ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

খামেনির হুঁশিয়ারি: ইসরায়েলকে সাহায্য করলেই ধ্বংস! সৌদি, আমেরিকাও এখন ইরানের নিশানায়!

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ২২:৫৮, ১৪ জুন ২০২৫

খামেনির হুঁশিয়ারি: ইসরায়েলকে সাহায্য করলেই ধ্বংস! সৌদি, আমেরিকাও এখন ইরানের নিশানায়!

জেরুজালেম, তেল আবিব সবখানেই এখন আতঙ্কের ছায়া। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে ইসরায়েলের মাটি, আর সেই কাঁপনের উৎস তেহরান। ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার সবশেষ রূপ এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে মধ্যপ্রাচ্যে।

সবকিছু শুরু হয় বৃহস্পতিবার রাতে। ইসরায়েল শুরু করে তাদের কথিত ইতিহাসে বৃহত্তম সামরিক অভিযান অপারেশন রাইজিং লায়ন। ড্রোন ও যুদ্ধবিমানের সমন্বয়ে চালানো এই অভিযানে ইরানের গভীরে ঢুকে আঘাত করা হয় পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও সামরিক সদর দপ্তরে। নিহত হন একাধিক শীর্ষ সেনাকর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী এরপরই একটি রেকর্ডকৃত ভাষণে জাতিকে আশ্বস্ত করে বলেন, “ওরা ভুল করেছে। এই অপরাধের ফলাফলে তাদের ধ্বংস ডেকে আনবে। ইরানি জাতি শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবে না। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী প্রস্তুত, ওদের কাজ শুরু, আমরা শেষ করবো। এই সন্ত্রাসী সত্ত্বাকে বিন্দুমাত্র দয়া দেখানো হবে না।”

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইরান চালায় পাল্টা প্রতিশোধ। শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত তেহরান থেকে তেল আবিব ও জেরুজালেমে একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে ইরানি বাহিনী। ইসরায়েলের আকাশ জুড়ে বেজে ওঠে সাইরেন, কাঁপে ভবন, বিস্ফোরণে থরথর করে শহরের ঘুমন্ত নাগরিকেরা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মিডিয়া বার্তায় বলেন, “গত ২৪ ঘন্টায় আমরা ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক সম্পদ ধ্বংস করেছি। তারা জানেই না কি আঘাত পেয়েছে এবং সামনে কি আঘাত আসছে। এটাই তাদের দুর্বলতম মুহূর্ত। ইরানি জনগণকে বলছি, ৫০ বছর ধরে যারা তোমাদের দমন করেছে সেই ইসলামী শাসন আজ ধ্বংসের মুখে।”

অন্যদিকে খামেনীর প্রতিক্রিয়া আরও কঠোর। সামাজিক বার্তা সাইট এক্স-এ দেয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “এই শয়তানী সন্ত্রাসী সত্তার বিরুদ্ধে আমাদের জবাব হবে নির্মম। আমরা কোনো ছাড় দেবো না। ইরানি জাতি আমাদের পাশে আছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিজয়ী হবে ইনশাআল্লাহ।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংঘাত এখন আর সীমিত প্রতিক্রিয়ার পর্যায়ে নেই। বরং এটি এক পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। ইরান ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে তারা শুধু ইসরায়েল নয়, ইসরায়েলকে সাহায্য করা যেকোনো দেশের ঘাড়িও লক্ষ্যবস্তু বানাবে।

এই মুহূর্তে পুরো মধ্যপ্রাচ্য দারুণ উত্তপ্ত। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই সংঘাত আরও বিস্তৃত হলে শুধু ইসরায়েল ও ইরানই নয়, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব এমনকি রাশিয়া ও চীনের ভূমিকাও এতে জড়িয়ে পড়তে পারে।

তবে এখন একটাই বিষয় নিশ্চিত, খামেনী যে প্রতিশোধ ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে কোনো সীমা বা সময়ের বেঁধে দেওয়া ধারণা নেই। এবং এই প্রতিশোধকে প্রতিস্পন্দন নয় বরং পুরো ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক জুরান্ত লড়াই হিসেবে বিবেচনা করছেন তিনি।

মিমিয়া

×