ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যেসব দেশে বিয়ে করলেই মিলতে পারে নাগরিকত্ব

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ১৩ জুন ২০২৫

যেসব দেশে বিয়ে করলেই মিলতে পারে নাগরিকত্ব

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বায়নের এই যুগে উন্নত জীবন, উচ্চশিক্ষা বা কর্মসংস্থানের খোঁজে এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমানো নতুন কিছু নয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে বিদেশে থাকতে হলে বা সেবাদান, সম্পত্তি অধিকার কিংবা ভোটাধিকার পেতে হলে সেই দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তবে নাগরিকত্ব পাওয়া সব দেশে সহজ নয়বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নানা জটিলতা, নিয়ম ও পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয় আবেদনকারীদের।

তবে ব্যতিক্রমও আছে। কিছু দেশ ভালোবাসার সম্পর্ককে নাগরিকত্বের সিঁড়ি হিসেবে মেনে নিয়েছে। সেখানে দেশটির কোনো নাগরিককে বিয়ে করলেই এক লাফে মিলতে পারে নাগরিকত্বকখনো কখনো বসবাস ছাড়াও! সম্প্রতি ‘নো ম্যাড ক্যাপিটালিস্ট’ নামের এক আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন কিছু দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে বিয়ের মাধ্যমেই নাগরিকত্ব অর্জন সম্ভব।

কেপভার্দে: শুধু বিয়েই যথেষ্ট

আফ্রিকার সৌন্দর্যে ঘেরা দ্বীপরাষ্ট্র কেপভার্দে। এই দেশটিতে কোনো নাগরিককে বিয়ে করলেই নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। অবাক করা বিষয় হলো, এর জন্য দেশটিতে বসবাসের দরকার নেই এবং কোনো বাড়তি শর্তও প্রযোজ্য নয়। শুধু বৈধ বিয়েই যথেষ্ট।

স্পেন: এক বছরেই নাগরিকত্ব

দক্ষিণ ইউরোপের উদারপন্থী দেশ স্পেনে কোনো স্প্যানিশ নাগরিককে বিয়ে করলে মাত্র এক বছর পরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। শর্তস্বরূপ প্রয়োজন হবে বৈধ বিয়ের সনদ, একসঙ্গে বসবাসের প্রমাণ এবং স্প্যানিশ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রাথমিক ধারণা। পাশাপাশি, লাতিন আমেরিকা, ফিলিপাইন ও পর্তুগালের নাগরিকত্বও একইসঙ্গে ধরে রাখার সুযোগ রয়েছে।

আর্জেন্টিনা: বিশ্বকাপজয়ীর দেশের সহজ নিয়ম

আর্জেন্টিনার কোনো নাগরিককে বিয়ে করলে মাত্র দুই বছর পরই নাগরিকত্ব চাওয়া যায়। শর্ত খুবই সাধারণবৈধ বিয়ে, মৌলিক স্প্যানিশ ভাষা জ্ঞান এবং সুশীল আচরণের প্রমাণ।

মেক্সিকো: দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা

মেক্সিকান নাগরিককে বিয়ে করলে মাত্র দুই বছরের মধ্যেই মিলতে পারে নাগরিকত্ব। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনার পূর্ববর্তী দেশের নাগরিকত্ব রেখে মেক্সিকোর নাগরিকত্ব গ্রহণ করা সম্ভব।

তুরস্ক: ভাষা নয়, দাম্পত্যই মুখ্য

তুর্কি নাগরিককে বিয়ে করে তিন বছর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। ভাষা কিংবা সংস্কৃতির উপর কোনো কঠোর শর্ত নেই। তুরস্কের পাসপোর্ট থাকলে বিশ্বের ১১০টির বেশি দেশে ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা মেলে।

সুইজারল্যান্ড: কঠোরতার মাঝেও সুযোগ

সুইজারল্যান্ডে অভিবাসন নীতিমালা কঠোর হলেও বৈধ বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্বের দরজা খোলা। সুইস নাগরিককে বিয়ের পর দেশটির ভিতরে তিন বছর একসঙ্গে বসবাস করলে, এবং বৈবাহিক সম্পর্ক পাঁচ বছর পূর্ণ হলে নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। যদি বিদেশে থাকেন, তবুও ছয় বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক থাকলেই আবেদন করা সম্ভব। তবে শর্ত হিসেবে সুইস সমাজে নিজেকে একীভূত করার প্রমাণ দিতে হবেযেমন ভাষাজ্ঞান, সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও অপরাধমুক্ত জীবনধারা।

আরও যে দেশগুলো বিবেচনায় রাখতে পারেন

কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, ডেনমার্কসহ অনেক দেশেই শর্তসাপেক্ষে বৈধ বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

ভালোবাসা যদি সত্যিই গভীর হয়, তাহলে হয়তো তা একটি নতুন জীবনের, এমনকি নতুন পাসপোর্টেরও দ্বার খুলে দিতে পারে। তবে মনে রাখতে হবেএটি যেন কোনো অবস্থাতেই প্রতারণার আশ্রয়ে না গড়ায়। কারণ অনেক দেশেই ভুয়া বা সুবিধার বিয়ে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

 

সূত্র: http://youtube.com/watch?v=mfp87AD_b8w

রাকিব

×