ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাবিতে কাদের মোল্লার নামে কনভেনশন সেন্টার-তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৫ জানুয়ারি ২০১৭

জাবিতে কাদের মোল্লার নামে কনভেনশন সেন্টার-তোলপাড়

জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ে গত ১২ জানুয়ারি বিশ^বিদ্যালয় দিবসে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় কাদের মোল্লা কনভেনশন সেন্টারের। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকেই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তোলপাড় শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের অনেকে এই সিদ্ধান্তে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন- এক সময় এই বিশ^বিদ্যালয়ের নাম হবে “কাদের-জাহাঙ্গীরনগর মৈত্রী বিশ^বিদ্যালয়”। দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ^দ্যিালয়ে নানা ধরনের সংকট রয়েছে। দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশ^বিদ্যালয়ের এ সকল সংকট দূর করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তবে রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের পরও সব সংকট দূর করা সম্ভব হয় না। তাই কোন ব্যক্তি বিশেষ বা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতার মাধ্যমে বিশ^^বিদ্যালয় সেই সংকট দূর করতেই পারে। তবে কোন ব্যক্তি যদি নিজের নাম ব্যবহারের বিনিময়ে দান করে তবে তা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বকীয়তা নষ্ট করে। এর আগে জাহাঙ্গীরনগরে কখনও কোন বিশেষ দাতা ব্যক্তির নামে কোন ভবন নির্মাণ করা হয়নি। দাতা ব্যক্তির নামে ভবনের নামকরণের ফলে বিশ^বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা নষ্ট হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ^বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের পরিপন্থী এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীরা “দালাল” বিশেষণে বিশেষায়িত করেছেন। প্রশাসনের এমন কর্মকা-ে হতাশ বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। কাদের মোল্লার দান করা অর্থে বিশ^বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কাদের মোল্লার নামে কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ করা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিশ^বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য রয়েছে জহির রায়হান অডিটরিয়াম, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ। এছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ে যেখানে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসরুম সংকট রয়েছে (আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয় অডিটরিয়ামে), আবাসন সংকট রয়েছে, উন্নতমানের একটি সিনেট ভবন নেই সেখানে নতুন করে এই কনভেনশন সেন্টার কেন নির্মাণ করা হবে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের মনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের শিক্ষার্থী সজীব কুমার সাহা লিখেছেন “এই কনভেনশন সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা কী? কতটুকু উপকারে আসবে শিক্ষার্থীদের? ”। অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, এই কনভেনশন সেন্টার বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ছেলে-মেয়ের বিয়ে, জন্মদিন আর বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম লিখেছেন, “এই মুহূর্তে একটা কনভেনশন সেন্টার কতটুকু জরুরী যেখানে জাবির নিজস্ব স্থাপনার মধ্যে পূর্ণাঙ্গ (লাইব্রেরী, আবাসন, ডিপার্টমেন্ট) বলে কোন কিছুই নেই। কনভেনশন সেন্টার কেবল শিক্ষার্থীদের জন্য কতটুকু উপকারী বনে যাবে? এই বিশ^বিদ্যালয় স্বতন্ত্র চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য হারাতে আর কতদিন লাগবে?” এ বিষয়ে জানতে জাবি উপাচার্য ড. ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
×