
বর্তমানে প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে ইন্টারনেট যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তেমনি এর অপব্যবহার আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অনলাইন জুয়া ও ভার্চুয়াল ক্যাসিনোর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে দেশের হাজারো কিশোর, যুবক ও প্রাপ্তবয়স্ক। রাতারাতি ‘ধনী হওয়ার’ আশায় তারা ঢুকে পড়ছে এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার জালে, হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা, কখনো কখনো সর্বস্ব।
অনেক অভিভাবক অভিযোগ করছেন, তাদের সন্তানরা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সারাদিন মোবাইলে ব্যস্ত থাকে। অনলাইন গেমের মোড়কে জুয়া খেলায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে তারা। হঠাৎ হঠাৎ বড় অঙ্কের টাকা খরচ, আত্মীয়-স্বজনের কাছে ধার নেয়া, এমনকি চুরি করেও টাকা জোগাড় করছে অনেকে।
এ বিষয়ে এটিবি ইয়ুথ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোঃ মাসুম পারভেজ বলেন, “অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনো আসক্তি একটি নীরব সামাজিক ব্যাধি। উঠতি বয়সের ছেলেরা এই ফাঁদে পড়ে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। শুধু তরুণরাই নয়, অনেক বয়স্ক মানুষও এই আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে, যার ফল ভয়াবহ। পরিবার, শিক্ষা ও সামাজিক বন্ধন ভেঙে পড়ছে। আমরা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি এলাকায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালিয়েছি এবং অনেক অভিভাবককে সহযোগিতা করেছি তাদের সন্তানদের এই আসক্তি থেকে মুক্ত করতে।”
অনলাইন জুয়ার জন্য প্রয়োজন হয় একটি মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ, এবং কিছু মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। অনেক সময় দেখা যায়, টাকার জন্য তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ে চুরি, প্রতারণা, এমনকি ব্ল্যাকমেইলের মতো ঘটনাও ঘটে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পারিবারিক সচেতনতায় এই ভয়াবহতা রোধ করা সম্ভব নয়। জরুরি ভিত্তিতে আইন করে এসব অনলাইন জুয়া ও ক্যাসিনোর সাইটগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। পাশাপাশি সরকারিভাবে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম চালাতে হবে।
অনলাইন জুয়া কোনো বিনোদন নয়, এটি একটি আসক্তি। ধীরে ধীরে সমাজের ভিত নষ্ট করে দিচ্ছে এই ডিজিটাল নেশা। তাই এখনই সময় সোচ্চার হওয়ার। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র একযোগে কাজ করলেই এই ভয়ংকর আসক্তি থেকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করা সম্ভব।
মিমিয়া