এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আরও ৩৩ জনের প্রাণহানি নিশ্চিত, মৃত্যু বেড়ে ২৭৪ জনে!

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI 171–এর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৪ জনে। শুক্রবার উদ্ধারকাজে নিযুক্ত দল বিমানটির ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে এবং আরও ২৯টি দেহ পাওয়া গেছে।

বিমানটিতে থাকা ২৪১ জন যাত্রী ও ক্রুর মৃত্যুর খবর আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল। নতুন করে পাওয়া ৩৩টি মরদেহ আশেপাশের এলাকায় থাকা সাধারণ মানুষদের — বিশেষ করে আহমেদাবাদের বিখ্যাত বিজে মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসে অবস্থানরত চিকিৎসক, ছাত্র, কর্মচারী ও তাদের পরিবার–এর বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যৌথ পুলিশ কমিশনার নীরজ বাদগুজার জানিয়েছেন, ব্ল্যাক বক্সটি উদ্ধার হয়েছে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মেস ভবনের ছাদ থেকে। আগের রাতে পাওয়া গিয়েছিল বিমানের এমার্জেন্সি লোকেটর ট্রান্সমিটার (ELT)।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ছাত্রাবাস ও মেস ভবনের উপর ভেঙে পড়ে। আগুন ও ধ্বংসস্তূপে বহু মরদেহ পুড়ে গেছে।

রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোট ৩১৯টি দেহাবশেষ – সম্পূর্ণ ও খণ্ডিত – ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে, যাতে সঠিকভাবে পরিচয় নিশ্চিত করা যায়।

এই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪১ জন ছাড়াও তিনজন চিকিৎসক ও একজন গর্ভবতী নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ থাকা এমবিবিএস ছাত্র জয় প্রকাশ চৌধুরীর মরদেহও তার পরিবার শনাক্ত করেছে।

দুর্ঘটনার ২৮ ঘণ্টা পর ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB)। কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, এই ব্ল্যাক বক্স দুর্ঘটনার কারণ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।

এদিকে আহমেদাবাদ শহর পুলিশ মেঘানিনগর থানায় 'আকস্মিক মৃত্যু'-র মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে প্রথম দুর্ঘটনার খবর ও আগুন লাগার ফোন পাওয়া যায়।

বিমানের বেশিরভাগ যাত্রী ও ক্রুর দেহ আগুনে পুড়ে চেনার অযোগ্য হয়ে গেছে। মরদেহগুলো সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ছাত্রাবাসে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যেও প্রাণহানি হয়েছে, যদিও সেই সংখ্যা এখনো সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।

এদিকে জাতীয় তদন্ত সংস্থাসহ (NIA) কেন্দ্রীয় বিভিন্ন সংস্থা শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখনো ‘ফাউল প্লে’–এর সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া হয়নি, তবে তদন্তের মূল লক্ষ্য বিমানের প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা মানবিক ভুলের উৎস খুঁজে বের করা।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া