
ছবি: সংগৃহীত।
ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের নেপথ্য ভূমিকা রয়েছে—এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ওয়াশিংটনের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েলের পক্ষে এমন অভিযান চালানো সম্ভব নয়।
শুক্রবার ভোররাতে ইরানের রাজধানী তেহরানে লক্ষ্য করে ইসরায়েল যে বিমান হামলা চালিয়েছে, তা দুই দেশের কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধকে প্রকাশ্যে সংঘাতে পরিণত করেছে। পাল্টা জবাবে ইরানের প্রতিক্রিয়াও আসতে দেরি হয়নি। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এই পরিস্থিতি সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না, বরং সরাসরি যুদ্ধের দিকেই গড়াতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসনের ছায়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাই বড় হয়ে উঠেছে। কারণ, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে দেশটি কখনোই ওয়াশিংটনের অনুকূলে ছিল না। তদুপরি, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির উপস্থিতি এই অঞ্চলে তাদের কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয়। কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান ও মিশরে মার্কিন ঘাঁটিতে রয়েছে কয়েক হাজার সৈন্য।
যুক্তরাষ্ট্র বহুদিন ধরেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে চেষ্টা করে আসছে। তাদের দৃষ্টিতে ইরান একটি নিরাপত্তা হুমকি। সেক্ষেত্রে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে চালানো হামলার নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থও জড়িয়ে থাকতে পারে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, গাজায় চলমান সহিংসতায় বিশ্বজনমতের চাপে পড়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে তিনি ইরান ইস্যুকে সামনে এনেছেন। পাশাপাশি, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, ইসরায়েল ধারণা করছে—গাজার প্রতিরোধ আন্দোলনে ইরান একটি বড় শক্তি হিসেবে পেছনে রয়েছে এবং সে কারণে তেহরানকে দুর্বল করতেই এই পদক্ষেপ। লিবিয়া, সিরিয়া, ইরাকের পর এবার গাজাকেই টার্গেট করা হয়েছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলেও মত বিশ্লেষকদের।
তারা সতর্ক করে বলেন, দুটি পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন দেশ যখন সরাসরি সংঘাতে জড়ায়, তখন এর পরিণতি শুধু ওই অঞ্চলের জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য ভয়াবহ হতে পারে। ইরানের টার্গেট যে ইসরায়েলের পরমাণু স্থাপনাগুলো, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্ব অর্থনীতি ও নিরাপত্তা কাঠামোও এই সংঘাতের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
নুসরাত