ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

রাধারমণের শাক্ত ভাবনা

ড. বিশ্বজিৎ রায়

প্রকাশিত: ০০:২৪, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাধারমণের শাক্ত ভাবনা

আইয়ুব আল আমিন

কেশবপুরের রাধারমণ মুখে মুখে গান রচনা করে তিনি কালজয়ী হয়ে উঠেছেন লোকসঙ্গীতের ধারায়। সমগ্র বাঙালী সত্তায় রাধারমণ আজ অপরিচিত কেউ নন। কারও কাছে তিনি সাধক কবি, আবার কারও কাছে তিনি বৈষ্ণবীয় সহজিয়া মতের সাধক। তাঁর গান রচনায়, তাঁর প্রকাশে, বিভিন্ন গবেষণায় তাঁর মতবাদ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত উপস্থাপন করা হয়েছে। কেউ বলেন বাউল, কেউ বলেন বৈষ্ণব, আবার কেউ বলেন লোকরঞ্জক কবি। ভিন্ন ভিন্ন রচনা বিশ্লেষণে এমনটাই অনুভূত হওয়া স্বাভাবিক।

যেহেতু অতি সংখ্যক সঙ্গীত রচনা প্রতিনিয়ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, সেইহেতু বিশ্লেষণের ধারাটিও নানামুখী। তবে তাঁর সমগ্র সঙ্গীত রচনার দিকে তাকালে রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক পদের ব্যাপকতা পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি কিছু সংখ্যক গানে বাউলাশ্রিত পদের দেখা মেলে। রাধারমণ তাঁর ৮২বছর জীবনে রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের উপাসক ছিলেন। নলুয়ার হাওড়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে তিনি সাধনা করেছেন এবং ধ্যানে আবিষ্ট হয়ে নানামুখী পদ রচনা করেছেন। পিতা রাধামাধব দত্তও ছিলেন কৃষ্ণ উপাসক।

বলা চলে ঠাকুর্দা কৃষ্ণরামের সময় থেকে এই পরিবারে বৈষ্ণব ধারাটি প্রচলিত। আর তা অনুধাবন করা কৃষ্ণরামের পুত্র রাধামাধব, তাঁর পুত্রদের নামকরণে। রাধানাথ, রাধামোহন ও রাধারমণ। রাধারমণের সন্তানদের নামকরণের অর্থে পাই - রাসবিহারী মানে শ্রীকৃষ্ণ। যিনি রাসম-লে বিহার করেন। নদীয়াবিহারী মানে নবদ্বীপ অঞ্চলের প্রতীক শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। যিনি শ্রীকৃষ্ণের অবতার। বিপিনবিহারী মানে ভ্রমণকারী অর্থাৎ বৃন্দাবনবিহারী কৃষ্ণ। চতুর্থ সন্তান রসিকবিহারী অর্থে রঙ্গরসে পটু। যিনি রসজ্ঞ এবং রসের রাজ্য ভ্রমণকারী শ্রীকৃষ্ণ।
সিলেটে রাধারমণের কালে পাঁচটি সাব-ডিভিশন ছিল। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, করিমগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট। পাশাপাশি হাওড়বেষ্টিত অঞ্চলের মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনায় শোনা গেল রাধারমণ চর্চা। কিন্তু এই গানের দার্শনিক সত্তা কি? কোন্ ভাবাদর্শে রচিত এই গান। এমন নানামুখী প্রশ্ন এসে আন্দোলিত করে গবেষকের মন।
রাধারমণকে এককথায় সহজিয়া ধারার বৈষ্ণব বলা যাবে কি-না, তা প্রমাণ সাপেক্ষ। ‘সহজিয়া’ একটি বিশেষ ধর্মসম্প্রদায়। যারা সহজ পথে সাধনা করে। মানুষের বেলায় ‘সহজ’ শব্দের অর্থ হলো যা স্বভাবের অনুকূল, আর যা প্রতিকূল তা কূট বা বক্র। অর্থাৎ স্বভাবের অনুকূল পথে আত্মোপলব্ধির চেষ্টা করাই সহজিয়া মতের লক্ষ্য। সহজিয়া মতে, সাধনার যিনি লক্ষ্য তিনি জ্ঞানস্বরূপ। তাঁর অবস্থান দেহের মধ্যে। ফলে, দেহকে বাদ দিয়ে সাধনা চলে না।

