ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

হাতে টাকা নেই, নিত্যদিনের পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ

ওয়াহেদ রাজু

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১১ নভেম্বর ২০২৪

হাতে টাকা নেই, নিত্যদিনের পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ

জুন-জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনে টালমাটাল ছিল দেশের অর্থনীতি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার চার মাসেও সেই অর্থনীতিতে গতি ফেরেনি। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপ রয়ে গেছে আগের মতোই। নতুন কর্মসংস্থান নেই। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কাজ হারিয়েছেন অনেকে। এখনো বিপুল সংখ্যক মানুষের আয়-ব্যয়ে সঙ্গতি নেই। ক্রয়ক্ষমতা ক্রমাগত কমছে। জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দ্বিমুখী চাপে চিঁড়েচ্যাপটা অবস্থা নিম্ন ও মধ্যবিত্তের। তারা জীবনযাপনের খরচ মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে।

চা বিক্রেতা সালেক বলেন, ‘চার-পাঁচ মাস ধরে এ অবস্থা। আগে মাসের শেষে সংসার খরচের জন্য ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বা কখনো কখনো আরও বেশি নিতে পারতাম। কিন্তু এখন ধারদেনা করতে হচ্ছে প্রতি মাসে। এ মাসে পাঁচ হাজার টাকা সমিতি থেকে লোন করেছি।’

সালেক বলেন, ‘মানুষের হাতে টাকা নেই, আগের মতো চা খাচ্ছে না। অপ্রয়োজনীয় খরচ করছে না কেউ। এ মোড়ে আগের মতো আড্ডাও নেই।

সালেকের সুরেই ফার্মগেটের ফল বিক্রেতা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘দেশে অসুখ-বিসুখের সময় যাচ্ছে। তাও ফল বিক্রি নেই। আগে দিনে আট-দশ হাজার বিক্রি হতো, এখন তিন-চার হাজারও হয় না। অনুষ্ঠান নেই, মানুষের ঘোরাঘুরি নেই, ক্রেতাও নেই।’ 

মনির বলেন, ‘কয়েক মাস আগেও প্রতি সপ্তাহে মাংস খেতাম। এখন মাসে একবার মাংস কিনছি। গত বছর এই সময়ে কয়েক দফা ইলিশ কিনেছিলাম, এবার একবার কিনেছি। তিনমাসে বাচ্চাদের নিয়ে কোনো ঘোরাঘুরি হয়নি, ওদের কেনাকাটাও বন্ধ। দুধ, হরলিক্স, নাশতায় কাটছাঁট করছি। গ্রামে মা-বাবাকেও টাকা পাঠাইনি। এখন আয় কমেছে, কিন্তু ব্যয় কমানো অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

আগস্টে ক্ষমতার এ পালাবদলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হামলা-মামলা, বেশকিছু শিল্পে নৈরাজ্য, অস্থিরতা আর উৎপাদনের স্থবিরতাসহ নানান কারণে একটি বড় অংশের মানুষের আয় কমেছে। বিশেষ করে আতঙ্কে আছেন হাজারো কর্মী। কাজ হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। তারা এখন খরচ কমিয়েছেন।

এছাড়া সরকার ও রাজনৈতিক দলের সুবিধাভোগীদের একটি অংশেরও এখন আয় নেই।

 
×