
টানা কয়েকদিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের হামলা ও পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। এরই মধ্যে ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলা বাড়তে থাকায় হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান।
গত শুক্রবার ভোরে তেহরানসহ ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। পরে শক্তিশালী পাল্টা আঘাত হানে ইরানও। এর জবাবে ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালায় ইসরায়েল।
এই পরিস্থিতিতে ইরানের তেল ও জ্বালানি স্থাপনায় আরও বড় হামলা হলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে ইরান, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসি’র জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি আল জাজিরাকে বলেন, “ইসরায়েল যদি বড় পরিসরে তেল ও গ্যাস অবকাঠামোতে হামলা চালায়, তবে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা হতে পারে ইরানের সর্বোচ্চ প্রতিক্রিয়া।”
ইতোমধ্যে ইরান এই বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন।
উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী হলো পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র সমুদ্রপথ। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (EIA)-এর তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী মোট তেল চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়ে সরবরাহ হয়। ফলে এটি বন্ধ হলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি বাজারে বিশাল ধাক্কা লাগতে পারে।
সিনা তুসি বলেন, “আজ ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে ইরানও ইসরায়েলের হাইফা শহরের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা করেছে। এই ধরনের পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলতে থাকলে পুরো পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে জ্বালানি সরবরাহ হুমকির মুখে পড়বে।”
বিশ্লেষকদের মতে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ এবং বাজারে তীব্র অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এর আগে ২০১৯ সালেও যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ইরান এই প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল।
মিমিয়া