
ছবি: সংগৃহীত
লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, লিভারের সুস্থতা রক্ষা করতে খাদ্য এবং পানীয়ের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। বর্তমানে, অধিকাংশ মানুষ প্রচুর পরিমাণে জাঙ্ক ফুড খাচ্ছে, যা লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
লিভার বিশেষজ্ঞ, ডাঃ রাজেশ শর্মা বলেন, "লিভারের রোগের সমস্যা বাড়লে, অনেকেই সচেতন হন। তবে, যদি খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়, তাহলে লিভারকে দীর্ঘ সময় ধরে সুস্থ রাখা সম্ভব। কিছু খাবার লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, এবং এসব খাবারের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।"
এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলা খুবই জরুরি। লিভারকে সুস্থ রাখতে আমাদের সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য এবং পর্যাপ্ত জল পানি লিভারের জন্য উপকারী।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, তৈলাক্ত এবং ভাজা খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই চর্বিগুলি লিভারে ফ্যাটি অ্যাসিড জমা করে এবং ফ্যাটি লিভারের সমস্যা তৈরি করে। নিয়মিত ভাজা খাবার খেলে লিভারের প্রদাহ এবং ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
উচ্চ চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন কেক, পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইত্যাদি, লিভারের ক্ষতি করে। এই খাবারগুলি লিভারে ফ্যাট জমার প্রক্রিয়া শুরু করে, যা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) এর মতো গুরুতর রোগের কারণ হতে পারে।
অ্যালকোহল লিভারের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি লিভারের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সিরোসিস, হেপাটাইটিস এবং লিভার ক্যান্সারের মতো রোগের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে লিভারের কার্যকারিতা কমে যায় এবং শরীর সঠিকভাবে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে অক্ষম হয়। অ্যালকোহলকে লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণও লিভারের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত লবণ শরীরে জল ধরে রাখে, যার ফলে লিভার ফুলে যেতে পারে। এটি লিভারের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে এবং কখনও কখনও লিভারের ব্যর্থতার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত লাল মাংস এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস, যেমন সসেজ, বেকন খাওয়াও লিভারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং প্রিজারভেটিভ থাকে, যা লিভারের প্রদাহ এবং ক্ষতি করে। লিভারের স্বাস্থ্যকে উপেক্ষা করলে ভবিষ্যতে গুরুতর রোগ হতে পারে। এখনই সচেতন হোন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষা করুন।
শহীদ