তাঁকে যুক্তি-তক্কে বা গ্রন্থ পাঠে পাওয়া যায় না। কেবল গুরুপদেশ ও সহজ সাধনায় তা মেলে। দেহকে ক্ষুদ্র ব্রহ্মা- মনে করা হয়। দৈহিক সাধনা ও পরকীয়া প্রেমের মধ্য দিয়েই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করা যায়- এটাই সহজিয়া মতের মূল কথা। সহজিয়া ধর্মও তাই। এই মতকে আশ্রয় করে যে বিশাল সাহিত্য রচিত হয়েছে তা সহজিয়া সাহিত্য নামে পরিচিত। রাধারমণের ধর্মসাধনা নিয়ে অনেক গবেষকই একমত যে, তিনি সহজিয়া ধারার বৈষ্ণব ছিলেন। বৈষ্ণব সহজিয়াগণ তাঁদের সাধনাকে ‘রাগের ভজন’ নামে অভিহিত করেছেন। এঁরা রাধা-কৃষ্ণ যুগলকে মানবিক পুরুষ-প্রকৃতির গভীর প্রেমে রূপান্তরিত করে গ্রহণ করেছেন।

প্রেমের এই যে সাধনা, এই-ই তাঁদের রাগের ভজন এবং এই প্রেমের মিলনই তাঁদের ‘যুগল ভজন’। গুরু দীক্ষা দেবার পর বৈষ্ণবকে তাঁর প্রেম সাধনা বিচার করে তাঁকে সঙ্গিনী নির্বাচন করে দেন। সেই সঙ্গিনী নিয়েই চলে সহজিয়া মতের বৈষ্ণবের যুগল ভজন। চমৎকার মঞ্জুরী রাধারমণের সাধন সঙ্গিনী নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এই যুগল সাধনায় রাধা হয়ে ওঠেন প্রধান। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম নয়- অন্যজগতের হৃদয়ের পথিক হন। শ্রীরূপ অর্থ সাধনসঙ্গিনী কখনও শিক্ষাগুরু। সিলেটে কিশোরী ভজন গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন রঘুনাথ শিষ্য শ্যামকিশোর ঘোষ। কিশোরী অর্থ রাধা। কিশোরীভজনা সহজিয়া বৈষ্ণবদেরই প্রকারভেদ। শাক্ত ভাবে আমরা দেখি হর-গৌরীর ভজনায় গৌরী-ই হয়ে ওঠেন আধেয়। সম্প্রতি বাংলা একাডেমির ‘উত্তরাধিকার’ এক মনস্বী প্রবন্ধকার লিখেছেন যে, ‘রাধারমণ বিষয়ে প্রাথমিক মননচর্চা হয়েছে।

যার একমাত্র গন্তব্য হচ্ছে বৈষ্ণবীয় ভাববৃত্তে বৃত্তায়িত। তিনি হয়ত অবহিত নন যে, রাধারমণের শাক্ত পদাবলি নিয়েও কেউ কেউ ভাবিত আছেন।’১ রাধারমণের পূর্বাপর যুগধর্মের দিকে তাকালে বৈষ্ণবধারা ও  শাক্তধারা বহমান ছিল। সেই সঙ্গে মধ্যযুগের অবসানের কিছু কিছু সূচনা ও আধুনিক যুগের আগমনের কিছু কিছু পূর্বাভাস, কিছু জাগরণের লক্ষ্মণ, কিছু আলোকের দীপ্তি, চিন্তা ও অনুভবের মৌলিক রূপান্তর উনিশ শতকের সংস্কৃতিতে নিশ্চিতভাবেই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। সেই সঙ্গে ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছিল বৈষ্ণবপদ ও শাক্তপদের ধারাটি।

রবীন্দ্রনাথ এই দুটি ধারাকে আত্মস্থ করে তাঁর কাব্য ও গানে নতুন চিন্তা শক্তিতে বলীয়ান করে তুলেছিলেন। ধর্মের নানাবর্গের ধারাও অধ্যাত্ম চিন্তাকে ভিন্নপথ নির্মাণে সাহায্য করে। ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজের ব্রাহ্মধর্ম,  বাউলধর্ম ইত্যাদি। রাধারমণ সেই সময়ে এক অজপাড়ায় জন্ম নেয়া মানুষ। তাঁর চিন্তাশক্তিতে শহরায়নের এই পরিবর্তন অর্থাৎ বাঙালীর নবজাগরণের ঢেউ গ্রামকে আন্দোলিত করেনি বা পৌঁছায়নি। সে কারণে বোধ হয়, ব্রিটিশ নীতি বিষয়ক তেমন লেখা তাঁর গানে উহ্য থাকলেও সমসাময়িক একটি ভাবনার গান আমরা তাঁর রচনায় পাই-

