
সংগৃহীত প্রতীকী ছবি
এই পৃথিবীতে কিছু সম্পর্ক শব্দে প্রকাশ করা যায় না। তাদের ভালোবাসা, ত্যাগ, মমতা সবই নীরবে বহমান এক নদীর মতো, যেটা জীবনের প্রতিটি বাঁকে জলের মতো প্রশান্তি এনে দেয়। আমার জীবনের সেই নদীর নাম – তপন কুমার শীল, আমার বাবা।
বাবা ছিলেন একজন পল্লী চিকিৎসক। পেশাগত জীবনে দিনে শুরু হতো খুব ভোরে—চেম্বারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন।সারাদিন খুব কম সময় কাছে পেতাম। দুপুরে ভাত খেতে আসলে তখন কিছু সময় দেখা হতো। রাতে চেম্বার থেকে ফিরার সময় আমাদের জন্য নিয়ে আসতো নানা রকমের খাবার, চকলেট ও পছন্দসই জিনিস। সেগুলো পেয়ে আমরা ভিশন খুশি হইতাম।
তিনি শুধু আমাদের বাবা ছিলেন না—গ্রামের অসংখ্য মানুষের জন্য ছিলেন নির্ভরতার আরেক নাম। পনিক্স সাইকেল চেপে কখনো এই গ্রামে, কখনো সেই গ্রামে ছুটে যেতেন রোগী দেখতে। প্রখর রোদ, ঝড়-বৃষ্টি—কিছুই তাঁকে থামাতে পারেনি। এমন ঘটনা আছে, তিনি চেম্বার শেষ করে রাত দশটায় বাসায় ফিরে খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমাবে।ঠিক তখনই বাড়ির দরজার কড়া নেড়ে ওঠে।রোগীর স্বজনরা বলে ওঠে ডাক্তার সাহেব আছেন নাকি।তখন আর কি করার বেরিয়ে পড়তে হয় সে গন্তব্যে।
সকালে চেম্বারে যাওয়ার আগে পাড়ার লোকজন বাবার কাছে আসতো চিকিৎসা নিতে। বাবাকে তারা ভিজিট হিসেবে এক,দু-টাকা করে দিতো। বেশিরভাগ সময় কোনো ভিজিটই নিতো না।
বিনিময়ে যা পেতেন—তা ছিল মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা আর বিশ্বাস।
আজ বাবা নেই ৮ বছর। কিন্তু বাবা দিবসে তাঁর কথা আর স্মৃতি গুলো বেশি বেশি মনে পড়ে।
পরপারে ভালো থেকেও বাবা
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবারা।
সাব্বির