ইউনেস্কো সনদসহ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের উপন্যাস ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইটি। বুধবার (৮ মে) ইউনেস্কো এ স্বীকৃতি দেয় বলে লেখক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক জনকণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে বেগম রোকেয়ার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ বইটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। আধিপত্যবাদী সমাজে মেয়েরা মাথা তুলে দাঁড়াবে নিজের অধিকারে। ‘সুলতানার স্বপ্ন’ গ্রন্থে এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
অবিভক্ত ভারতে ‘সুলতানাজ ড্রিম’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০৫ সালে, মাদ্রাজের দ্য ইন্ডিয়ান লেডিস ম্যাগাজিনে। ১৯০৮ সালে উপন্যাসিকাটি পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়। বাংলায় প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালে মতিচূর দ্বিতীয় খণ্ডে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ নামে। গল্পটি শুধু নারীশিক্ষার আন্দোলনের পরিপ্রক্ষিতেই লেখা হয়নি। যে যুগে মেয়েরা মাতৃভাষা বাংলা শিক্ষাই পেত না, সে যুগেই চোস্ত ইংরেজিতে রচিত বইটিতে ফুটে উঠেছে ‘যুদ্ধ নয়, যুক্তি-বিদ্যা-বুদ্ধিই নারীস্থানের প্রেরণা।’
প্রায় ১২০ বছর আগে লেখা এই উপন্যাসিকায় উঠে এসেছে সৌরশক্তির ব্যবহার, আরবান-ফার্মিং, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো এ যুগের অতি গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়।
সুলতানার স্বপ্ন বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে ধ্রুপদী নারীবাদী কল্পকাহিনীর একটি আদিতম উদাহরণ। বেগম রোকেয়া যে সময়ে এই বইটি লিখেছেন সেই সময়ের ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় এটিকে অত্যন্ত সাহসী ও বিপ্লবী সাহিত্যকর্ম হিসেবে গণ্য করা হয়।
সুলতানার স্বপ্ন' অবলম্বনে স্প্যানিশ নির্মাতা ইসাবেল হারগুয়েরা তৈরি করেছেন অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র। স্প্যানিশ ভাষায় চলচিত্রটির নাম রাখা হয়েছে 'এল সুয়েনো দে লা সুলতানা', ইংরেজিতে 'সুলতানাস ড্রিম'।
এম হাসান