
ছবি:সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর একযোগে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস–৩’ নামের এই অভিযানে শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। পাল্টা এই হামলার পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে নেওয়া হয় মাটির নিচের নিরাপদ বাঙ্কারে। সেখানে তার সঙ্গে আশ্রয় নেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা।
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাব দিতেই এই সমন্বিত অভিযান চালানো হয়েছে এবং এর উদ্দেশ্য ছিল দেশটির সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করে দেওয়া। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, এই হামলায় ইরান ১০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তাদের ভাষ্যমতে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত ভূমি-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইরান কোনো যুদ্ধবিমান কিংবা নৌবাহিনী ব্যবহার করেনি।
তবে তেলআবিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রামাত গানের একটি বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে আহতদের উদ্ধারের ছবি ইতোমধ্যে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম জানিয়েছে, তারা অন্তত সাতটি স্থানে সরাসরি হামলার খবর পেয়েছে এবং সেখানে চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
এই হামলা ইসরায়েলের আগের দিনের আক্রমণেরই প্রতিক্রিয়া। শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালায়। এতে তেহরানসহ বেশ কয়েকটি সামরিক ও গবেষণা স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই ঘটনার রাতেই ইরান তাদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি, রাডার সিস্টেম এবং অবকাঠামোগুলো।
এদিকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত নেই ইসরায়েলও। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে বাঙ্কারে থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। পাশাপাশি, সম্ভাব্য প্রতিউত্তরের জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি ও পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
ছামিয়া