ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

অপারেশন অপেরা: ইসরায়েল যেভাবে ধ্বংস করেছিল ইরাকের পারমাণবিক শক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৫ জুন ২০২৫

অপারেশন অপেরা: ইসরায়েল যেভাবে ধ্বংস করেছিল ইরাকের পারমাণবিক শক্তি

ছবিঃ সংগৃহীত

১৯৮১ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী মেনাখেম বেগিনের সামনে এক ভয়ানক নৈতিক দ্বিধা—ইরাকের পারমাণবিক চুল্লি ধ্বংস করবেন, নাকি অপেক্ষা করবেন অনিবার্য বিপদের? ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেন প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তিনি ইসরায়েলকে ধ্বংস করবেন, এবং তাঁর পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ ছিল।

এই চুল্লিটি নির্মাণে ফ্রান্স সাহায্য করেছিল, যারা একসময় ইসরায়েলের মিত্র ছিল। চুল্লির নাম ছিল ‘ওসাইরিস’, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী। ইসরায়েল বহু প্রমাণ জোগাড় করেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তেমন সাড়া পায়নি।

তাই বেগিন ‘বেগিন ডকট্রিন’ নামে পরিচিত একটি নীতি গ্রহণ করেন: ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চাওয়া কোনো দেশ কখনোই গণবিধ্বংসী অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।

ইসরায়েল গোপনে ইরাকে বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে এবং চুল্লির সরঞ্জাম বহনকারী চালান ধ্বংস করে। কিন্তু সাদ্দাম সবকিছু প্রতিস্থাপন করছিলেন। বুঝতে পেরে ইসরায়েল শেষ সিদ্ধান্ত নেয়—পুরো চুল্লিই ধ্বংস করতে হবে।

৭ জুন, ১৯৮১—ইহুদি ধর্মীয় উৎসব শাভুয়তের ঠিক আগ মুহূর্তে—‘অপারেশন অপেরা’ শুরু হয়। আটজন ইসরায়েলি পাইলট, শত শত মাইল শত্রু অঞ্চলের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে মাত্র ৯০ সেকেন্ডে চুল্লিটি ধ্বংস করেন এবং নিরাপদে ফিরে আসেন।

বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা হয়—মার্গারেট থ্যাচার, নিউ ইয়র্ক টাইমস, এমনকি জাতিসংঘও ইসরায়েলকে নিন্দা জানায়। কিন্তু বেগিন নিরুত্তাপ ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এই পদক্ষেপ ইসরায়েলকে সম্ভাব্য ধ্বংস থেকে বাঁচিয়েছে এবং “Never Again” নীতিকে বাস্তব করেছে।

এই অভিযানে ইসরায়েল কেবল একটি চুল্লি ধ্বংস করেনি, বরং একটি জাতির অস্তিত্ব রক্ষা করার সংকল্প বিশ্ববাসীর সামনে স্পষ্ট করে তোলে।

মুমু

আরো পড়ুন  

×