‘কিমাশ্চর্য প্রাণসজনী দেখবে আয় ত্বরিতে
এরোপ্লেন উড়িয়া আইল বিস্কুটেরই ক্লাবেতে।
নীচে চাকা পৃষ্ঠে পাকা ইংলিশ লেখা তাহাতে
পাখির মতো উড়ছে যেমন কলের ইঞ্জিন হাওয়াতে।
দশবাজিতে কলিকাতাতে উঠিল বিমান রথেতে
বারোটাতে বিপ্রি সাহেব নামল লংলার বাংলোতে
তারের বেড়া গড় পাহারা - পড়ল যখন ভূমিতে
হাতে ছড়ি লাল পাগড়ি ঘেঁষতে দেয় না কাছেতে।
বাঙালি কাবুলি কুলি ধাইল পবন বেগেতে
ঘুর ঘুর শুনি ঘর গৃহিণী বাহির হইল মাঠেতে।
ভাইবে রাধারমণ বলে ভাবিয়া মনেতে
পাঁচ মিনিটে পাঁচশ টাকা উড়াইল শখ মিটাইতে।’২ (পদসংখ্যা ৮৮৭, পৃ. ৪১৭)
সর্বশেষ পঙ্ক্তিতে রাধারমণের মর্মদংশনের বিষয়টি উঠে এসে আমাদের জানিয়ে দেয়, যে দেশের মানুষ হীনদরিদ্র, ব্রিটিশ শাসনে নির্যাতিত ও নিপীড়িত, সেই দেশে জনগণের টাকায় বিপ্রি সাহেবের এই ফুর্তি  বা শখ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
রাধারমণের শাক্তপদ খুব বেশি না হলেও যে ক’টি পদ আছে সেখানে দেখি শ্যাম-শ্যামা, হর-গৌরী, রাধা-কৃষ্ণে কোন ভেদ নেই। তিনি লিখেছেন -

এই মহামায়া       যুগল মালা
        লীলা  ব্রজপুরে।
ওই মাখন চুরি     করিয়ে আয়
        গৌপীর ঘরে ঘরে ॥
জগৎ মাতৃ          জগৎ ধাতৃ
         বিদিত সংসারে।
এসে অবনীতে      জীব তরাইতে
         গিরিরাজপুরে ॥
মাগো দশভূজা      অতিশয় তেজা
         ভুবন আলো করে।
সবাই সমান        নাহি অন্যজ্ঞান
          ভুবন মাঝারে ॥
মার কোলতল       অতি সুশীতল
         জননী উদরে।
রাধারমণ বলে      বিপদ কালে
         ডাকি গো তোমারে ॥’৩(পদসংখ্যা -৮৭৩ পৃ. ৪০৯-৪১০)

এখানে স্পষ্টতই উচ্চারিত হয়েছে মহামায়ার যুগল রূপের সঙ্গে রাধা-কৃষ্ণের প্রতিমূর্তির কথাটি। এই কথাটিও তিনি স্পষ্টতই বলেছেন যে, মায়ের কাছে বা যেকোন দেব-দেবীর কাছে সবাই সমান। সবাই পৃথিবীতে নেমেও এসেছেন, জীবের জীবন বাঁচাইতে।  

রাধারমণ যে শাক্তপদ রচনা করেছেন তার পেছনেও সহজিয়া প্রবণতা কার্যকর ছিল। একজন গবেষকের ভাষ্য,  ‘শক্তিতত্ত্ব বাংলার জাতীয় মানসে ওতপ্রোতভাবে মিলিয়া ছিল, তাই গৌড়ীয় বৈষ্ণব দার্শনিকগণ শক্তিতত্ত্বের দ্বারা শ্রীরাধার সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করিয়াছেন।’৪ রাধারমণের বৈষ্ণবপদ বিরহের লীলাবিলাসে ভরপুর কিন্তু শাক্তপদে মিলনই হচ্ছে মুখ্য সুর। অন্যান্য শাক্ত পদকর্তার মতো।’৫ আমাদের পাঁচটি সম্প্রদায়ের কথা মনে রেখে সাধারণভাবে হিন্দুকে বলা হয় পঞ্চোপাসক।

সেই পঞ্চ সম্প্রদায়ের পাঁচজন উপাস্য দেবতা বা দেবীকে নিয়ে সূর্যকে নিয়ে সৌর, গনেশকে নিয়ে গাণপত্য, শিবকে নিয়ে শৈব, শক্তিকে নিয়ে কালী দুর্গা যে দেবীই হোন তাঁকে নিয়ে শাক্ত আর বিষ্ণুকে নিয়ে বৈষ্ণব। হিন্দুত্বের পুনর্জাগরণের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বাংলাদেশে এই দুটি সম্প্রদায়ই প্রভাবশালী। উনিশ শতকের নব্য ভক্তিবাদ প্রধানত এই ধারাকেই আশ্রয় করেছিল। ফলে, অলোচ্য রাধারমণ দত্তও কোন ভিন্ন ভাবনার মানুষ নন। তাই তাঁর রচনায় পাই-

