
ছবি: সংগৃহীত
এই বছরের প্রচণ্ড দাবদাহে যেন নাভিশ্বাস উঠেছে দেশের শহর থেকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত সর্বত্র। দীর্ঘসময় ধরে তাপপ্রবাহ চলায় মানুষ চরম অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অনেকে এসির ওপর নির্ভরশীল হলেও, বিদ্যুৎ সংকট ও খরচের চাপে সবাই তা ব্যবহার করতে পারছেন না। তাই ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য বিকল্প ও স্বল্পব্যয়ী ঘরোয়া পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন সচেতনরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই গরমের তীব্রতা অনেকটাই কমানো সম্ভব। নিচে তেমনই কিছু ঘরোয়া উপায় তুলে ধরা হলো:
১. হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার
সূর্যের তীব্র আলো ঠেকাতে জানালায় হালকা রঙের মোটা কাপড়ের পর্দা টানানো অত্যন্ত কার্যকর। এটি ঘরের ভিতরে তাপ প্রবেশ রোধ করে।
২. দিনের বেলা জানালা বন্ধ, রাতে খোলা
দুপুরে তাপ প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখা, আর রাতের ঠান্ডা বাতাস প্রবেশে তা খুলে দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে ঘর তুলনামূলক শীতল থাকে।
৩. ঘরের কোণে ঠান্ডা পানির পাত্র
এক বা একাধিক জায়গায় পানি ভরা গামলা বা বালতি রেখে দিলে ধীরে ধীরে বাষ্প তৈরি হয় এবং পরিবেশ ঠান্ডা রাখে।
৪. পাখার সামনে বরফের বাটি
সাধারণ ফ্যানের সামনেই রাখা যায় বরফের বড় বাটি। এতে বাতাস বরফে ঠান্ডা হয়ে ঘরের ভিতরে ছড়িয়ে পড়ে, যেন অস্থায়ী এসির অনুভূতি পাওয়া যায়।
৫. প্রয়োজন ছাড়া ইলেকট্রনিক যন্ত্র বন্ধ
টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর কিংবা চার্জার জাতীয় যন্ত্র বেশি তাপ উৎপন্ন করে। অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রগুলো বন্ধ রাখলে ঘরের ভিতর গরম কমে যায়।
৬. বারবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মেঝে মোছা
সকাল ও বিকেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মেঝে মোছার অভ্যাস ঘরের তাপমাত্রা দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।
৭. ছাদে পানি ঢালা বা সাদা রং করা
রৌদ্রের তাপ সরাসরি ছাদে পড়ে ঘর গরম হয়ে ওঠে। প্রতিদিন ছাদে ঠান্ডা পানি ঢাললে এবং ছাদে সাদা রং করা থাকলে তাপ প্রতিফলিত হয় ও ঘর ঠান্ডা থাকে।
৮. মাটির কলসের ঠান্ডা পানি
মাটির ঘড়ার পানি শুধু স্বাস্থ্যসম্মতই নয়, বরং সেটি থেকে ধীরে ধীরে বাষ্প তৈরি হয়ে ঘরের বাতাসকেও ঠান্ডা রাখতে ভূমিকা রাখে।
৯. কম আসবাব, বেশি বাতাস চলাচল
ঘরে বাতাস চলাচলের পথ খোলা রাখতে অতিরিক্ত ফার্নিচার ও ভারী পর্দা এড়িয়ে চলা ভালো। এতে স্বাভাবিকভাবে ঘর ঠান্ডা থাকে।
১০. ঘরের কোণে গাছের টব
অ্যালোভেরা, মানিপ্ল্যান্ট কিংবা তুলসী জাতীয় গাছ ঘরের কোণে রাখলে তারা বাতাসের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং প্রাকৃতিকভাবে ঘর ঠান্ডা করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরমে এসি বা কুলারের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পরিবেশবান্ধব ঘরোয়া পদ্ধতি গ্রহণ করলে যেমন বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, তেমনি শরীরও সুস্থ থাকে। প্রাকৃতিক উপায়ে ঘর ঠান্ডা রাখতে পারলে গরমকালও কাটানো যায় তুলনামূলক স্বস্তিতে।
Mily