ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৩ আগস্ট ২০২১

বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলছে শোকের সাক্ষ্যবহ আগস্ট মাস। মুক্তির দিশারিকে হারানোর বেদনার্ত সুরের অনুরণন বইছে হৃদয়ের বন্দরে। সেই বেদনার্ত সুরের মাঝেই খোঁজা হচ্ছে শক্তির উৎস। ব্যক্ত হচ্ছে স্বাধীনতার মহান স্থপতির স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্জনের প্রত্যয়। সেই সুবাদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘শোক ও শক্তির মাস আগস্ট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত আলোচনা, কবিতাপাঠ ও আবৃত্তির আশ্রয়ে সাজানো হয়েছে এই অনলাইন অনুষ্ঠান। বাংলা একাডেমির ফেসবুক পেজে (facebook.com/bangla academy.gov.bd/live) সরাসরি সম্প্রচারিত এ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ছিল সোমবার। স্মরণানুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। ‘বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন : অন্ধকারে দীপশিখা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রাশিদ আসকারী। বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত ‘শোকের চিহ্নগুলি তোমার’ শীর্ষক স্বরচিত কবিতাপাঠ করেন কবি অসীম সাহা। কবি মযহারুল ইসলাম রচিত ‘একটি সূর্যের হাত ধরে’ শিরোনামের কবিতা আবৃত্তি করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও বাচিকশিল্পী আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের ডিজিটাল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব এ. এইচ. এম. লোকমান। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রাবন্ধিক রাশিদ আসকারী বলেন, বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘতম কারাভোগকারী জাতীয়তাবাদী নেতাদের অন্যতম বঙ্গবন্ধু। তার দীর্ঘ কারাজীবন বাঙালী জাতির দীর্ঘ অমানিশার সমার্থক। আর তাঁর চূড়ান্ত কারামুক্তি বাঙালী জাতির চূড়ান্ত মুক্তির- অর্থাৎ আলোর সমার্থক। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে তিনি যখন স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন, কেবল সেই লগ্নেই বিজয়ের অর্থ পূর্ণতা পায়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবনই বাঙালীর সবচাইতে বড় রাজনৈতিক ঐতিহ্য, শ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকার। সেই উত্তরাধিকার সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। আর সেজন্য প্রয়োজন যত্নশীল বৌদ্ধিক প্রয়াস। তার কারাজীবনের প্রতিদিনের প্রতিটি ঘটনার কার্যকারণ নির্ণয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস অনেক বেশি সুরক্ষিত এবং সত্যায়িত হতে পারে, বাঙালীর রাজনৈতিক ঐতিহ্য সংরক্ষিত হতে পারে। সভাপতির বক্তব্যে মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ১৯৭১ সালের ২ আগস্ট জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে শক্তি সঞ্চয় ঘটে, অপরদিকে পাকিস্তানী রাষ্ট্রশক্তি বাংলাদেশ-ভারত মিত্রবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের বাস্তবতা স্বীকার করে। বাংলাদেশের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে গেরিলাযুদ্ধ জোরদার হয়। আর ১৯৭৫-এর ২ আগস্ট উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি মিঃ কিম ইল সুঙ-এর বিশেষ প্রতিনিধি মিঃ ইয়াং হাইওন সপের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাত করেন এবং জাতীয় স্বাধীনতা সংহতকরণে বঙ্গবন্ধুর নির্ভুল নেতৃত্বাধীনে নতুন সমাজ গঠনের সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণের বিরাট সাফল্যের প্রতি উত্তর কোরিয়ার গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। একইদিনে ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়নে বেসরকারী শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে ভাষণ দেন উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন ছিল অনন্ত আলোকায়নের পথে সোচ্চার অভিযাত্রা। কারান্তরাল থেকে জাতীয় স্বাধীনতার বিষয়ে তার উপলব্ধি আরও দৃঢ় ও প্রগাঢ় হয়। আমাদের স্মরণে রাখতে হবে, কারাবাস থেকেই তার অসামান্য রচনা কারাগারের রোজনামচার জন্ম হয়। এই রোজনামচা রচনার নেপথ্যে জাতিমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং এটি বই আকারে প্রকাশের বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানও আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা তিনটা। এ দিনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করবেন কবি মুহাম্মদ সামাদ। আবৃত্তি পরিবেশন করবেন বাচিকশিল্পী লায়লা আফরোজ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম খান।
×