‘জগজ্জননী ভবদারা আসিয়াছে ॥
তপ্ত কাঞ্চন রূপের কিরণ ভুবন আলো করিয়াছে ॥
শুকনামা সুকেশিনী ত্রিভঙ্গ বাঁকা ত্রিনয়নী
ওষ্ঠাধর বিম্ব জিনি দশভূজে বেড়িয়াছে
ইন্দ্রধনু জিনি ভুরু যেন রামে রম্ভা উরু
শ্রীচরণ পল্লব কল্পতরু একশ্চন্দ্রে শোভিয়াছে ॥
কী শোভাবাসা চন্দ্রিমা জগতে নাই তমসা
হরিহরের মনোরমা সিংহপরি দাঁড়াইয়াছে
সঙ্গে লক্ষ্মী সরস্বতী কার্তিক আর গণপতি
রাধারমণের এই মিনতি অন্তে যেন রেখ কাছে ॥’৬                                                                                        (পদসংখ্যা ৮৭৬, পৃ. ৪১২)

মা দুর্গার কাঠাম বর্ণনা করতে যেয়ে তাঁর রূপের জ্যোতি, ত্রিনয়নী মায়ের করুণাময় দ্যুতি, দশাস্ত্রের সিংহবাহিনী তেজের বিচ্ছুরণ এবং মাতৃত্বের স্বরূপ সকল কিছু উঠে এসেছে এই পদে। রাধারমণ বৈষ্ণব কবি হলেও বাঙালীর শক্তি সাধনার প্রতি কোন বিরূপ মনোভাব দেখাননি। বরং মৃন্ময়ী পতিতপাবনী মা তারা উচ্চারিত হয় একটি পদেÑ

‘পতিতপাবনী মা তারা ভবদারা ব্রহ্মময়ী গো ॥
অজ্ঞান বালকে ডাকি ভববন্ধন বিমোহিত করুণাময়ী গো।
আমি অনিত্য সংসারে সুখে মত্ত
ভুলে ভুলে দিন যায় স্ত্রী পুত্রধনের মায়ায়।’৭
(পদসংখ্যা ৮৮০, পৃ. ৪১৩)
মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে মায়ার সংসারে চির আবদ্ধ হয়ে পড়ি। করুণাময়ী মায়ের কাছে এই ভববন্ধন থেকে মুক্তির প্রার্থনা জানালেন রাধারমণ। মা-ই পারেন ভক্তের মনস্কাম পূর্ণ করতে। এ বিষয়ে স্বামী বিবেকানন্দের এক প্রশ্নের জবাবে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বলেছিলেন- মানুষের প্রতি বড় বিস্ময় জাগে এই কারণে যে, যখন মানুষ বিপদে পড়েন তখন মায়ের কাছে তার চাহিদার অন্ত নেই। আর যখন মুক্তিলাভ করেন বা সাফল্য আসে তখন আর মায়ের নাম মুখেও আনেন না। সত্যি বিচিত্র এই মনুষ্য জগত। রাধারমণ বেশ কিছু শ্যামা বিষয়ক গান রচনা করেছেন। পূর্ববর্তী একজন গবেষকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমিও কাজী নজরুল ইসলামের রচনা থেকে উল্লেখ করে বলতে চাই-
‘আমার শ্যামা মায়ের কোলে চড়ে জপি আমি শ্যামের নাম
মা হলেন মোর মন্ত্র গুরু ঠাকুর হলেন রাধা-শ্যাম ॥

আমার মনের দোতরাতে শ্যাম ও শ্যামা দুটি তার
সেই দোতরায় ঝংকার দেয় ওংকার রব অনিবার।
মহামায়া মায়ার ডোরে
আনবে বেঁধে শ্যাম-কিশোরে
আমি কৈলাসে তাই মাকে ডাকি দেখবো সেথা ব্রজধাম ॥’৮ (গান-১০৯, পৃ. ৩৫)

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও তাঁর কবিতা এবং গানে বৈষ্ণব ও শাক্তচিন্তার ফসল রেখে গেছেন। বাঙালী দুই চিন্তাতেই আবদ্ধ। যদিও এই দুয়ের পার্থক্য বৃহৎ, তবুও বাঙালী সমান তালে দুই সাধনাকে আঁকড়ে ধরে পথ হাঁটছেন। মনের গলিতে কে বড়, কে ছোট এই প্রশ্ন তুলে ভেদ সৃষ্টি করেননি, করেননি রাধারমণও। যদিও আচারগত পার্থক্য রয়েছে দুয়ের মধ্যে অনেক।

×