ছবি: সংগৃহীত
ইরান থেকে ছোড়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মধ্যে ইসরায়েল নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে বহু হামলা প্রতিহত করলেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট না হয়ে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে—ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কতটা শক্তিশালী?
আয়রন ডোম: স্বল্প-পাল্লার রক্ষাকবচ
ইসরায়েলের প্রধান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত ‘Iron Dome’ বা ‘আয়রন ডোম’। এটি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা রকেট শনাক্ত ও ধ্বংস করার প্রযুক্তি। এই ব্যবস্থায় রয়েছে একটি অত্যাধুনিক রাডার, যা আকাশে ছোঁড়া যেকোনো রকেট বা শেল শনাক্ত করে তার গতি ও দিক নির্ণয় করতে পারে।
এরপর একটি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়, টার্গেটটি জনবহুল এলাকায় আঘাত হানতে পারে কি না। যদি হুমকি শনাক্ত হয়, তবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী ইউনিট থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়।
প্রতিটি আয়রন ডোম লঞ্চার-এ থাকে ২০টি করে ইন্টারসেপ্টর মিসাইল। পুরো ইসরায়েলে বর্তমানে ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি স্থাপিত রয়েছে।
ডেভিড’স স্লিং: মাঝারি পাল্লার শত্রুর বিরুদ্ধে
আয়রন ডোম যেখানে স্বল্প পাল্লার রকেট প্রতিহত করে, সেখানে David’s Sling সিস্টেম ব্যবহৃত হয় ৪০ কিমি থেকে ৩০০ কিমি দূরত্বের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে। এটি ইলেকট্রনিক সেন্সর, গাইডেন্স সিস্টেম এবং হাই-স্পিড ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে।
অ্যারো সিস্টেম: দূর-পাল্লার জন্য প্রস্তুত
সবচেয়ে দীর্ঘ পাল্লার হুমকি যেমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা দূরদেশীয় আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যবহৃত হয় Arrow System। এটি ২,৪০০ কিমি পর্যন্ত দূরত্ব থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম। এটি মূলত ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রকল্প।
যদিও এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহু ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম, তবুও একযোগে প্রচুর সংখ্যক হামলা হলে প্রতিটি টার্গেট নির্ভুলভাবে আটকানো কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইপারসনিক গতি, একাধিক উৎস থেকে একযোগে আক্রমণ এবং স্মার্ট ড্রোন প্রযুক্তি বর্তমানে যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
মুমু ২
