পুরস্কার পেলেন ১২ লেখক
এখন চাইলেই সহজে পাঠকের কাছে পৌঁছে যায় পছন্দের বইটি। কাক্সিক্ষত গ্রন্থের জন্য যেতে হয় না বইয়ের দোকানে। আর অনলাইনে বই সংগ্রহের সেই কাজটি সহজ করে দিয়েছে রকমারি ডট কম। অনলাইন এই বই বিপণন সংস্থাটির উদ্যোগে প্রদান করা হলো নগদ-রকমারি বইমেলা বেস্টসেলার এ্যাওয়ার্ড-২০২২। ২০২১ সালের অমর একুশে বইমেলার সময় থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত রকমারি থেকে সর্বোচ্চ বিক্রীত বইয়ের লেখকদের প্রদান করা হয় এ পুরস্কার।
ফিকশন, নন ফিকশন, ধর্মীয় ও ক্যারিয়ার- এই চার শাখায় রকমারিতে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া বইয়ের ১২ লেখককে এই পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়া একইসঙ্গে ৩০টি ক্যাটাগরির ৩০ লেখক এবং ৩০টি বইকেও সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে। সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফিকশন শাখায় এ্যাকিলিসের টেন্ডন শিরোনামের বই লিখে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন জনপ্রিয় তরুণ লেখক সাদাত হোসাইন। একই বিভাগে অন্যমনস্ক শিরোনামের বইয়ের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মালিহা তাবাসসুম। ইতি স্মৃতি গন্ধা শীর্ষক গ্রন্থের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন জুনায়েদ ইভান। নন ফিকশন শাখায় পলিটিক্স পার্টিজ ইন ইন্ডিয়া শিরোনামের বই লিখে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ। একই শাখায় দৈনিক ইত্তেফাক ফ্রন্ট পেইজেস শিরোনামের বই লিখে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মহিউদ্দিন আহমেদ।
পুরনো সেই দিনের কথা শীর্ষক গ্রন্থের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক। ধর্মীয় বিভাগে এবার ভিন্ন কিছু হোক শীর্ষক গ্রন্থের জন্য প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন আরিফ আজাদ। একই শাখায় দ্য প্রফেট শীর্ষক গ্রন্থের জন্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাহমুদ। আল-কোরানের কাব্যানুবাদ গ্রন্থের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মুহিব খান। ক্যারিয়ার ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিভাগে ইংলিশে দুর্বলদের জন্য শীর্ষক বই লিখে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেছেন সাইফুল ইসলাম। একই শাখায় সহজ ভাষায় ইংলিশ ঊঘএখওঝঐ এজঅগগঅজ শিরোনামের বই লিখে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ফরিদ আহমেদ। স্মার্ট ফ্রিহ্যান্ড রাইটিং শীর্ষক গ্রন্থের জন্য তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন কোচ কামরুল হাসান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ আকবর আলী খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও নগদের নির্বাহী পরিচালক শাফায়েত আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের এক বইমেলায় যত বই প্রকাশ হয় পৃথিবীর দেশে সারা বছরেও তত বই প্রকাশিত হয় না। মানের বিবেচনা ছাপিয়ে এই বিপুলসংখ্যক বই প্রকাশের মাধ্যম জাতিগত সৃজনশীলতারই প্রকাশ ঘটে। হয়ত এ কারণেই পশ্চিমবঙ্গের লেখকরা বলেন, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশেই টিকে থাকবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, অনলাইনে যে বই বিক্রি করা যায় সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রকমারি। প্রকাশকদের বই বিপণনের বিষয়টিকে স্বস্তিকর অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে রকমারি।
আকবর আলী খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আবশ্যিক অংশ হলো বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা। আর সেই দৃষ্টান্ত রেখে ক্রমশ সমৃদ্ধ হয়ে উঠছে দেশের সাহিত্য ভুবন।
আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, লেখকদের সূতিকাগারে পরিণত হয়েছে রকমারি। খুঁজলে হারিয়ে যাওয়া বইটির সন্ধান মেলে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। অনলাইনে বই বিপণনের এই প্রয়াসের মাধ্যমে একইসঙ্গে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশ ও সমাজ।
ওসমান গনি বলেন, যেসব বই সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে সেসব বই নিয়ে আলাদাভাবে ভাবতে হবে। তাই শুধু জনপ্রিয়তার পরিবর্তে জাতির মানস গঠনে ভূমিকা রাখা বইগুলোকে কিভাবে পুরস্কৃত করা যায় সেটি নিয়েও ভাবতে হবে।