ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

রৌমারীতে নদী দখল করে ভবন নির্মাণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

আবু সাইদ, রৌমারী, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১৯:২১, ১৫ জুন ২০২৫

রৌমারীতে নদী দখল করে ভবন নির্মাণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।

সোনাভরি নদীর ওপর সেতু ঘেঁষে অবৈধভাবে দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল ভবন। এতে বর্ষা মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। অবৈধ দখল ঠেকাতে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রমিজ উদ্দিন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা। ঘটনাটি উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর বাজার সংলগ্ন এলাকার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশ্যে নদী দখল করে অবৈধভাবে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এভাবে নদী দখল করতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে নদীর স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। এমন কি নদী রক্ষা করতে না পারলে এক সময় সোনাভরি নদীর চিহ্ন থাকবে না। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঞ্ছারচর বাজার সংলগ্ন এলাকায় উন্নত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রৌমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে টাপুরচর সড়ক ভায়া বাঞ্ছারচর এলাকায় সোনাভরি নদীর ওপর ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নবনির্মিত ওই সেতু ঘেঁষে সোনাভরি নদী দখল করে পূর্বপাশে গড়ে তোলা হয়েছে দ্বিতল ভবন।

স্থানীয় মনছের আলী ও জামাল উদ্দিনসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, বাঞ্ছারচর বাজার সংলগ্ন এলাকায় সোনাভরি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর দু’পাশে গাইড ওয়ালও নির্মাণ করা হয়। ওই সেতুর গাইড ওয়ালের নিচে সেনাভারি নদী দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেছেন একই ইউনিয়নের তিনতেলী এলাকার সওদাগর। 

তারা আরও অভিযোগ করেন, নির্মাণাধীন সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত ম্যানেজার মনির হোসেন মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে ওই প্রভাবশালী সওদাগরকে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত সওদাগরের বলেন, প্রথমে ২০২৩ সালে এক শতাংশ জমি ও ২০১৬ সালে আরও তিন শতাংশ মোট ৪ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছেন ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর সালামের কাছ থেকে। তার কাছ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকায় কিনে নেওয়া হয়। তাই ক্রয়সূত্রে ওই জমির মালিক।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর সালামের ভাষ্য, আমার রেকর্ডীয় সম্পত্তি। তাই সওদাগর নামে এক ব্যক্তির কাছে জমি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নদী হলেও খাস খতিয়ানে যায়নি।

তবে স্থানীয় বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন বলেন, তিনিসহ গ্রামবাসী ও এলাকার স্থানীয় মুরুব্বি (মাতাব্বর) তথা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানতে পেরেছেন, সওদাগরের ক্রয়কৃত ওই জমি, সেতু বা ওই জায়গা থেকে অনেকটা দূরে।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মনির হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা মিথ্যা। এছাড়া ওই স্থাপনা নির্মাণের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।

রৌমারী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাসেল দিও বলেন, দখলের বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদেরকে অফিসে ডাকা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে সঠিক তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিরাজ খান

×