ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

চোখ চুলকানো ও লাল হওয়া কি অ্যালার্জির লক্ষণ? জেনে নিন বিশেষজ্ঞের মত

প্রকাশিত: ০১:০৯, ৩ জুলাই ২০২৫

চোখ চুলকানো ও লাল হওয়া কি অ্যালার্জির লক্ষণ? জেনে নিন বিশেষজ্ঞের মত

ছবি: সংগৃহীত।

চোখ চুলকানো, পানিপড়া ও লালচে হয়ে যাওয়া—এই উপসর্গগুলো চোখের চারপাশে অ্যালার্জির প্রাথমিক সতর্ক সংকেত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষাকালে এই সমস্যা আরও বাড়ে। কারণ এই সময় বাতাসে ভেসে বেড়ানো ধুলিকণা, ছাঁচ ও পরাগরেণুর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা সহজেই চোখ ও তার আশপাশের সংবেদনশীল ত্বকে প্রভাব ফেলে।

ভারতের ভবনগরের কালুভা রোডের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও অপ্রাকটিক্যাল ট্রমা সার্জন ডা. কুনাল নির্মল HT Lifestyle-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “চোখের চারপাশের ত্বক শরীরের সবচেয়ে পাতলা অংশ—মোট মাত্র ০.৩ থেকে ০.৫ মিলিমিটার পুরু, যেখানে শরীরের অন্যত্র ১ থেকে ২ মিলিমিটার পুরু হয়। এই অঞ্চলটিতে তেল গ্রন্থির অভাব থাকায় অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে খুব সহজেই প্রদাহ দেখা দেয়।”

ডা. নির্মল জানান, যাদের মৌসুমি বা পরিবেশগত অ্যালার্জি আছে, তাঁদের জন্য ধুলিকণা, পরাগরেণু, ছাঁচ ও পোষা প্রাণীর লোম অন্যতম প্রধান ট্রিগার। এই উপাদানগুলো সরাসরি চোখের ত্বকে প্রভাব ফেলে ও বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি করে।

সতর্ক থাকার মতো চোখের উপসর্গগুলো: চুলকানি, পানিপড়া, লালচে ভাব, জ্বালাপোড়া, চোখ ঝাপসা দেখা (অতিরিক্ত পানিপড়ার কারণে), চোখের চারপাশে ভারী অনুভব
নাক বন্ধ ভাব, কেমোসিস (চোখের সাদা অংশ ফুলে যাওয়া), পেরিওরবিটাল ফোলা ও পাফিনেস।

চোখের যত্নে বিশেষজ্ঞের দেওয়া ৬টি পরামর্শ:

১. ঠান্ডা পানির সেঁক/বরফ সেঁক:
চোখ বন্ধ করে ঠান্ডা সেঁক দিলে প্রদাহ ও চুলকানি কমে যায়। দিনে কয়েকবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়। এটি নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক।

২. কম ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেরয়েডযুক্ত ড্রপ (চিকিৎসকের পরামর্শে):
এই ড্রপ সাময়িকভাবে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার অনুচিত।

৩. লুব্রিকেন্ট আই ড্রপ:
চোখে আর্দ্রতা জোগাতে ও অ্যালার্জেন ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে অস্বস্তি ও লালচে ভাব কমে।

৪. পরিষ্কার বিছানার চাদর ও তোয়ালে ব্যবহার:
নিয়মিত গরম পানিতে ধুয়ে নেওয়া বিছানার চাদর ও তোয়ালে ব্যবহার করলে ধুলিকণা ও অ্যালার্জেনের সংক্রমণ অনেকটাই রোধ করা যায়।

৫. হাইপোঅ্যালার্জেনিক প্রসাধনী ব্যবহার করুন:
চোখের আশপাশের জন্য অ্যালার্জি-প্রবণ ব্যক্তিদের উপযোগী, সুগন্ধহীন, ডার্মাটোলজিক্যালি পরীক্ষিত পণ্য ব্যবহার করা উচিত।

৬. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:
ডার্মাটোলজিস্ট বা অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ আপনার অ্যালার্জির উৎস নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা দিতে পারবেন। এর ফলে জটিলতা কমে ও দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা পাওয়া যায়।

চোখের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই বর্ষাকালে অথবা ধুলোবালির সংস্পর্শে আসার পর যদি অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন দেখা দেয়, তবে তা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। আগেভাগেই সতর্ক হলে বড় ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

সূত্র: https://short-link.me/12ai8

মিরাজ খান

×