ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিসিএস প্রস্তুতির দু’টি ধরন

প্রকাশিত: ১৮:৩২, ১৩ জুন ২০২৫

বিসিএস প্রস্তুতির দু’টি ধরন

বিসিএস প্রায় প্রতিটি মানুষের স্বপ্নের চাকরি। প্রতিটা শিক্ষার্থীর চেষ্টা থাকে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। আবার কেউ খুব সিরিয়াসলি চেষ্টা করলেও সঠিক দিক নির্দেশনার জন্যে সফল হতে পারেন না। কারো আবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতি নেয়ার সামর্থ্য না থাকায় আফসোস থাকে। তবে যদি সঠিক নিয়মে মনোযোগ স্থির করে চেষ্টা করেন, তাহলেই স্বপ্ন পূরণে সফল হবেন আপনিও।
বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে একেকজন শিক্ষার্থীর রুটিন একেক রকম হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এই রুটিন তৈরির বিষয়ে যে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি সেগুলো হচ্ছে- প্রতিদিন অন্তত ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করতে হবে। রুটিনে মডেল টেস্ট দেবার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে রাখতে হবে। আপনার হাতে প্রস্তুতির জন্য কত সময় আছে সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ৩ মাস সময় থাকলে রুটিন এক রকম করে তৈরি করতে হবে। আবার ৬ মাস সময় থাকলে অন্যরকম করে সাজাতে হবে।

পত্রিকা পড়ার নিয়ম

কিছু নিয়ম মেনে পত্রিকা পড়লে বিসিএস প্রস্তুতির ক্ষেত্রে উপকৃত হবেন। এই নিয়মগুলো হচ্ছে- প্রতিদিন অন্তত ২টি বাংলা এবং ২টি ইংরেজি পত্রিকা পড়বার অভ্যাস গড়ে তোলা। বাংলা এবং ইংরেজি উভয় পত্রিকা পড়ার সময় পত্রিকার সম্পাদকীয় কলামসমূহ এবং গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের শব্দ বিন্যাস, বাক্যের গঠন ইত্যাদি মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতে হবে। কী ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে এবং কী ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে না সেটা ভালো ভাবে বুঝে নিয়ে পত্রিকায় থাকা ওইসব টপিকে মনোযোগ দেয়া। অফলাইনে পত্রিকা পড়লে প্রয়োজনীয় নোট নেয়া, আর অনলাইনে পড়লে প্রয়োজনীয় অংশসমূহ কপি করে ওয়ার্ড ফাইলে জমা করে পড়াশোনা করা বা এই ওয়ার্ড ফাইলগুলো প্রিন্ট করে নিয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো। প্রতিদিন কোনো না কোনো টপিক ইংরেজি থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা। যে সব তথ্য প্রতিনিয়ত বদলে যায় সে ধরনের তথ্য সব সময় না পড়ে চূড়ান্ত পরীক্ষার ৪-৫ দিন আগে পড়া। যেমন, চলতি বছরের সালতামামি।
 
কোচিং ছাড়া বিসিএস প্রস্তুতি

আপনার যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থেকে থাকে তাহলে আপনি কোথাও কোচিং না করেই ঘরে বসে নিজে নিজে বিসিএস প্রস্তুতি নিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে-
প্রথমে আপনি যে সত্যিই একজন বিসিএস ক্যাডার হতে চান, এ বিষয়ে লক্ষ্যস্থির করতে হবে। আপনার লক্ষ্যের প্রতি যদি আপনি অবিচল থাকতে পারেন তাহলে পড়াশোনার বিষয়টিকে মোটেও কষ্টকর মনে হবে না। যথাযথভাবে পড়াশোনা করার জন্য প্রথমেই একটা রুটিন বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটিকে অনুসরণ করতে শুরু করে দিন। নিয়মিত পড়ুন এবং পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয়েই লেগে থাকুন। আপনার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজও যেন পড়াশোনা সংক্রান্ত হয় সেদিকে মনোযোগ দিন। বিনোদনের মাধ্যমগুলোও আপনার পড়াশোনায় উৎসাহ জোগাবে এমনভাবে বেছে নিন। যেমন, কোনো একটা চলচ্চিত্র দেখার ক্ষেত্রে চিন্তা করবেন এটা কীভাবে আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। আপনাকে আপনার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারে এমন নেতিবাচক মানসিকতার সঙ্গ ত্যাগ করুন। টাইম ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে সচেতন হোন। প্রতিদিন একই সময়ে একই বিষয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার জেগে থাকার সময়টুকু অকারণে  ব্যয় করবেন না। যতক্ষণ ঘুমাবেন ততক্ষণ গভীরভাবে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার ও বিশুদ্ধ পানি খান। সুস্থ থাকবার চেষ্টা করুন। কোচিং ছাড়া ঘরে বসে নিজে নিজে বিসিএস প্রস্তুতির জন্য সব থেকে সহায়ক শক্তি হচ্ছে অনলাইন। অনলাইনে বিসিএস প্রস্তুতি নিলে সেটি যেমন আপনার অনেক সময় বাঁচাবে ঠিক তেমনি অনেক ঝামেলাও কমাবে। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সব থেকে জরুরি হচ্ছে নিয়মিত বিসিএস মডেল টেস্ট দেবার মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতির অবস্থা যাচাই করে দেখা। এই মডেল টেস্টসমূহ গাইড বইতে একা একা বা কোনো কোচিং সেন্টারে গিয়ে একশ কিংবা দুইশ পরীক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিলে খুব একটা লাভ হয় না। যত বেশি পরীক্ষার্থীর সাথে মডেল টেস্টে অংশ নিতে পারবেন ততোই আপনার প্রস্তুতির অবস্থা ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। 

চাকরি বাজার ডেস্ক

প্যানেল

×