনো কোনো প্রার্থী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য এক শতাংশ ভোটোরের স্বাক্ষর জমা দেওয়া দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, সংবিধানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা বল হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সংসদীয় আসনের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়ার কথা বলেছে।
এতে ভোটের আগেই ভোটারের সমর্থন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে স্বাক্ষর করেও পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অস্বীকার করছেন বলেও অভিযোগ উঠে। আবার কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেওয়ার পরও মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম জনকণ্ঠকে জানান, আইন অনুসারে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাইয়ের পর ৭৩১ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে তাদের আপিলের সুযোগ রয়েছে। যারা আপিল করবেন পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন কমিশন তাদের যুক্তি তর্ক শুনবেন। তারপর আইনগতভাবে রায় দেবে ইসি। করও পক্ষে রায় এলে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন। আর ইসির রায় যাদের বিপক্ষে যাবে তারা সংক্ষুব্ধ হলে ১৫ ডিসেম্বরের পর হাইকোর্টে যেতে পারবেন।