অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিরা
বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল থেমে স্মার্ট যুগে প্রবেশ করছে। নতুন প্রজন্মও প্রযুক্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং এ বিষয়ে মেধার ছাপ রাখছে। দুর্যোগ প্রতিরোধেও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তিতে জোর দিতে হবে। কেননা ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ সৃষ্টির মতো ঝুঁকি আমাদের কারণেই দিন দিন বাড়ছে। সেইসঙ্গে ভৌগোলিক কারণে বন্যা ও সিডরের মতো দুর্যোগ প্রায়ই আমাদের দেশে আঘাত হানে। আমাদের নবীন ও তরুণরা যেন সেফটি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সব কিছু শিখতে ও জানতে পারে সেজন্য বিভিন্ন লার্নিং অ্যাপস ও গেমস-এর মাধ্যমে তাদের আগ্রহ জন্মানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স (সুপার) প্রকল্পের কনসোর্টিয়ামের লার্নিং শেয়ারিং সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন। একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে সুপার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এই প্রকল্পের ল্য ভূমিকম্প এবং সংশ্লিষ্ট বিপদ বিবেচনা করে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণ এবং তাদের নেতৃত্বের প্রচার করা। ইউরোপিয়ান সিভিল প্রোটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড অপারেশনস (ইকো) এই প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে।
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড পারপাস এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাম্পা গানচিকা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ও দণি এশিয়ায় প্রথম বেসরকারি সেক্টর ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (পিইওসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পিইওসি আগুন, ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি সংক্রান্ত ১৫৮টি বিভিন্ন ঘটনার রিপোর্ট রেকর্ড করেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ডিজি বলেন, রাজধানীতে কয়েক দশক আগে যেখানে কচুরিপানা ভেসে বেড়াতো, এখন সেখানে কচুরিপানার মতো সাড়ি সাড়ি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ ১০ শতাংশ ক্ষেত্রেও বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে না। আবার অনেকে ভবনের বাইরে দৃষ্টিনন্দন করছেন, কিন্তু অবকাঠামোতে ব্যবহার করছেন নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী। বিল্ডিং কোড না মানার কারণেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে। বড় ধরনের ভূমিকম্প যদি এখানে আঘাত হানে তাহলে পরিস্থিতি কি হবে, সেটি বলা মুশকিল। কেননা, ভূমিকম্পে যে ধরনের উদ্ধার অভিযান প্রয়োজন, সেভাবে ফায়ার সার্ভিসকে এখনো তৈরী করা যায়নি। অন্যদিকে রাজধানীতে ছড়িয়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাসের লাইন ভয়াবহ বিস্ফোরণ সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশে বন্যায় অনেক মানুষ মারা গেছে। কিন্তু আমাদের কক্সবাজারে ভয়াবহ বন্যায় ২০ জনের বেশি মারা যায়নি। এটা আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতির ফল। পাশাপাশি এটাও প্রমান হয়, দুর্যোগে বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে পারে। যেমনটা রানা প্লাজা ধসের পর পোশাকখাতের ভবনগুলোতে আমূল পরিবর্তন এনে প্রমান দেয়া হয়েছে, আমরা আসলেও পারি। মো. মিজানুর রহমান বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলা ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জ্ঞান না থাকলের কোন উনন্নয়নই টেকসই হবে না। তাই ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যম যে কোন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
ফজলু