
ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাইজিং লায়ন’, যা একটি বাইবেলীয় শ্লোক থেকে অনুপ্রাণিত। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জেরুজালেমের পশ্চিমপ্রাচীরে (ওয়েস্টার্ন ওয়াল) একটি হাতে লেখা নোট রেখে এই আক্রমণের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার, নেতানিয়াহু জেরুজালেমের পবিত্র পশ্চিমপ্রাচীরের এক ফাঁকে নিজের লেখা একটি চিরকুট রেখে আসেন। পরদিন শুক্রবার তার অফিস সেই নোটের ছবি প্রকাশ করে, যেখানে লেখা ছিল: “The people shall rise up as a lion” — অর্থাৎ “জনগণ সিংহের মতো জেগে উঠবে।”
ইসরায়েলের পবিত্র ধর্মীয় স্থান হিসেবে পরিচিত ওয়েস্টার্ন ওয়াল, যা দ্বিতীয় ইহুদি মন্দিরের অবশিষ্টাংশ এবং ইহুদি প্রার্থনার কেন্দ্রস্থল, সেখানে প্রার্থনার সময় কাগজে লেখা বার্তা রেখে আসা একটি ঐতিহ্যবাহী প্রথা। নেতানিয়াহুর এই প্রতীকী বার্তা এবং তার পরবর্তী হামলা এ যেন এক আধ্যাত্মিক সংকেত।
এই ‘রাইজিং লায়ন’ শব্দবন্ধটি নেওয়া হয়েছে বাইবেলের গণনাপুস্তক (Book of Numbers) এর ২৩:২৪ পদ থেকে, যেখানে লেখা আছে: “Behold, the people shall rise up as a great lion, and lift up himself as a young lion...” এই আয়াতটি বালাক নামক মোআবের রাজার অনুরোধে বালআম নামের এক বাইরের জ্যোতিষীর ঘোষণার অংশ, যেখানে তিনি ইসরায়েলকে অভিশাপ না দিয়ে আশীর্বাদ করেন। বালআম ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ইসরায়েল জাতি সিংহের মতো জেগে উঠবে, শত্রুকে পরাজিত না করা পর্যন্ত বিশ্রাম নেবে না।
এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, ইসরায়েল একটি সাহসী ও অপ্রতিরোধ্য জাতি, যারা ঈশ্বরের আশীর্বাদে শত্রুকে পরাজিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
নেতানিয়াহুর এই প্রতীকী কাজ ইসরায়েলের জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও জাতীয় আত্মপরিচয়ের একত্র সমন্বয়। ইসরায়েলি সমাজে এটি একটি ‘আধ্যাত্মিক যুদ্ধ ঘোষণা’র মতোই ধ্বনিত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বাইবেলীয় অনুপ্রেরণার ব্যবহার শুধু ধর্মীয় আবেগ উস্কে দেয়নি, বরং রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রদর্শনের এক কৌশল হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে।
সূত্রঃ ইকোনমিক টাইমস
রিফাত