
ছবি: জনকণ্ঠ
নামকরা ফুটবল খেলোয়াড় হওয়ার জন্য ১৯৮১ সালে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় আবাহনী ক্লাবে যান বৃন্দাবন দাস। ইচ্ছের কথা জানান কিংবদন্তিতুল্য ফুটবলার অমলেশ সেনকে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে আবার চাটমোহরে ফিরে যান।
১৯৮৪-৮৬ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বছর চাটমোহর উপজেলার বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে সবুজ-পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে চাটমোহর সাংস্কৃতিক পরিষদে ‘চোর’ নাটকের ছোট একটি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে শুরু করেন তার অভিনয় জীবন। ঢাকায় এসে মামুনুর রশীদের ‘আরণ্যক নাট্যদলে’ যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে আরণ্যক ছেড়ে ‘প্রাচ্যনাট’ গঠন করেন এবং ‘কাঁদতে মানা’ নামক নাটকটি লেখেন। তার চারটি গল্প নিয়ে ‘সুরের আলো’ নামে একটি ছোটগল্প সংকলন রয়েছে।
বর্তমানে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা ও পরিবেশনাবিদ্যা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যুক্ত আছেন। বৃন্দাবন দাস বাংলাদেশের জনপ্রিয় নাট্যকার, অভিনেতা, লেখক ও পরিচালক। তিনি পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলাধীন সাঁরোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা স্বর্গীয় দয়ালকৃষ্ণ দাস ছিলেন প্রখ্যাত কীর্তনশিল্পী, পদাবলী কীর্তন ও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী।
পড়ালেখা শুরু করেন শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু শম্ভুনাথ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও চাটমোহর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএসএস (সম্মান) ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তার লেখা ও অভিনয় করা কালজয়ী নাটক: হারকিপ্টে, সাকিন সারিসুরি, ঘর কুটুম, পাত্রী চাই, তিন গেদা, সার্ভিস হোল্ডার, মোহর শেখ, জামাই মেলাসহ প্রায় দুই শতাধিক নাটক ও ধারাবাহিক। ১৯৯৪ সালে ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে জুনিয়র অফিসার পদে কিছুদিন কাজ করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘কেয়ার বাংলাদেশ’-এ কাজ করেন।
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশির সঙ্গে ১৯৯৪ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দিব্য জ্যোতি ও সৌম্য জ্যোতি তাদের দুই ছেলে। তার টিভি নাটকগুলো হলো: হারকিপ্টে, সার্ভিস হোল্ডার, শীল বাড়ি, পাল বাড়ি, মোহর শেখ, বিবেক মজিদ, আলামত, আর মাত্র কয়ডা দিন, তৃতীয় পুরুষ, জামাই দাওয়াত, মেম্বর, গান মজিদ। সিনেমা: অন্যবুজ, আয়নাবাজি, আলতা বানু, মায়া।
তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) ও বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিআরএ) থেকে সেরা নাট্যকার হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। আবার কালচারাল রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) কর্তৃক সেরা নাট্যকার মনোনীত হন। আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। তার অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি পাবনার আঞ্চলিক ভাষা, স্থান ও সংস্কৃতি দেশব্যাপী তুলে ধরেছেন।
মুমু ২