ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাঁড়াশি অভিযানের পর রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৭:৫৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

সাঁড়াশি অভিযানের পর রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে

সাঁড়াশি অভিযানের পর রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে

হুন্ডি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের পর রেমিটেন্সের প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। সোমবার রাতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত, মিডিয়া) জিসানুল হক এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডলারের দাম বাড়ায় তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তে নামার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর হুন্ডি কারবারের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তে সিআইডি জানতে পারে, গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ৭.৮ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন গ্রেফতার হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে এক শ্রেণীর অসাধু চক্র বিদেশে অর্থ পাচারসহ হুন্ডি করে বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স প্রবাহের গতি কমিয়ে দিয়েছিল। সিআইডির অভিযানের পর বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে গত মাসের তুলনায় রেমিটেন্সের প্রবাহ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যমতে, সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে মোট ১০০ কোটি ৮৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে। প্রতি ডলার ১০৮ টাকা হিসাবে বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলার ও বেসরকারী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮৪ কোটি ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। অন্যদিকে বিদেশী ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার।

এছাড়া একটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স। একক ব্যাংক হিসাবে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারী খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে ২২ কোটি ডলার, সিটি ব্যাংকে ৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ৭ কোটি ৩০ লাখ, অগ্রণী ব্যাংকে ৬ কোটি ২৩ লাখ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৫ কোটি ২১ লাখ এবং পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স।

তবে কোন রেমিটেন্স আসেনি বিডিবিএল, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশী ব্যাংক আল-ফালাহ, হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং ওরি ব্যাংকের মাধ্যমে। এর আগে জুলাই-আগস্টে চার বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। আগস্ট মাসে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ বা ২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার এবং জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ বা ২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার এসেছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা। এদিকে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস এ্যাসোসিয়েশন বা বাফেদার দাম অনুযায়ী, ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের ক্ষেত্রে প্রতি ডলার সর্বোচ্চ ১০৮ টাকায় কিনছে ব্যাংকগুলো।

আর রফতানি বিল পরিশোধ হচ্ছে প্রতি ডলার ৯৯ টাকায়। এছাড়া রেমিটেন্স আহরণ ও রফতানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় মূল্যের সঙ্গে সর্বোচ্চ এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করছে ব্যাংকগুলো। বাফেদার নির্ধারিত দর প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওয়েবসাইটে সবশেষ ১৮ সেপ্টেম্বরের দর দেয়া আছে। যেখানে ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্নও ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা দেয়া আছে।

×