
আইএমএফের ১৩০ কোটি ডলার ঋণ ছাড়
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিষদের ২৩ জুনের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে কয়েক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ পেয়ে যাবে এই দুই কিস্তির মোট ১৩০ কোটি ডলার।
আইএমএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বৈঠকের সূচি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে সংস্থার সদর দপ্তরে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় শেষ দুটি কিস্তির মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। এর আগে তিন কিস্তিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার।
চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ছাড় হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত কিছু শর্ত পূরণ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে কয়েক দফা আলোচনা শেষে ১২ মে আইএমএফ ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। এরপর ১৪ মে আইএমএফ এক বিবৃতিতে জানায়, এই সমঝোতার ভিত্তিতেই দুই কিস্তির অর্থ জুন মাসে একসঙ্গে ছাড় করা হবে।
এই অর্থ ছাড়ের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজার নির্ধারণে ছেড়ে দেওয়া। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে সেই পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও এর ফলে ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা যায়নি।
অন্যদিকে, রাজস্ব আয় বাড়াতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) নেওয়া হয়েছে কাঠামোগত সংস্কার উদ্যোগ। ভর্তুকি হ্রাসের বিষয়েও সরকার কিছুটা অগ্রগতি দেখিয়েছে। ব্যাংক খাতেও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো আইএমএফকে জানানো হয়েছে।
আইএমএফের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ছিল বিদ্যুৎ খাতে মূল্য সমন্বয়। যদিও মূল্যস্ফীতির বর্তমান প্রবণতা বিবেচনায় নিয়ে বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আপাতত বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না। একই সঙ্গে সংস্থাটি চায়, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত কঠোর মুদ্রানীতি বজায় রাখা হোক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জিত হলে সুদের হার হ্রাসের সম্ভাবনাও রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ অনুমোদন করে।