
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে শনিবার (১৪ জুন) রাতভর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেল আবিব ও এর আশপাশের শহরগুলো।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে জানা যায়, বাত ইয়াম শহরের একটি আবাসিক ভবনে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানার পর সেই ভবনের নিচে অন্তত ৩৫ জন মানুষ আটকে পড়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন।
এর আগে শুক্রবার (১৩ জুন) ইসরায়েল থেকে ইরানের বেশ কয়েকটি সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালানো হয়। জবাবে ইরান শনিবার রাতে কয়েকশ ব্যালিস্টিক ও বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, হামলার সময় পুরো ইসরায়েলজুড়ে সাইরেন বেজে ওঠে। জেরুজালেম, হাইফা, তেল আবিবের আকাশে বিস্ফোরণের আলো চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া বহু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এর ফলে তীব্র ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে বহু এলাকা।
সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বাত ইয়ামে। সেখানে সাতজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।
এছাড়া, তেল আবিবের নিকটে অবস্থিত ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সেও বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এটি ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা কেন্দ্র। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন লাগার পর ভবনটির ভেতরে অনেকে আটকে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাত ইয়ামের কিছু অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে, তবে ভবনের নিচে আটকে পড়া অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ঘটনার মধ্যেই ইসরায়েল আবারও ইরানের বিভিন্ন এলাকায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে। ইরানি সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই হামলাগুলোতে ইরানের সামরিক বাহিনীর একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
দুই দিনের এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮০ জন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮০০ জন।
মিমিয়া