
ছবি: সংগৃহীত
পিতা জীবিত অবস্থায় অসুস্থতা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা বা প্রতারণার সুযোগ নিয়ে যদি কেউ তার সম্পত্তি দলিল করে নেয়, তাহলে উত্তরাধিকারীরা কীভাবে প্রতিকার পাবেন—সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক।
তিনি বলেন, "আপনার বাবার সম্পত্তি তার মৃত্যুর আগেই কেউ যদি প্রতারণার মাধ্যমে লিখে নেন, তাহলে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে দলিলটি কীভাবে প্রতারণামূলকভাবে সম্পাদিত হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, বাবাকে ভয় দেখিয়ে, ফুসলিয়ে বা তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে অন্য উত্তরাধিকারীরা দলিল করে থাকেন।"
এই ধরনের প্রতারণার শিকার হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, "যদি আপনি আদালতে প্রমাণ করতে পারেন যে দলিল করার সময় আপনার বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন, স্বাক্ষর না করে টিপসই নেওয়া হয়েছে কিংবা তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন, তাহলে আপনি ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন। পাশাপাশি ফৌজদারি আদালতে 'ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন'-এ মামলা করার মাধ্যমেও প্রতিকার চাইতে পারবেন।"
তবে এসব ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। যেমন:
-
বাবার পূর্ববর্তী দলিল বা কাগজপত্রে থাকা স্বাক্ষরের নকল
-
চাকরির রেকর্ড বা ব্যাংক ডকুমেন্টে থাকা স্বাক্ষর
-
চিকিৎসার সময়কার হাসপাতাল রিপোর্ট
-
প্রতিবেশী বা সাক্ষীদের সাক্ষ্য
এসব প্রমাণাদি উপস্থাপন করে প্রতারণার অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে জাল দলিল বাতিল করে নিজের অধিকার পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
তবে অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক সতর্ক করে বলেন, “যদি বাবা সুস্থ ছিলেন এবং স্বেচ্ছায় দলিলের স্বাক্ষর করে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়ে থাকে, তাহলে সেই দলিল বৈধ হিসেবে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে আদালতে দলিল বাতিল চেয়ে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।”
এজন্য দলিলের প্রেক্ষাপট, বাবার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এবং দলিল প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বিবেচনায় নিয়ে আইনি পরামর্শ নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই আইনজীবী।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=cbJp7x38zz8&t=2s
আবির