
ছবি:সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ইরানের ওপর ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার ঘটনায় জাতিসংঘে চীন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং বলেন, ইসরায়েল আরেকটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে।
তিনি বলেন, ইরানের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং অভ্যন্তরীণ অখণ্ডতার ওপর এই হামলা সরাসরি লঙ্ঘন। ইসরায়েলের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের পরিণতি নিয়ে চীন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি আহ্বান জানান, ইসরায়েল যেন অবিলম্বে সব ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করে। কারণ, এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়া কারও স্বার্থেই নয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দিনগত রাত হঠাৎ করে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র এবং আবাসিক স্থাপনায় একের পর এক পাঁচ দফা আক্রমণ চালানো হয়। এতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ এবং ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হন। ইসরায়েলের এই হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে শুক্রবার রাতেই ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’। এই অভিযানে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তেহরান, যার মধ্যে অনেকগুলো সরাসরি আঘাত হানে ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেম, তেল আবিবসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। হামলা শুরু হতেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিজের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে মাটির নিচে একটি নিরাপদ বাঙ্কারে আশ্রয় নেন। পুরো দেশে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়, এবং আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ বোমা শেল্টারের দিকে ছুটে যায়।
চীনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি যুদ্ধ এড়াতে দ্রুত কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই উত্তেজনা যদি এখনই থামানো না যায়, তবে তা মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ছামিয়া