ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আট বছর পর এবার ট্রাম্পের ইচ্ছা পূরণ হতে যাচ্ছে!

প্রকাশিত: ১৮:৩৩, ১৩ জুন ২০২৫

আট বছর পর এবার ট্রাম্পের ইচ্ছা পূরণ হতে যাচ্ছে!

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশেষে তার বহুদিনের আকাঙ্ক্ষিত সামরিক কুচকাওয়াজ আয়োজন করতে যাচ্ছেন। শনিবার (১৫ জুন) ওয়াশিংটন ডিসির কনস্টিটিউশন অ্যাভিনিউতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ১৯৯১ সালের গালফ যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের সবচেয়ে বড় সামরিক প্রদর্শনী।

এই কুচকাওয়াজটি মূলত মার্কিন সেনাবাহিনীর ২৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে হলেও, এটি ট্রাম্পের ৭৯তম জন্মদিনের দিনেই হওয়ায় বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। সমালোচকদের দাবি, এটি একটি রাজনৈতিক প্রদর্শন এবং এর মাধ্যমে ট্রাম্প স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন।

২০১৭ সালে ফ্রান্স সফরের সময় প্যারিসে বাস্তিল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজ দেখে অভিভূত হন ট্রাম্প। তখন থেকেই তিনি নিজ দেশে এমন একটি প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করতে বলেন তার উপদেষ্টাদের। আট বছর পর এবার সেই ইচ্ছা পূরণ হতে যাচ্ছে।

“এটা একটা অবিশ্বাস্য দিন হবে,”— বলেন ট্রাম্প। “আমাদের আছে ট্যাংক, বিমান, সব ধরনের সামরিক সরঞ্জাম। এবার আমরা আমাদের দেশকে উদযাপন করব।”

কুচকাওয়াজে যা থাকছে
শনিবারের কুচকাওয়াজে অংশ নেবে:
২৮টি এম১ আব্রামস ট্যাংক, প্রতিটি ওজন প্রায় ৭০ টন
৬,৭০০ সেনা সদস্য
৫০টি হেলিকপ্টার
বিশেষভাবে নির্বাচিত পুরনো ও আধুনিক সামরিক পোশাক ও অস্ত্রশস্ত্র
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিখ্যাত B-25 বোমারু বিমান
৩৪টি ঘোড়া, ২টি খচ্চর ও একটি সামরিক কুকুর
‘গোল্ডেন নাইটস’ প্যারাসুট দলের বিশেষ প্রদর্শনী, যারা ট্রাম্পের সামনে পতাকা হস্তান্তর করবে

সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তারা এই কুচকাওয়াজকে বিতর্কিত হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটি উত্তর কোরিয়ার মতো স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে মানায়, যুক্তরাষ্ট্রে নয়।

এছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতায় সেনা মোতায়েন রয়েছে, যা কুচকাওয়াজের সঙ্গে এক অস্বস্তিকর ‘স্প্লিট স্ক্রিন’ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শনিবার সারাদেশে ‘No Kings’ শীর্ষক আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন, যারা ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে তার কর্তৃত্ববাদী আচরণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামছে। তারা মনে করছে, এই কুচকাওয়াজ ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি জাহির করার একটি মাধ্যম।

ট্রাম্প অবশ্য কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন: “যারা বিক্ষোভ করতে আসবে, তাদের বড় শক্তির মুখোমুখি হতে হবে।” এই মন্তব্য আরও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, অনেকেই এটিকে ‘স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ’ হিসেবে দেখছেন।

এই কুচকাওয়াজের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যদিও সামরিক কর্তৃপক্ষ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সাপ্তাহিক ছুটির আগেই ওয়াশিংটনজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং শনিবার সন্ধ্যায় রোনাল্ড রিগান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

ফারুক

×