
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে ফ্যাটি লিভার একটি সাধারণ অথচ নীরব বিপদের নাম। অনিয়মিত জীবনযাপন, চর্বিযুক্ত খাদ্য, অল্প চলাফেরা এবং অতিরিক্ত ওজন—সবকিছু মিলিয়ে যকৃতের কোষে চর্বি জমতে শুরু করে, যা পরবর্তীতে মারাত্মক লিভার রোগে রূপ নিতে পারে। তবে সৌভাগ্যজনকভাবে, ঘরোয়া কিছু প্রাকৃতিক পানীয় ও উপাদান এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি নিচের বিষয়গুলো দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে সংযোজন করলে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গ্রিন টি
গ্রিন টি-তে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা যকৃতের প্রদাহ কমাতে এবং চর্বি জমা প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ চিনি ছাড়া গ্রিন টি পান করলে যকৃতের এনজাইম কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং চর্বি বিপাক স্বাভাবিক হয়।
লেবু পানি
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যকৃৎ থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম লেবু পানি পান করা যকৃতের পিত্ত নিঃসরণ বাড়ায়, ফলে চর্বি ভেঙে সহজে হজম হয় এবং লিভার পরিষ্কার থাকে।
বিটের রস
বিটে থাকা বিটালেইন ও নাইট্রেট যকৃতের ডিটক্স প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং রক্তসঞ্চালন উন্নত করে। সপ্তাহে কয়েকদিন তাজা বিটের রস পান করলে যকৃতের চর্বি কমার পাশাপাশি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও হ্রাস পায়।
আমলা রস
আমলা ভিটামিন সি ও পলিফেনলে পরিপূর্ণ, যা যকৃতের কোষ রক্ষা করে ও পুনর্জন্মে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৩০ মিলিলিটার আমলা রস পানি মিশিয়ে পান করলে যকৃতের এনজাইম সক্রিয় হয় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হলুদের চা বা দুধ
হলুদের প্রধান উপাদান কারকিউমিন প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা যকৃতের প্রদাহ কমায় এবং চর্বি জমা প্রতিরোধ করে। রাতে ঘুমানোর আগে এক কাপ হলুদের চা বা গরম দুধে হলুদ মিশিয়ে খেলে যকৃতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
অ্যালোভেরা রস
অ্যালোভেরা রসে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম হজমশক্তি বাড়ায় এবং যকৃতকে টক্সিন থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন ১০–২০ মিলিলিটার করে পানি মিশিয়ে অ্যালোভেরা রস পান করলে যকৃতের চর্বি বিপাক কার্যক্রম উন্নত হয় এবং প্রদাহ কমে।
এই ঘরোয়া উপাদানগুলো গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান এবং চর্বিযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত জরুরি। তবে যেকোনো খাদ্য বা পানীয় দীর্ঘমেয়াদে গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ফ্যাটি লিভার রোগ পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য, যদি আমরা সচেতন থাকি। প্রাকৃতিক এই উপাদানগুলো আমাদের প্রতিদিনের জীবনধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে লিভার সুস্থ থাকবে এবং পুরো শরীরই উপকৃত হবে।
Mily