ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ট্রাম্প সমর্থকদের বিভক্ত করছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:১৫, ১৪ জুন ২০২৫

ট্রাম্প সমর্থকদের বিভক্ত করছে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

ছবি: সংগৃহীত

দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি "সব যুদ্ধ থামাতে" চান এবং নিজেকে শান্তির বার্তাবাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু ছয় মাসের মাথায়, ইসরায়েলের ইরান আক্রমণ ও তার পাল্টা জবাব মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে, যেখানে মার্কিন সেনার জড়িত হওয়ার আশঙ্কাও প্রবল।

ইসরায়েলের এই হামলার পক্ষে ট্রাম্প যে অবস্থান নিয়েছেন, তা এখন তার নিজস্ব 'আমেরিকা ফার্স্ট' ঘাঁটির মধ্যে ব্যাপক বিরোধ সৃষ্টি করছে। অনেক ডানপন্থী রাজনীতিক ও বিশ্লেষক মনে করছেন, ইসরায়েলকে বিনা শর্তে সমর্থন দেওয়া ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

‘ড্রপ ইসরায়েল’ আন্দোলন:

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী রাইট-উইং কমেন্টেটর টাকার কার্লসন বলেন, “ইসরায়েল চাইলে যুদ্ধ করুক, কিন্তু আমেরিকার সহায়তা ছাড়া।” তিনি সতর্ক করেন, এই যুদ্ধে জড়ানো হলে “পরবর্তী প্রজন্মে সন্ত্রাসের বীজ” বোনা হবে এবং “হাজার হাজার আমেরিকান” বিদেশি স্বার্থের জন্য মারা পড়বে।

সিনেটর র‍্যান্ড পল বলেন, “আমেরিকান জনগণ আর অনন্ত যুদ্ধ চায় না, তারা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে শান্তির জন্য।”

ডানপন্থী কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেলর গ্রিন শুধু লিখেছেন, “আমি শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।”

ট্রাম্পের নীরব সম্মতি?

হামলার আগের দিন ট্রাম্প বলেছিলেন, “ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না, কিন্তু তাদের আমরা সফল হতে সাহায্য করতে চাই।”

তবে পরে তিনি জানান, ইসরায়েলের হামলার কথা তিনি আগেই জানতেন, যদিও তিনি তা বন্ধ করতে কোনো ভেটো দেননি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একে “ইসরায়েলের একতরফা সিদ্ধান্ত” বললেও, ট্রাম্প বলেন, “তারা (ইরান) যদি আমার পরামর্শ শুনত, তাহলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতো না।”

বিশ্লেষক ত্রিতা পারসি বলেন, “ট্রাম্প দেখিয়েছেন তিনি কূটনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে, কিন্তু বাস্তবে তিনি জানতেন হামলা আসছে। এটি এক ধরণের কৌশলগত ধোঁকা।”

Cato Institute-এর গবেষক জন হফম্যান বলছেন, “৫০ বছরের নিচে অর্ধেক রিপাবলিকানই এখন ইসরায়েলের বিরোধী।” তিনি বলেন, ট্রাম্পের একটি বড় সমর্থক গোষ্ঠী এখন আর ‘ইসরায়েলের জন্য যুদ্ধ’ চায় না।

বুশ প্রশাসনের যুদ্ধ-নীতি যেমন ইরাক ও আফগানিস্তানে ব্যর্থ হয়েছিল, তা নতুন করে পুনরাবৃত্তি হোক সেটা তারা চায় না।

২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প বলেছিলেন, আফগানিস্তানের ‘লজ্জাজনক’ পতন তার আমলে ঘটত না। তিনি ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ডিক চেনি ও লিজ চেনির সম্পর্ক নিয়ে বলেন, “তারা মুসলিমবিদ্বেষী যুদ্ধবাজ।”

কিন্তু এখন ট্রাম্প নিজেই এমন এক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজেকে জড়াচ্ছেন, যার শুরুতে তিনি শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

মুমু ২

×