ছবি:সংগৃহীত
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এর প্রভাব পড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, পরিবহন ব্যয় ও জীবনযাত্রার প্রতিটি খাতে। বিশেষত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বজুড়ে তেলের দাম বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে হরমুজ প্রণালিকে ঘিরে নিরাপত্তা উদ্বেগ। এই জলপথ দিয়ে বিশ্বজুড়ে মোট জ্বালানির প্রায় ২০ শতাংশ পরিবাহিত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুট। উত্তরে ইরান, দক্ষিণে ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দিয়ে ঘেরা এই প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলকে আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করে।
একজন আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা না গেলেও, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনাই মূল উদ্বেগ।”
এ শঙ্কার মধ্যেই বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমএসটি মারকুইয়ের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশ্লেষক সল কাভোনিক সতর্ক করে বলেছেন, “ইরান যদি প্রতিশোধমূলক হামলায় আঞ্চলিক জ্বালানি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে, তাহলে তা জ্বালানির সরবরাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাবে। চরম পরিস্থিতিতে ইরান হরমুজ প্রণালির মাধ্যমে জাহাজ চলাচলে বাধা দিলে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।”
সম্প্রতি ইসরায়েলের চালানো প্রাণঘাতী হামলায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে নিহত হয়েছেন ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী। এই হামলার পর তেহরান প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, “ইসরায়েল এই হামলার কঠিন মূল্য দেবে।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় তেলবাজার আরও অস্থির হয়ে উঠেছে।
এ হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি এ ঘটনাকে একতরফা ইসরায়েলি পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে তেহরানকে সতর্ক করে বলেন, “মার্কিন স্বার্থ বা নাগরিকদের লক্ষ্য করা হলে এর পরিণতি ভালো হবে না।”
ফিলিপ নভার-এর জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক প্রিয়াঙ্কা সচদেবা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “ইরানের পাল্টা হামলা শুধু তেলের সরবরাহ নয়, বরং উপসাগরীয় অন্যান্য তেল উৎপাদক দেশগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে দেবে।”
ছামিয়া
